জুমাদাল আখেরা ১৪৩১হিঃ (১৬)

টেকনাফ ও তেতুলিয়া (স্বদেশ)

রাজাকার মানে কী?

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট
আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য সত্যি সত্যি করুণা হচ্ছে। শুরুতে তিনি হয়ত ভেবেছিলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঝড়টা শুধু বিরোধী পক্ষের উপর দিয়েই যাবে। তিনি হয়ত কল্পনাও করেননি যে, তা বুমেরাং হয়ে তার দিকেও ফিরে আসতে পারে! আসলে বাবার পথ থেকে কখনো সরে আসতে নেই। শেখ হাসিনার বাবা জানতেন যে, দালাল আইনে রাজাকারদের বিচার করতে গেলে তার আওয়ামী লীগের লোকেরাই বেশী বেকায়দায় পড়বে। তাই দালাল আইন করেও শেষ পর্যন- তা বাতিল করা হয়। অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, তবে এটাই বাস-ব সত্য যে, ১৯৭২ সালের ২৪শে জানুয়ারী জারি করা দালাল আইনের অধীনে প্রায় একলাখ লোককে গ্রেফতার করা হয়, তার মধ্যে অভিযোগ আনা সম্ভব হয়েছিলো মাত্র ৩৭ হাজার ৪১১ জনের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে আবার সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে ৩৪ হাজার ৬২৩ জনের বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও ২ হাজার ৯৪ জন বেকসূর খালাস পায়। মাত্র ৭১২ জন অপরাধী সাব্যস- হয়, যাদের প্রতি শেখ মুজিবুর-রহমান সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। প্রশ্ন হলো, যে সময় আপরাধের ক্ষতগুলো তরতাজা ছিলো এবং বহু সাক্ষী জীবিত ছিলো তখনই তো খুব বেশী সংখ্যক মানুষের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয়নি, তাহলে আজ সাইত্রিশ বছর পর কীভাবে সঠিকভাবে বিচার করা সম্ভব হবে! ফিরে আসি আগের কথায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে শুনে কিছু আওয়ামী নেতা এতই উল্লসিত হয়েছিলেন যে, তারা ভেবেছিলেন রাজাকার মানেই যুদ্ধাপরাধী। সেই সূত্রে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার বেয়াই শ্রম ও কর্মসংস'ানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মুশাররফ হোসেনের বাবার বিরুদ্ধে রাজাকারির অভিযোগ উত্থাপন করে বসে! তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে শেখ হাসিনা তার দলের নেতাদের বলেন, বাংলাদেশে রাজাকার বলে কোন শব্দ নেই। শেখ হাসিনাকে তার এই সাহসী বক্তব্যের জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই এবং আশা করি, আটত্রিশ বছর অতীতের যুদ্ধাপরাধী বিষয়েও তিনি বাস--ববাদিতার পরিচয় দেবেন।
শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা