জীবন যদি হয়ে পড়ে এমন যে, শ্বাস নিতেই কষ্ট হয়, আর দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়, তাহলে অন্য সবকিছু হয়ে পড়ে মূল্যহীন ও তাৎপর্যবঞ্চিত। জীবনের জন্য সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে জানকবুল প্রচেষ্টা ছাড়া আর কী করার আছে?! হয়ত আমি পারি না, তবে যারা পারে তারা সাধুবাদযোগ্য।
(ধারাবাহিÑ২)
শনিবার, ২২/০৬/৩৪হি. ০৪/০৫ /১৩ খৃ.
কাল রোববার ফজরের পর থেকে রাজধানী ঢাকা অবরুদ্ধ হতে যাচ্ছে। সরকার পদে পধে বাধা সৃষ্টি করছে। সবধরনের পরিবহণ বন্ধ রাখার আদেশ দেয়া হয়েছে, যাতে সারা দেশ থেকে মানুষ রাজধানী-অভিমুখে আসতে না পারে। প্রধানমন্ত্রী সংবাদসম্মেলনে কঠোর মন্তব্য করেছেন। হেফাজতের ১৩ দফার প্রায় প্রতিটি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, যা সত্য, অসত্য ও অর্ধসত্যের মিশ্রণ ছাড়া আর কিছু নয় বলে অভিজ্ঞজনের ধারণা। সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহ্ -এর পর ছিলো, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস হবে আমাদের সকল কাজের ভিত্তি’। বর্তমান সরকার সুরঞ্জিত সেন বাবুকে (আবার পড়–ন, সেনবাবুকে) সংবিধান সংশোধনের দায়িত্ব দিয়েছে, আর তিনি ‘আল্লাহ্র উপর আস্থাসম্পর্কিত বাক্যটি সংবিধান থেকে বিলুপ্ত করে দিয়েছেন। হেফাজতের দাবী হলো, সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে হবে। এসম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহ্ আছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আছে। কাজেই নতুন করে আর কিছুর দরকার নেই’। প্রধানমন্ত্রী ভুলে যাচ্ছেন, হেফাজত নতুন কিছু সংযোজনের দাবী জানায়নি, যা ছিলো তা ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছে। ‘আল্লাহ্র প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ বিলুপ্ত করার বিষয়টা ঈমানের দিক থেকে কতটা গুরুতর হয়ত প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারছেন না। তাই এভাবে বলতে পেরেছেন।
মোমবাতি প্রজ্বলনের হিন্দুধর্মীয় সংস্কৃতিকে তিনি বাঙ্গালী সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দিয়েছেন, আর বলেছেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে আপনারাও তো মোমবাতি জ্বালিয়ে থাকেন, তো মোমবাতির বিরোধিতা করার যুক্তি কোথায়? বিশ্বাস হয়, দেশের প্রধানমন্ত্রী ‘প্রদীপ ও মঙ্গল-প্রদীপের পার্থক্য বোঝেন না?!
ভাস্কর্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে হেফাজতের দাবীর জবাবে তিনি বলেন, ‘সউদি আরবেও ভাস্কর্য আছে, ভাস্কর্য আর মূর্তি এক নয়’। প্রশ্ন হলো, এক হোক বা না হোক ইসলামে তা নিষিদ্ধ কি না, আর সউদি আরব, বা কোন মুসলিম দেশ বা ব্যক্তি হারাম-হালালের মানদ- কি না?
আল্লামা শফী সংযত ভাষায় এর জবাব দিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী স্ববিরোধিতা ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পাশকাটানোর কৌশল গ্রহণ করেছেন। সুতরাং আমি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুরোধ করবো, তারা যেন বিভ্রান্ত না হোন এবং পূর্ণ প্রত্যয়ের সঙ্গে অবরোধকর্মসূচী অব্যাহত রাখেন।
***
নয়াদিগন্তের পঞ্চম পৃষ্ঠায় কুখ্যাত গুয়ানতানামো বন্দিশিবিরের ছবি ছাপা হয়েছে। দেখে মনের ভিতরে কী যে প্রতিক্রিয়া হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। বৃটিশ নাগরিক শাকির আমীর বিনা বিচারে এগার বছর ধরে ওখানে বন্দী আছেন। কিছু বন্দী অনশন পালন করছেন, আর তাদের উপর চলছে অবর্ণনীয় নির্যাতন।
***
যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় বিরোধীদের অস্ত্র দেয়ার কথা ভাবছে। আশ্চর্য! আন্তর্জাতিক আইনের কোন্ ধারায় একটি দেশের বৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকারীদের অস্ত্র সাহায্য দিতে পারে আরেকটি দেশ? সরকারী বাহিনী গণহত্যা চালাচ্ছে, শুধু এ অভিযোগ উত্থাপনই কি যথেষ্ট?
***
নয়াদিগন্তে সপ্তম পৃষ্ঠায় ড. আব্দুল লতীফ একটি দীর্ঘ লেখা লিখেছেন, ‘তেরো দফা : হেফাজতের ব্যাখ্যা ও সরকারী ভাষ্য’ নামে। অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ ও যুক্তিপূর্ণ লেখা। কিন্তু কী কাজ হবে? সরকার তো সবকিছু তুড়ি মেরেই উড়িয়ে দিতে চায়!
জসিমুদ্দীন তার লেখায় তুলে ধরেছেন, নারী শ্রমিকদের আসল শত্রু কারা, আর মিত্র কারা?
সোমবার, ২৪/০৬/৩৪ হি. ০৬/ ০৫/১৩ খৃ.
যা আশঙ্কা করেছিলাম তাই শেষ পর্যন্ত ঘটলো। কথা ছিলো শুধু ঢাকা অবরোধের, কিন্তু দিনভর সফল অবরোধ শেষে অজ্ঞাত কারণে সমাবেশ হলো শাপলাচত্বরে। রাজধানীর পথে পথে সঙ্ঘর্ষ হলো। অস্ত্রহাতে আওয়ামী লীগকর্মীদের ছবি এসেছে যুগান্তরে। রাজধানী হঠাৎ করে যুগান্তরের ভাষায় রণক্ষেত্রে পরিণত হলো। শিরোনামÑ ‘হেফাযতÑপুলিশ Ñআলীগ সঙ্ঘর্ষ। আওয়ামী লীগ সবরকম সরকারী সুবিধা ভোগ করার পরো পুলিশ ছাড়া পথে নামতে পারে না। তবু তাদের আস্ফালন থেমে নেই।
খালেদা জিয়া রাতেই দলের নেতাকর্মীদের আদেশ দিয়েছিলেন হেফাযতের পাশে দাঁড়াতে। তাঁর আহ্বান আন্তরিক ছিলো বলেই বিশ্বাস; কিন্তু কোন কোন নেতার হিসাব হয়ত ছিলো অন্যরকম। এজন্য দলকে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে।
হেফাযতপ্রধান আল্লামা শফী এখন কার্যত লালবাগমাদ্রাসায় অবরুদ্ধ। পত্রিকায় তাঁর যে ছবি এসেছে তাতে পরিষ্কার বোঝা যায়, পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছেন। সরকার তাঁকে নিয়ে কী করে, এখন সেটাই হলো দেখার বিষয়।
শীর্ষস্থান থেকে নিয়ে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মুখের ভাষা ও দেহভঙ্গী যদি বাঙ্গালী জাতির প্রতিনিধিত্বকারী হয় তাহলে বলতেই হবে, এ জাতি ...।
সিরাজুর রহমান বলেছেন ‘তাদের মুখ থেকে এবং কলম থেকে যেন বর্জ্যপদার্থ বের হয়।’
***
গতকাল মালয়েশিয়ায় সাধারণ নির্বাচন হলো। মহাথির মুহম্মদের প্রভাবাধীন সরকারী দলকে ক্ষমতা থেকে নির্বাসিত করার পশ্চিমা প্রচেষ্টা কী সফল হতে চলেছে? কালকের মধ্যে হয়ত জানা যাবে।
***
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে একটি গবেষণাগারে ইসরাইল রকেট হামলা চালিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এর ক্ষয়ক্ষতি সিরিয়ার সামরিক শক্তির জন্য হবে সুগভীর। ওবামা ইসরাইলী হামলার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন। ভালো! আসলে আমেরিকা যা বলে, বিশ্বের জন্য এখন সেটাই হলো আইন, আর যা করে সেটাই হলো ইনসাফ! বিশ/বাইশ টুকরো আরবজাহান কী আর করবে! বস্তুত আরবরা তাদেরই কর্মফল ভোগ করছে, যেমন করছি আমরা। শত্রুকে বন্ধু বলে গ্রহণ করলে এমনই হয়!
মঙ্গলবার, ২৫/০৬/৩৪ হি. ০৭/০৫/ ১৩ খৃ.
পুলিশ, র্যাব, বিজিবি যৌথবাহিনী রোববার গভীর রাতে শাপলা চত্বরে নিরস্ত্র তওহিদী জনতার উপর যে বর্বরতম অভিযান চালিয়েছে তাতে শত শত নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইন্টারনেটে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ দেখলে যে কারো বুক কেঁপে ওঠবে। সমগ্র জাতি এখন শোকে স্তব্ধ।
আওয়ামী লীগের দাবী, অভিযানে হতাহতের কোন ঘটনাই ঘটেনি, অর্থাৎ কেউ নিহত হয়নি, আহতও হয়নি। কী হয়েছে তা অবশ্য তারা বলেনি। এ প্রশ্নেরও উত্তর জানা নেই যে, গভীর রাতে তাহলে দিগন্ত টিভি ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার কেন বন্ধ করে দেয়া হলো? আন্তর্জাতিক মিডিয়া পর্যন্ত বলছে, ৭১-এর পর এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের সবচে’ ভয়াবহ সহিংসতা। সিএনএন-এর মতে নিহতদের সংখ্যা সম্ভবত কখনই জানা যাবে না।
নয়াদিগন্তের তৃতীয় পৃষ্ঠাব্যাপী যেসব ছবি ছাপা হয়েছে তাতেই কিছুটা হলেও বোঝা যায়, রাতের অন্ধকারে আসলে কী ঘটেছে! পুলিশি হামলার মুখে পড়েও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া হেফাযতকর্মী জামালপুরের আবুবকর সিদ্দীক জানিয়েছেন, রাত আড়াইটায় হামলা শুরু হওয়ার পর অসংখ্য মানুষকে তিনি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছেন, যাদের পুলিশ গাড়ীতে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলো। মাওলানা মুঈনুদ্দীন রূহী প্রেরিত বার্তায় বলা হয়েছে, কমপক্ষে আড়াই হাজার নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট হেফাযতে ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত ‘গণহত্যা’র প্রতিবাদে বুধ ও বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। আজ তাদের উদ্যোগে গায়বি জানাযা হওয়ার কথা। (চিত্তাকর্ষক!)
আল্লামা শফীকে কঠোর পুলিশি প্রহরায় বিমানযোগে চট্রগ্রাম পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। সম্ভবত তিনি হাটহাযারিতে গৃহবন্দী থাকবেন। পরিস্থিতির বিচারে তাঁর জন্য অবশ্য এটা মন্দের ভালো। জেলে নিয়ে গেলেও কিছু করার ছিলো না। তিনি দু‘আদিবস পালন এবং ধৈর্যধারণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জুনায়েদ বাবুনগরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। অর্থাৎ বন্দুক ছিলো র্যাব-পুলিশ-বিজিবির হাতে, আর হত্যাকা- চালিয়েছেন বাবুনগরী! হায়, বাবুনগরী,পুরো দেশটাই তো এখন আন্ধানগরী!
মাসুদ মজুমদারের একটি মূল্যবান লেখা আছে উপসম্পাদকীয় পাতায়, তিনি লিখেছেন, ৬ই মে ঐতিহাসিক বালাকোটদিবস। সৈয়দ আহমদ শহীদের স্মৃতিবিজড়িত এই দিনটিতেই ঘটে গেলো আরো মর্মান্তিক এক বালাকোট! এদিনটির সঙ্গে বাংলার আলেমসমাজ পরিচিত। তারা বুকের রক্ত ঢেলে এ মহান দিবসটির সঙ্গে আবার একাত্ম হয়েছেন।...
তিনি বলতে চেয়েছেন, নেতৃত্বে অদূরদর্শিতা ছিলো, তবু চূড়ান্ত বিচারে তারাই জয়ী হয়েছেন, তারা কিছুই হারাননি; তবে এখন দূরদর্শী হওয়ার তাগাদা আরো বেড়েছে। আলিমসমাজকে রাজনীতিসচেতন অবশ্যই হতে হবে, তবে রাজনীতির জটিল ও কূটিল পথ তাদের জন্য নয়। তাছাড়া ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই, এটাও ৬ই মে, এর রক্তাক্ত দিনটির শিক্ষা। লেখাটি পড়ার এবং মনে রাখার মত।
এরশাদ মজুমদারের লেখার শিরোনাম হলো, ‘মুসলমানের দেশ হলেও রাষ্ট্র তাদের কতটুকু!’
***
রানাপ্লাজা থেকে এ পর্যন্ত ৬৫৮টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে যার অধিকাংশই হচ্ছে অর্ধগলিত। প্রতিটি লাশের মূল্য আপাতত নির্ধারণ করা হয়েছে বিশহাজার, যা জেলাপ্রশাসনের মাধ্যমে লাশসহ স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। (বাংলাদেশের বাজারমূল্য হিসাবে হয়ত যথেষ্ট)
বুধবার ২৬/০৬/৩৪ হি. ০৮/০৫/১৩
আওয়ামী লীগ সত্যি লা-জবাব! ‘তাদের আজকের বক্তব্য হলো, মতিঝিলে কোন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি; খালেদা জিয়ার নির্দেশেই হেফাজতকর্মীরা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে!’
নেতকর্মীদের মুক্তির দাবীতে হেফাযতে ইসলাম ১২ই মে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে। আবারো প্রমাণিত হলো নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা। সারা দেশ কেন, শুধু রাজধানী বা চট্টগ্রামেও হরতাল পালনের মত অবস্থা কি আছে আমাদের! এখনো ভাবা হচ্ছে মারমুখী কর্মসূচীর কথা!
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে বৈঠক করে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছে বেসরকারী টিভি চ্যানেল মালিকসংগঠন (এডকো), এর নেতৃবৃন্দ। (লিপসার্ভিস হলেও) এ সহমর্মিতা সাধুবাদযোগ্য।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবী করেছেন। তিনি অত্যন্ত ভদ্রলোক এবং অভিজাত পরিবারের সন্তান। আমার আশঙ্কা প্রথমত এ দাবী উপেক্ষিত হবে, দ্বিতীয়ত বিচার বিভাগের বর্তমান অবস্থায় কতটুকু কী আশা করা যায়?
বাবুনগরীকে নয়দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। রিমান্ড শব্দটিই বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দেয়। সারাজীবন মাদরাসায় পড়ে থাকা বয়স্ক মানুষটির কপালে শেষ পর্যন্ত কী আছে আল্লাহ জানেন। হে আল্লাহ তুমি আমাদের সবাইকে রক্ষা করো, আমীন।
***
রানাপ্লাজা ট্রাজেডির চৌদ্দতম দিনে প্রধান-মন্ত্রীর ত্রাণতহবিলে অর্থজমা পড়ছে প্রচুর।
ধ্বংসস্তূপ থেকে বেঁচে আসা যশোরের রীনা বলেছেন, বেঁচে আছি, বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছে। ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে চিৎকার দিয়ে জেগে ওঠি। মনে হয়, পাগল হয়ে যাবো।
***
আব্দুল কাদের মোল্লাকে ‘আইনের মাধ্যমে হত্যা’ থেকে বোধহয় রক্ষা করা সম্ভব হবে না। সরকার থেকে বড় সরকার মনে হয় ইমরান সরকার! তার একই দাবী, ‘ফাঁসি ছাড়া কোন রায় ‘জাতি’ মানবে না।’ আশ্চর্য, এটা আদালত অবমাননার আওতায় পড়ছে না! আব্দুল কাদের মোল্লার প্রধান আইনজীবী আব্দুর-রাজ্জাক সাধ্যমত লড়াই করছেন। তার বক্তব্যে হতাশা পরিষ্কার।
***
যুক্তরাষ্ট্রে যৌনহয়রানির অভিযোগে খোদ বিমানবাহিনীর যৌনহয়রানি প্রতিরোধ কমিটির প্রধানকে আটক করা হয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগে বছরে ‘মাত্র’ ১৯ হাজার যৌনহয়রানির ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য এ পরিসংখ্যান হচ্ছে ঐ সব ঘটনার যা অভিযোগ আকারে নথিবদ্ধ হয়।
বৃহস্পতিবার, ২৭/০৬/৩৪ হি. ০৯/ ০৫/১৩ খৃ.
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল কামরুয্যামানের মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হবে। রাষ্ট্রপক্ষের দাবী, অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সুতরাং মৃত্যুদণ্ডই হবে একমাত্র শাস্তি। এটা কি আগাম রায় ঘোষণা?
***
যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে নারিদের উপর যৌনহয়রানির হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। পেন্টাগন বছরওয়ারি একটি বিস্তারিত পরিসংখ্যান প্রকাশ করে বিষয়টি তুলে ধরেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ওবামা সেনাসদস্যদের হুঁশিয়ার করে বলেছেন, এ অবস্থা কোনভাবেই সহ্য করা যায় না। প্রশ্ন হলো, সহ্য না করে তিনি করবেনটা কী?
***
মিশরে ইখওয়ানুল মুসলিমীনের সরকারকে আন্তর্জাতিক মহল কোনভাবেই যেন মেনে নিতে পারছে না। এখনো বছরপূর্তি হয়নি প্রেসিডেন্ট মুরসির সরকারের। এরই মধ্যে শোরগোল তোলা হচ্ছে, মুরসি বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে পুরোপুরি ব্যর্থ! বেচারা যে পদক্ষেপই গ্রহণ করছেন, সেনাবাহিনী এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ মহল তাতেই বাধা দিচ্ছে, আর পশ্চিমা বিশ্ব তাতে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। এ কথা কেউ বলছে না যে, এর চেয়ে ভালো আর কী করা সম্ভব মুরসির পক্ষে। আজকের যুগান্তরে ভিতরের পাতায় শিরোনাম হলো, ‘মিসরসরকারে ব্রাদারহুডের প্রতাপ’। এ শিরোনাম এমন একটি দেশের পত্রিকার যেখানে ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ, যাদের পুলিশবাহিনীকে বলা হয় গোপালী পুলিশ!
***
ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেন আবদারের ভাষায় বলছে, সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায় তারা। অন্যদিকে সরকার আলোচনার দরজা-জানালা সব বন্ধ করে কানে তুলো দিয়ে বসে আছে। যেন দেশে কোন সমস্যাই নেই। ইকোনমিস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের সামনে এখন খুবই কঠিন দিন।
শুক্রবার, ২৮/০৬/৩৪ হি. ১০/০৫/ ১৩ খৃ.
অবশেষে রাষ্ট্রপক্ষের এবং শাহাবাগীদের পক্ষেই গেলো ট্রাইব্যুনাল-এর রায়, যেমনটা আশঙ্কা করা হয়েছিলো! কামরুয্যামানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। তিনি অত্যন্ত শান্তভাবে রায় শুনে শুধু মন্তব্য করেছেন, এটি ভুল বিচার। সবাইকে একদিন বড় আদালতের সামনে দাঁড়াতে হবে। ব্যারিস্টার আব্দুর-রাজ্জাক বলেছেন, এটা একটা ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। আওয়ামী লীগ বলেছে, ফাঁসির রায়ে তারা সন্তুষ্ট। আর শাহাবাগের গণজাগরণ মঞ্চে রীতিমত মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। জামায়াত রোববার দেশব্যাপী হরতাল ডেকেছে।
***
এসএসসির ফল প্রকাশিত হলো আজ। পাশের হার ৮৯ এর উপরে, যা নতুন রেকর্ড। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৮২ হাজারের উপরে। মনে হচ্ছে, সরকার শিক্ষার উন্নতি দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিতে চায়। শিক্ষার্থীরা আসল শিক্ষা কতটুকু পাচ্ছে সেটা এখন আর বিবেচ্য নয়, সাময়িক আনন্দেই সবাই খুশী। অসংযমী উল্লাস, উচ্ছ্বাস আর দু’আঙ্গুলের চিহ্ন দেখে তাই তো মনে হচ্ছে।
***
হেফাযতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ শেষ পর্যন্ত বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পেরেছেন বলে মনে হয়। হরতালের ডাক তারা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আজকের নয়াদিগন্তে শেষ পৃষ্ঠার শিরোনাম, ‘পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টায় হেফাযত’। আল্লামা শফী বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবী জানিয়ে বলেছেন, সব জুলুম-অত্যাচারের বিচারের ভার আল্লাহর উপর সোপর্দ করলাম। (সব যুলুম অত্যাচারের!)
প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন, হেফাযতের কর্মীরা রোববার বিকেলে বাইতুল মোকাররমে তাণ্ডব চালিয়ে শত শত কোরআন শরীফ পুড়িয়েছে। ‘বঙ্গবীর’ আব্দুল কাদের সিদ্দীকী এর প্রতিবাদে বলেছেন, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য জীবন দিতে পারে তারা কোরআনে আগুন দিয়েছে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি আরো বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক হত্যাণ্ডকা- দেখেছি, কিন্তু আলেমদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে এরূপ নারকীয় তাণ্ডব আমি কখনো দেখিনি।
***
মালয়েশিয়ার নির্বাচনে মহাথির সমর্থিত সরকারী দল জয়লাভ করেছে। বিরোধী নেতা আনোয়ার ইবরাহীম কারচুপি শুধু নয়, ভোটচুরির অভিযোগ এনেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কথিত অভিযোগ সমর্থন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
শনিবার, ২৯/০৬/৩৪ হি. ১১/০৫/ ১৩ খৃ.
দীর্ঘ ১৭ দিন অর্থাৎ ৪১৫ ঘণ্টা পর রানাপ্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে দিনাজপুরের নারী শ্রমিক রেশমাকে। দেশীয় মিডিয়া তো বটেই আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এ ঘটনা। যাক, আল্লাহর শোকর, অনেক লাশের মধ্যেও যখন দুর্গন্ধের তীব্রতায় ধ্বংসস্তূপের আশেপাশেও দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছিলো না তখন একটি জীবন উদ্ধার পেয়েছে। তবে উদ্ধার পাওয়া রেশমার চেহারা, চাহনি ও পোশাক দেখে অনেকে অবাক! একেবারে তরতাজা চেহারা এবং সাফসুতরা পোশাক! যুগান্তর ও প্রথম আলো যেভাবে উদ্ধার তৎপরতা এবং অবরুদ্ধ রেশমার প্রতিক্রিয়ার বিবরণ দিয়েছে তাও অবাক হওয়ার মত! কোথায় যেন একটা কিন্তু দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী রেশমাকে জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। রেশমাকে উদ্ধারের পর যেখানে আইসিউতে নিয়ে তার প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিক আছে কি না পরীক্ষা করা হচ্ছে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর আলিঙ্গনে সে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে! বিস্ময়করই বটে!
অনলাইন থেকে তথ্য পাওয়া গেছে, ২০০৫ সালে পাকিস্তানে যে ভূমিকম্প হয় তাতে দীর্ঘ ৬৩ দিন পর এক বৃদ্ধাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিলো। ২০১০ সালে হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্পে একজনকে ১১ দিন পর, অন্য একজনকে ২৭ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছিলো।
***
দ্য ইকনমিস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার মতিঝিলে পাঁচই মে মধ্যরাতে হেফাযতে ইসলামের ঘুমন্ত নেতাকর্মীদের উপর নিরাপত্তাবাহীনির যৌথ অভিযানে আহত-নিহতদের বিষয়ে দেশের মিডিয়াকে ‘নীরব’ রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রানাপ্লাজা ভবনধ্বসে নয়শত মৃত্যু যেন যথেষ্ট ছিলো না, তাই রাজনৈতিক সহিংসতায় মৃত্যু ঘটানো হচ্ছে। ৬ই মে ঢাকায় ভোরের কয়েক ঘন্টায় যা ঘটেছে তা একটা গণহত্যার মতই।
***
এনজিও ‘যুবক’-এর প্রতারণা সম্পর্কে তদন্ত কমিশন রিপোট প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, তিনলাখ সাইত্রিশ’ গ্রাহকের কাছ থেকে ২৫৮৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
***
হাটহাজারীতে গতকাল জুমার জামাতে বিশেষ দু‘আর আয়োজন করা হয়েছিলো, হাজার হাজার মানুষ তাতে শরীক হয়। আল্লামা আহমদ শফী জালিমের জুলুমের বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে আবেগপূর্ণ ভাষায় ফরিয়াদ করেন। যুগান্তরের মন্তব্য হলো, হাটহাজারিতে আমীন আমীন ধ্বনিতে কান্নার রোল।
***
যুগান্তরে সম্পাদকীয় নিবন্ধে সম্প্রতি প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার রেকর্ডভাঙ্গা ফল সম্পর্কে মন্তব্য করা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী দারুণ সন্তুষ্ট, উল্লসিত শিক্ষামন্ত্রীও, কিন্তু আমাদের কথা হলো, শিক্ষার মান বাড়ছে কি না তা দেখতে হবে। সৈয়দ ইবরাহীম বীর প্রতিক, এর নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে যুগান্তরে। শিরোনাম হলো, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল থেকেই সব সমস্যার সৃষ্টি’।
পাকিস্তানে আজ বহুল আলোচিত সাধারণ নির্বাচন। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর দেশটিতে তিনবার সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছে এবং চারজন সামরিক শাসক ক্ষমতায় বসেছেন। পক্ষান্তরে ভারতে বরাবর নির্বাচিত সরকার দেশ শাসন করে আসছে। যদি রহস্যপূর্ণ কিছু না ঘটে তাহলে নওয়াজ শরীফ জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রনিধানযোগ্য কারণেই আমেরিকা সম্ভবত ইমরান খানকে চাচ্ছে। তাবেদার জারদারি এখন আমেরিকার কাছে ‘কলার খোসা’।
সোমবার, ০২/০৭?৩৪ হি. ১৩/০৫/ ১৩ খৃ.
আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিদেশী কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে আবারো বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। একদিকে সরকার বলছে, সংলাপে তারা সম্মত, অন্যদিকে এরূপ অনড় অবস্থান তাদের আন্তরিকতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
***
জামায়াত তাদের একক হরতাল ভালোভাবেই পালন করেছে। কঠোর পুলিশি তৎপরতার মধ্যেও তারা মোটামুটি রাস্তায় ছিলো, যা সরকার ও প্রশাসনকে বেশ চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বলে মনে হয়। রাজশাহীতে র্যাবের গুলিতে একজন শিবিরকর্মী নিহত হয়েছেন।
নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি কটাক্ষকারী দুই ব্লগারকে আদালত জামিন দিয়েছে। (তারা জামিন পাবে না তো পাবে কারা!)
জাতিসঙ্ঘের মহাসচীবের পক্ষ হতে প্রেরিত দূত তারানকো জামায়াত নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। অন্যদিকে জামায়াতের নায়েবে আমীর একেএম ইউসুফকে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গতকালই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করেছে।
***
সিরিয়ার পরিস্থিতি দিনদিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। পশ্চিমা শক্তির প্রধান দুশ্চিন্তার কারণ, বাশারের পর ইসলামী শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় চলে আসতে পারে। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত তাদের হাতে বাশারের বিকল্প নেই। সিরিয়ায় মিসরের অনুরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক সেটা তারা চায় না।
***
শাপলাচত্বর ট্রাজেডির উপর দু’টি লেখা এসেছে নয়াদিগন্তে, গোলাপ মুনীর লিখেছেন, ‘কবে হবে এ বিভাজনের অবসান’ শিরোনামে। মুহাম্মদ মামুনুল হক লিখেছেন, চেতনায় প্রোজ্জ্বল নতুন বালাকোট। উভয় লেখক হেফাযতের বিরুদ্ধে সরকারী অপপ্রচারের তথ্যনির্ভর জওয়াব দিয়েছেন। সরকারী হিসাবেই বলা হয়েছে, শাপলা চত্বর অভিযানে একলাখ পঞ্চান্ন হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ খরচ হয়েছে। তাহলে এ দাবী কীভাবে বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে যে, হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি? এ দিকে ফেসবুক-ব্লগে নতুন ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ পাচ্ছে যাতে ঘটনার বীভৎসতার নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে।
***
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে নওয়াজ শরীফ বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। তাঁর দল মুসলিম লীগ ১৩১টি আসনে জয়ী হয়েছে। ইমরান খানের পিটিআই পেয়েছে ৩৩টি আসন, আর জারদারীর পিপিপির আসনসংখ্যা ৩১। নওয়াজের এ বিজয়কে পর্যবেক্ষক মহল বলেছেন, অভাবনীয়! (অর্থাৎ কেউ কেউ হয়ত ভাবতে পারেনি!)
মঙ্গলবার, ০৩/০৭/৩৪ হি. ১৪/০৫/১৩ খৃ.
আজকের জাতীয় পত্রিকাগুলোর প্রধান শিরোনাম, সংলাপে বসতে রাজি আ’লীগ-বিএনপি। জাতিসঙ্ঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচীব তারানকো দূতিয়ালী করে সরকারকে রাজি করিয়েছেন সংলাপে বসতে। সবাই আশা করছে, হয়ত বিদ্যমান সঙ্কট কেটে যাবে। তারানকো বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া দরকার, তবে আমাদের পক্ষ হতে নির্দিষ্ট কোন ফর্মুলা নেই, বড় দু’টি দল আলোচনার মাধ্যমে নিজেরাই তা ঠিক করে নেবেন। তিনি সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, এখনই সংলাপে বসা জরুরি, কারণ সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। (সুন্দর কূটনীতি!)
পদত্যাগকারী রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ‘কালো বিড়াল’ খ্যাতি লাভ করেছেন। তিনি বলেছিলেন, রেলবিভাগ থেকে তিনি দুর্নীতির ‘কালো বিড়াল’ তাড়াবেন। কিন্তু তিনি নিজেই দুর্নীতির দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে রহস্যজনক কারণে শেষ পর্যন্ত তার মন্ত্রিত্ব বহাল রয়ে গেছে। এখন তিনি দফতরবিহীন মন্ত্রী। দুষ্ট লোকেরা বলছে, উজিরে খামোখা। কিন্তু অভিজ্ঞজনেরা বলছেন, সেনবাবুর শেকড় রয়েছে ‘অন্য মাটিতে’। সুতরাং দফতরবিহীন হলেও তিনি মোটেই খামোখা নন। সত্তর লাখটাকার রহস্য হয়ত রহস্যই থেকে যাবে। যারা না বুঝে অজ্ঞতাবশত টাকাটা আটক করেছেন তারাই হয়ত শেষে ফেঁসে যাবেন।
***
পোশাক শিল্পে ধূমায়িত শ্রমিক অসন্তোষ কে জানে কিসের আলামত! মালিকপক্ষ আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছেন। ওয়াকিফহাল মহল বলছেন, এর পিছনে প্রতিবেশী দেশের হাত রয়েছে। এমনিতেই পোশাক কারখানার নিয়ন্ত্রক পদগুলো ভারতীয়দের দখলে। এর মধ্যে রানাপ্লাজা ট্রাজেডি বিদেশীদের হাতে মোক্ষম অস্ত্র তুলে দিয়েছে। তারা পোশাকের মূল্য বাড়াতে চায় না, কিন্তু শ্রমিকদের নিরাপত্তার নাম করে কারখানা মালিকদের উপর নিত্যনতুন শর্ত চাপিয়ে দিচ্ছে।
***
আজ জামায়াতের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দলের নায়েবে আমীর একেএম ইউসুফকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে। জামায়াতে ইসলামী চরম প্রতিকূল পরিবেশেও তার শক্তি প্রদর্শনে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের আর কোন দল কখনো এরূপ প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হয়নি, বিশেষ করে ইসলামের নামে রাজনীতি করা কোন দল।
***
সাভারে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২৪৩৮, মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে ১১২৭, এখনো নিখোঁজ রয়েছে বহু মানুষ।
বুধবার, ০৪/০৭/৩৪ হি. ১৫/০৫/১৩ খৃ.
মহাসেন নামের ঘূর্ণীঝড় আজ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ক্ষণে ক্ষণে বদলাচ্ছে ঘূর্ণীঝড়টির গতিপ্রকৃতি।
***
জাতিসঙ্ঘের মহাসচীব বান কি মুন আবারো বলেছেন, ‘সঙ্ঘাতের অবসান ঘটিয়ে সংলাপ জরুরি।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি জাতিসঙ্ঘ সদর দপ্তরে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেছেন, ‘তারানকোর উদ্যোগকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। সংলাপের নামে টালবাহানা হচ্ছে কি না পর্যবেক্ষণ করবে জাতিসঙ্ঘ।’
অভিজ্ঞ মহলের মতে জাতিসঙ্ঘ এবং আমেরিকা নিজেই বিষয়টিকে হালকাভাবে নিয়েছে। তাই সরকারও কোন চাপ অনুভব করছে না।
***
চারটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে। এতে সরকার কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে বলে মনে হয়। আওয়ামী লীগের ধারণা ছিলো, বিরোধী দল নির্বাচন বয়কট করবে। সেটাই ছিলো তাদের কাম্য। দেখা যাক, শেষ ফল কী হয়!
সরকারপন্থী আলেমদের দিয়ে হেফাযতবিরোধী সমাবেশ করার তৎপরতা শুরু করেছে সরকার। ১৮ই মে সমাবেশ ডাকা হয়েছে। সরকার সম্ভবত আত্মঘাতী খেলায় নেমেছে। (সরকারী, দরবারী ও কারবারী আলেমদের সম্পর্কেই তো بئس শব্দটি উচ্চারিত হয়েছে যবানে নবুয়তে!)
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল অসংযমী বক্তব্যের জন্য আগেই যথেষ্ট ‘সুনাম’ অর্জন করেছেন। এবার তিনি মন্তব্য করলেন, ‘সাভার ট্রাজেডি আসলে তেমন বড় কোন ঘটনা নয়।’ এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘চারহাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি তেমন কিছু না।’
বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাসান মাহমূদ বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়া আর সম্ভব নয়। অন্তবর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে, তবে এর প্রধান হবেন শেখ হাসিনা। এখন সংলাপ হতে পারে শুধু অন্তবর্তীকালীন সরকারবিষয়ে।’ এর উপর কী মন্তব্য করা যায়?!
***
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর একেএম ইউসুফের জামিন আবেদন খারেজ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। করারই কথা। তাকে ধরা হয়েছে ছেড়ে দেয়ার জন্য তো নয়!
***
ইনসাইড শাপলা ট্রাজেডি নামে একটি বিশ্লেষণধর্মী লেখা এসেছে নয়াদিগন্তে। আল্লামা শফী আবার আহ্বান জানিয়েছেন বিচারবিভাগীয় তদন্তের।
শিবির সভাপতি দেলোয়ারকে রিমান্ডে নিয়ে কী পরিমাণ নির্যাতন করা হয়েছে তা ছবি থেকেই ধারণা করা যায়। কিন্তু আদালত নির্যাতনের অভিযোগ আমলে না নিয়ে আবারো রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ একটি ছাত্রসংগঠনের এই মেধাবী নেতাকে হয়ত জেনেশুনেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
(চলবে ইনশাআল্লাহ)