পুষ্প যখন আত্মপ্রকাশ করে তখন অত্যন্ত সুন্দর একটি ঘোষণা প্রচার করা হয়েছিলো। তাতে ছিলো, ‘নয় বছরের শিশু, নববই বছরের বুড়ো, পুষ্প সবার জন্য।’
আমরা আনন্দিত যে, পুষ্প তার আত্মপ্রকাশকালের প্রতিশ্রুতিটি এ পর্যন্ত পূর্ণ বিশ্বস্ততার সঙ্গে রক্ষা করে এসেছে। নয় থেকে নববই, সবাই পুষ্পের সুবাস গ্রহণ করছে। আমাদের আন্তরিক কামনা, পুষ্পের সুবাস আরো বিস্তার লাভ করুক এবং সবার জীবনকে আরো সুবাসিত করুক।
কিন্তু ‘পুষ্পবৃক্ষের’ কাছে আমার একটি মিনতি। তিন থেকে ছয় এবং ছয় থেকে নয় বছরের যে শিশুরা, তাদেরও তো প্রয়োজন আছে পুষ্পের সুবাস গ্রহণের! কোথায়, কোন বাগানে কোন্ বৃক্ষের কাছে যাবে এই অবুঝ ছোট্ট শিশুরা পুষ্পের একটুখানি সুবাস পেতে, পুষ্পকে একটুখানি ভালোবাসা জানাতে!? বাগানের ফুল কি কখনো বলে, ‘নয় থেকে নববই, আমার সুবাস শুধু তাদের জন্য! ফুলের কলির মত ছোট্ট শিশু যারা, আমার সুবাস তাদের জন্য নয়!’ ফুল তো ঐ শিশুকেও সুবাস দান করে, যে জানে না, কোন্ ফুলের কী নাম! আর আমাদের পুষ্প তো ফুলের চেয়ে সুন্দর, ফুলের
চেয়ে কোমল। সুতরাং পুষ্পকে তো ভাবতে হবে তাদেরও কথা, যারা পুষ্পকলির মত ছোট্ট শিশু, বয়স যাদের তিন থেকে ছয় এবং ছয় থেকে নয়।
সুতরাং হে ‘পুষ্পবৃক্ষ’ তোমার শাখায় হোক আরেকটি ‘পুষ্পকলির’ উদ্গম যার সুবাস পাবে ঐ ছোট্ট শিশুরা, মানব-উদ্যানে এখন যারা তিন বছরের, ছয় বছরের এবং নয় বছরের কোমল কলি।
আমার এ মিনতি অবশ্য একেবারে নিঃস্বার্থ নয়। কারণ যদিও আমার ‘ওমরে আযীযের চেহেল সাল’১ পার হয়ে গেছে. কিন্তু বাংলাভাষার ফুলবাগিচায় ‘মেজায আমার হালে তিফলি’ পার হতে পারেনি। তাই পুষ্পের সুবাস পাওয়ার ব্যাকুলতায় আমিও আজ দাঁড়িয়েছি ‘তিন থেকে নয়’ শিশুদের কাতারে।
সম্পাদক- তাই তো! তাই তো! বড্ড ভুল হয়ে গেছে তো! এ লজ্জা কোথায় রাখি বলো তো! পিছনের দিকে ফিরে যাওয়া তো আর সম্ভব নয়, তবে ইনশাআল্লাহ সামনের জন্য পুষ্প হবে, ‘যাদের দাঁত উঠেছে এবং যাদের দাঁত পড়ে গেছে, সবার জন্য।’
১। শেখ সা‘দী (রহ.)-এর এই কবিতার দিকে ইঙ্গিত, ‘চেহেল সালে ওমরে আযীযাত গোযাশত/ মিযাজে তূ আয হালে তিফলি নাগাশত।
‘তোমার মূল্যবান জীবনের চল্লিশটি বছর পার হয়ে গেছে, অথচ তোমার শৈশবের আচার-স্বভাব এখনো দূর হলো না।