একদিনের কথা মনে পড়ে। আমার বয়স তখন কত! এই ধরো সাত বা আট। অবশ্য আরো কম হতে পারে, বেশীও হতে পারে। বাগানে একটি ফড়িং ওড়ছে। ডানাদু’টিতে কী সুন্দর রঙ! অনেক রকম রঙ! একবার গিয়ে বসে এই ফুলে, আবার উড়ে যায়, তারপর গিয়ে বসে ঐ ফুলে। আমি চুপি চুপি এগিয়ে যাই। ফড়িংটা ধরবো। তারপর লেজে সুতো বেঁধে ওড়াবো। ফড়িং ধরে লেজে সুতো বেঁধে ওড়াতে কী যে আনন্দ হতো!
ফড়িংটা ছিলো বেজায় দুষ্ট। কিছুতেই ধরা দেবে না। পা টিপে টিপে যেই না কাছে যাই, অমনি উড়ে যায়।
কিন্তু কত আর ওড়বে! কত আর পালাবে! একসময় ধরে ফেললাম। ফড়িংটা ডানা ঝাপটাতে লাগলো। আমার আনন্দ তখন দেখে কে?!
কেন, আমার বড় আপু! তিনি দূর থেকে দেখলেন। দেখে কাছে এলেন। বললেন, কী করছিস খোকা!
খুশিমনে বললাম, এই দেখো না আপু, কী সুন্দর ফড়িং! কত কষ্ট করে ধরেছি!
আপু বললেন, কী করবি ফড়িং দিয়ে?
বললাম, জানো না বুঝি, ফড়িং দিয়ে কী করে?!
লেজে সুতো বাঁধবো; সুতো বেঁধে ওড়াবো। কী মজা হবে!
বড় আপু বললেন, না রে! ফড়িংটার কষ্ট হবে। ছেড়ে দে।
বড় আপু এমন করে বললেন! আমারও মায়া হলো। তাই তো ফড়িংটার কষ্ট হবে তো! আগে কেন ভাবিনি!
ফড়িংটা ছেড়ে দিলাম, আর ফড়িংটা উড়ে গিয়ে একটা ফুলের উপর বসলো।
আজ কোথায় সেই ফড়িং! কোথায় বড় আপু! এখনো বাগানে ফড়িং উড়ে বেড়ায়। দেখতে আমার ভালো লাগে এবং সেই ফড়িংটির কথা মনে পড়ে। আর মনে পড়ে বড় আপুর কথা