জাতিসঙ্ঘে ইমরান খান!
আলআমীন, মাদরাসাতুল মাদীনাহ্
মুসলিম উম্মাহ্ বর্তমানে যে দুর্যোগপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে তা কারো আজানা নয়। এসময় খুবই প্রয়োজন ছিলো বিশ্বসভায় মুসলিম জাহানের পক্ষ হতে একজন সাহসী নেতার এবং একটি সাহসী কণ্ঠের, যিনি মুসলিম উম্মাহ্র বক্তব্য ও অবস্থান বিশ্বসম্প্রদায়ের সামনে সাহস ও বলিষ্ঠতার সঙ্গে যুক্তির ভাষায় তুলে ধরবেন। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে বিশ্বসম্প্রদায়কেও দেখিয়ে দেবেন, তাদের সমস্যা ও দুর্বলতা কোথায়! মুসলিম উম্মাহর বিষয়ে তাদের ভ্রান্তি ও বিভ্রান্তি কোথায়!
অনেকের মতে ‘বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা লাভকারী’ পাকপ্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে সে দায়িত্বই পালন করেছেন। বিশেষ করে কোন নোট বা খসড়া কাগজের সাহায্য ছাড়া, এমন জটিল বিষয়ে এমন উপস্থিত বক্তৃতা পাকিস্তানের জনসাধারণসহ বিশ্বের বহু মানুষকে মুগ্ধ করেছে। তাছাড়া তার উপস্থাপনশৈলী এবং যাকে বলে ‘বডিল্যাঙ্গুয়েজ’, ছিলো অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী ও প্রভাবক।
তিনি তার ভাষণে মোট চারটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন। এর মধ্যে দু’টি বিষয় হলো জলবায়ুপরিস্থিতি এবং তৃতীয় বিশ্ব থেকে উন্নত বিশ্বের অর্থপাচার। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, এ বিষয়ে উন্নতবিশ্বের বিরাট দায়দায়িত্ব রয়েছে, যা তারা মোটেই পালন করছে না।
তৃতীয় বিষয়টি হলো, ইসলাম-ভীতি। এ বিষয়ে তিনি বেশ সাহসী বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ্র অবস্থান স্পষ্ট করে তুলে ধরেননি, তেমনি পশ্চিমা সভ্যতার কর্ণধাররাও বিষয়টি সঠিকভাবে বোঝার চেষ্টা করেননি। হিন্দু, খৃস্টান ও ইহুদি সম্প্রদায় মুসলিমদের আগে এবং আরো বেশী মাত্রায় সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়েছে, কিন্তু এ কারণে ঐ তিনটি ধর্মকে কেউ সন্ত্রাসের ধর্ম বলে চিহ্নিত করেনি। পক্ষান্তরে কতিপয় মুসলিমের কারণে ধর্মহিসাবে ইসলামকে এবং জাতিহিসাবে মুসলিম উম্মাহ্কে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেছেন, মৌলবাদী ইসলাম, উদারপন্থী ইসলাম, এগুলো পাশ্চাত্যের তৈরী করা পরিভাষা। আমাদের ইসলাম একটাই, যা ইসলামের নবী আল্লাহর কাছ থেকে নিয়ে এসেছেন। আমরা সেই ইসলামের অনুসারী, মুসলিম। র্যাডিক্যাল ইসলাম ও মডারেট ইসলাম বলতে কিছু নেই। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো মুসলিম নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে সত্যপ্রকাশ করতে ভয় পান। তারাও চান, সবাই তাদের মডারেট ইসলামের অনুসারী মডারেট মুসলিম বলুক।
এরপর পাকপ্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মদীনার ইসলামের মৌলিক সৌন্দর্যগুলো তুলে ধরে বলেন, আমরা সেই ইসলামের অনুসরণ করতে চাই।
তিনি পাশ্চাত্যসমাজের পোশাকনগ্নতা এবং মুসলিম সমাজের পোশাকশালীনতা সম্পর্কে বেশ যুক্তিপূর্ণ ও সাহসী বক্তব্য রাখেন। অবশ্য তার পক্ষে এটা বলা কিছুটা সহজ হয়েছে এ জন্য যে, একসময় তিনি নিজেও পাশ্চাত্যজীবন-ধারায় গা ভাসিয়ে চলেছিলেন। সেকথা তিনি ভাষণেও উল্লেখ করেছেন।
আসল কথা হলো, এগুলো নতুন কোন বক্তব্য নয়। প্রায় প্রত্যেক মুসলিম আলিম ও চিন্তাবিদ এ কথাগুলো তাদের লেখায় বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। ইমরান খানের কৃতিত্ব এই যে, তার আগে কোন মুসলিম নেতা ও শাসক বিশ্বসভায় এ সত্য এমন স্পষ্টতার সঙ্গে তুলে ধরেননি।
চতুর্থ বিষয়টি ছিলো ‘কাশ্মীর’। পাকপ্রধানমন্ত্রী ইমরান নিজেও বলেছেন, তিনি জাতিসঙ্ঘের সভায় এসেছেন মূলত কাশ্মীর সম্পর্কে কথা বলার জন্যই। ভূমিকাবক্তব্যে ইমরান খান অত্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে বলেছেন, মোদি এবং বিজেপির অন্যান্য নেতা চরম হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস-এর আজীবন সদস্য। এ সংগঠন প্রকাশ্যেই হিটলার ও মুসোলিনির হিংস্রতার অনুসারী। এরা হিন্দুদের শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী। এরা ভারতের মুসলিম অধিবাসীকে নির্মূল করার মন্ত্রে বিশ্বাসী। এ দলের নেতা-কর্মিরাই ভারতভাগের সময় মুসলিমগণ-হত্যা সম্পন্ন করেছে।
পাকপ্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশ্মীরের ভূখ-ণ্ডেও বিজেপি ও মোদি সরকার দশলাখ সৈন্য লেলিয়ে দিয়ে আশিলাখ কাশ্মীরী মুসলমানকে নির্মূল করার কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্বসম্প্রদায়কে সতর্ক করে ইমরান খান বলেন, ভারত নিজের স্বার্থে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের উপর দোষ আরোপ করতে চায়, যাতে পাকিস্তানের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে পারে। এ অবস্থায় পাকিস্তান হাতপা গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। তখন পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী দু’টি দেশ মুখোমুখী হলে যে কোন কিছুই ঘটতে পারে। সুতরাং বিশ্বসম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতেই হবে কাশ্মীর- সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধানে। ...
কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরে ইমরান খান বলেন, দীর্ঘ দু’মাস ধরে আশিলাখ কাশ্মীরী মুসলমানকে খাঁচা-বন্দী পশুর মত রাখা হয়েছে! মোদি হয়ত কল্পনাও করতে পারছেন না, যখন কারফিউ শিথিল করা হবে, আর আশিলাখ নিরস্ত্র মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে নয় লাখ সশস্ত্র সৈন্যের বিরুদ্ধে তখন পরিস্থিতি কী ভয়াবহ হতে পারে! রীতিমত রক্তের নদী বয়ে যেতে পারে।
জাতিসঙ্ঘের কঠিন সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতিসঙ্ঘেরই হিসাবমতে এপর্যন্ত একলাখ কাশ্মীরী শহীদ হয়েছে। অথচ জাতিসঙ্ঘ কিছুই করছে না। কেন করছে না? এজন্যই কি যে ভারত দেড় বিলিয়ন মানুষের বিশাল বাজার! আসলে বস্তুগত স্বার্থের কাছে বলি হচ্ছে মানবতা...!
পরিশেষে আমাদের সুচিন্তিত মত এই যে, ইমরান খান তার ভাষণের মাধ্যমে কাশ্মীরকে দখলমুক্ত করতে পারেননি, বা জাতিসঙ্ঘকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য করতে পারেননি, এটা সত্য; তবে কাশ্মীরের প্রায় বিস্মৃত সমস্যাটিকে বিশ্বের সামনে আবার তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তাছাড়া মুসলিম উম্মাহকে নতুন চেতনায় উজ্জীবিত করতেও তিনি সক্ষম হয়েছেন। এখন দেখার বিষয় হলো, ইমরান খান ও তার সরকার কাশ্মীরের জন্য কী করেন এবং কত দূর যেতে পারেন! আমরা কামনা করি, আল্লাহ্ যেন তাকে তাওফীক দান করেন, আমীন। *
কাশ্মীর আমার শৈশবের
ভালোবাসা
কাশ্মীর যখন হিন্দু-ভারতের নির্যাতনের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে, কাশ্মীর যখন দখলদার ভারতীয় বাহিনীর দশলাখ সৈন্যের বিরুদ্ধে খালিহাতে পাথর ছুঁড়ে লড়াই করছে, কাশ্মীর যখন হায়েনাদের জ্বালানো আগুনে দাউ দাউ জ্বলছে তখন অজ্ঞাত কাশ্মীরী কবির একটি কবিতা আমাকে কাশ্মীর সম্পর্কে আমার শৈশবের স্মৃতির কাছে নিয়ে গেলো। এক অবোধ শিশুর মুখে কবি বলিয়েছে, ‘মা কাশ্মীর যদি দুনিয়াতে জান্নাতের টুকরো হয় তাহলে কেন এখানে এত আগুন, এত ধোঁয়া! কেন এখানে এত রক্ত ঝরে! কেন এখানে এত অশান্তি, এত ভয়-ভীতি! কেন মা?’
মায়ের মুখে কোন জবাব ছিলো না, চোখে ছিলো শুধু একটা অসহায় দৃষ্টি।
শৈশবে আমারো মনে একটা প্রশ্ন প্রবলভাবে জেগে উঠেছিলো, কতকটা যেন বড় মানুষগুলোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার মত। মাকে প্রশ্ন করেছিলাম, কাশ্মীরে হিন্দুরা কেন মুসলমানদের মারছে?
এ প্রশ্ন আমার মনে জেগেছিলো হয়ত বড়দেরই মুখে বারবার কাশ্মীরের কথা শোনার কারণে। কাশ্মীরে তো এখন যেমন আগুন জ্বলছে, হত্যা-নির্যাতন চলছে তখনো আগুন জ¦লতো, তখনো হত্যা-নির্যাতন চলতো।
পার্থক্য একটা অবশ্য আছে, এখন বাংলাদেশের বহু মুসলিম শিশু কাশ্মীর নামটির সঙ্গেও হয়ত পরিচিত নয়। কাশ্মীরের পরিস্থিতি, সেখানকার মুসলমানদের বিপদ-মুছীবত ও দুঃখদুর্দশার কথা জানা তো অনেক দূরের কথা! কারণ আমরা বড়রাই কাশ্মীর সম্পর্কে আশ্চর্য এক নির্লিপ্ততার ঘোরের মধ্যে রয়েছি। আমাদের মুখে কাশ্মীরের কোন আলোচনা ছোটরা, শিশুরা শুনতেই পায় না। এমনকি দুর্যোগের, জুলুম অনাচারের, আর্তনাদ, আহাযারি ও ফরিয়াদের এমন ঘনঘোরের মধ্যেও কাশ্মীরের নামটি পর্যন্ত আমাদের মুখে উচ্চারিত হয় না। কারণ ওটা তো আভ্য...!
তখন অবস্থা এমন মোটেও ছিলো না। মুসলিম জাহানের যে কোন জনপদে, বিশেষ করে কাশ্মীরের সবুজ উপত্যকায় যদি আগুন জ¦লে উঠতো সে আগুনের আঁচ, বা তাপ আমাদের জীবনেও অস্থিরতা সৃষ্টি করতো। সবার মুখে উচ্চারিত হতো কাশ্মীরের নাম, কাশ্মীরের আলোচনা। তাই শিশুদেরও জানা হয়ে যেতো কাশ্মীর নামে আমাদের একটি দেশ আছে, সেখানে সহজ সরল মুসলমানদের বাস। তাদের উপর ভারতের হিন্দুরা জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। কাশ্মীরের মানুষকে তারা বন্দী করে রেখেছে।
মাকে প্রশ্ন করেছিলাম, কাশ্মীরকে আযাদ করার জন্য বড়রা জিহাদ করতে যায় না কেন?
আমার মা তবু একটা উত্তর দিয়েছিলেন, ‘যখন তুমি বড় হবে তখন তুমি যেয়ো...’
বড় তো হয়েছি, কিন্তু...! আসলে হয়ত আমি বড় হই-নি!
ফায়ছাল বিন মুস্তফা
জাতিসঙ্ঘের মোহ
আর কত !
কোন কিছুর প্রতি মোহ মানুষকে এমনই অন্ধ করে রাখে যে, সত্য তার সামনে বারবার উদ্ভাসিত হওয়া সত্ত্বেও সত্যকে অনুধাবন করতে পারে না। বারবার মনুষ যা দ্বারা বা যার দ্বারা প্রতারিত হয়, প্রতারিত হতেই থাকে, মোহের বৃত্ত থেকে আর বের হয়ে আসতে পারে না।
জাতিসঙ্ঘের বিষয়ে মুসলিম-বিশ্বের নেতৃবৃন্দ ঐ মোহের জালেই আটকা পড়েছেন বলে মনে হয়। এটা তো পরিষ্কার বিষয় যে, জাতিসঙ্ঘ তার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর কোন স্বার্থই রক্ষা করেনি, যার জ্বলন্ত সাক্ষী ফিলিস্তীন, কাশ্মীর ও আরাকান। পক্ষান্তরে মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বড় ক্ষীপ্রতার সঙ্গে কাজ করেছে, যার জ্বলন্ত সাক্ষী পূর্বতিমুর ও দক্ষিণ সুদান।
তারপরো মুসলিম নেতৃবৃন্দের মোহভঙ্গ হয় না, হচ্ছে না। সাতচল্লিশে আমরা কাশ্মীরপ্রশ্নে জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব মেনেছিলাম। আজ এত বছর পর আবার সেই জাতিসঙ্ঘেরই দারস্থ হলাম! কবে হবে আমাদের মোহভঙ্গ?
কবে আমরা বোঝবো, আমাদের সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে এবং তা শুধুযুক্তিতর্ক ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নয়।
ইমরান খানের জাতিসঙ্ঘভাষণ, মুসলিম উম্মাহর ভাবাবেগকে আবার যেন জাগিয়ে তুলেছে। ডুবতে বসা মানুষ যেমন তৃণকেই অবলম্বন করে বাঁচতে চায়, মুসলিম উম্মাহ্, বিশেষ করে পাকিস্তান ও কাশ্মীরের মুসলিমান যেন ‘ইমরানী ভাষণ’কেই বাঁচার আকুতিতে আকড়ে ধরতে চায়। কারো চিন্তার মধ্যেই যেন এটা নেই যে, জাতিসঙ্ঘের দুয়ারে ভাষণ তো আর কম হলো না, ফিলিস্তীন যেখানে ছিলো সেখানেই তো রয়ে গেলো, কাশ্মীরও সমাধানের পথে এককদমও আগে বাড়লো না, তাহলে!
এখন সময় এসেছে সত্যের মুখোমুখি হওয়ার, সময় এসেছে সাহসের সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার। সমাধান হয়ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার পরই আসবে, তবু আসবে ইনশাআল্লাহ্! কিন্তু মোহের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে যদি না পারি, আমাদের সমস্য আমাদের সামনে জ্বলতেই থাকবে, আর সমাধান হয়ে থাকবে মরুভূমির মরীচিকা!
সময় এসেছে মুসলিম উম্মাহর সবার সামনে কোরআনে এ ঘোষণা স্পষ্টভাবে তুলে ধরার
‘আয় মুমিনীন! ইহুদি ও নাছারাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। ওরা একে অপরের বন্ধু (তোমাদের নয়)।’
সময় এসেছে আজ এ সত্য পূর্ণরূপে হৃদয়ঙ্গম করার
‘প্রস্তুত করো তাদের বিরুদ্ধে যদ্দুর পারো; (প্রস্তুত করো) শক্তি এবং অশ্বপ্রহরা, ভীতসন্ত্রস্ত করবে তা দ্বারা আল্লাহ্র শত্রুকে এবং তোমাদের শত্রুকে, আর তাদের ছাড়া আরো কিছু (শত্রু)কে, যাদের তোমরা জানো না, আল্লাহ্ তাদের জানেন।...
কিছু অস্ত্র, কিছু শক্তি আছে যা ব্যবহারের জন্য নয়, শুধু শত্রুকে ভীতসন্ত্রস্ত করার জন্য। আজ ইমরান খান ভরা দরবারে (নিছক কথার ক্ষেত্রেও) এতটা সাহস দেখাতে পারতেন না, যদি না তার ডান হাতের শাহাদত আঙুল ‘বুতামের’ উপর থাকতো! ইরানের অবস্থা কবেই ইরাকের মত হয়ে যেতো, যদি না তার হাতে ‘ড্রোন’ নামানোর প্রযুক্তি থাকতো! তুরস্কের উদাহরণ তো আরো কাছে!
বিশ্বের দরবারে সউদী রাজার মূল্য তেলের মূল্যের চেয়েও কম, কেন? শুধু এ জন্য যে, তার হাতে শক্তি ও প্রযুক্তি কিছুই নেই।
মুসলিম উম্মাহ্র প্রধান কর্তব্য সুতরাং এই যে, প্রথমে আমরা শক্তি অর্জনের সাধনায় আত্মনিয়োগ করবো সর্বশক্তি দিয়ে, তারপর...
(শরীফ হোসাইন)
একটি ফুলকে ...
একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে মোরা যুদ্ধ করি...
এ গানটা যখনই শুনি, আমার সর্বসত্তায় যেন আগুন জ্বলে ওঠে! ভিতরে একটা প্রশ্ন যেন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে! আমার ইচ্ছে হয়, কাশ্মীরে আমার মযলূম মুসলিম ভাইদের বলি, ‘আমাদের স্বার্থ বা অধিকার লুণ্ঠিত হয়েছে বলে আমরা যদি ‘মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে’ অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে পারি তাহলে তোমরা কেন পারো না হিন্দুশক্তির বিরুদ্ধে অস্ত্রহাতে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়তে! তোমাদের শিশুরাও তো ফুলের মত! তো কাশ্মীরের এই ফুলগুলো, ফুলের কলিগুলো বাঁচাবার জন্য কেন তোমরা যুদ্ধ করো না!
তোমাদের ‘কাশ্মীরী তরুণীর’ মুখে কি হাসি ছিলো না! সেই সুন্দর হাসিটি যেন চিরকাল উদ্ভাসিত থাকে সেজন্য কেন তোমরা অস্ত্র ধারণ করো না!
বাংলার চেয়ে কাশ্মীরের সৌন্দর্য যেমন কম নয়, সাহস ও বীরত্বও কি কম? বাংলা মায়ের দুধের চেয়ে কাশ্মীরী মায়ের দুধের উষ্ণতা কি কম! বাংলার তরুণ রক্তের চেয়ে কাশ্মীরী জোয়ানের খুনে গরমি কি কম! তাহলে...!
(আমাতুল্লাহ্ মারয়াম রায়হানা, শুকরানা)