রজব ১৪৩৯ হিঃ (৩/৩)

কিশোর পাতা

কিশোর পাতা - ১

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

পুষ্পের প্রতি ভালোবাসা

প্রিয় পুষ্প! তোমাকে আমি ভালোবাসি, কারণ আমি ভালোবাসি আমার মায়ের মুখের ভাষা; আমি চাই ভাষা ও সাহিত্যের মাধ্যমে আমার দেশের প্রতিটি মেধা ও প্রতিভার কাছে ইসলামের আহ্বান, কোরআনের পায়গাম এবং সুন্নাহর দাওয়াত পৌঁছে দিতে। সাহিত্যের এ মহান সাধনায় তুমি পারো আমাকে সঠিকভাবে পথ দেখাতে; তাই তোমাকে আমি এত ভালোবাসি হে প্রিয় পুষ্প! তাই তোমার প্রতীক্ষায় ব্যাকুল হৃদয়ে এভাবে প্রহর গুণি আমি। তুমি বাইরের সাজে সুন্দর! তুমি ভিতরের সম্পদে সমৃদ্ধ!! তুমি চেতনার মশাল ধরেছো আমাদের চলার পথে। যারা ঘুমিয়ে আছে তাদের তুমি জাগাতে চাও কখনো আদরের কোমলতা দিয়ে, কখনো তিরস্কারের কঠোরতা দিয়ে। সোহাগে শাসনে এমন করে কে আর পথ দেখায়, কে আর হাত ধরে নিয়ে যায় আমাদের!! তাই তোমাকে এত ভালোবাসি হে প্রিয় পুষ্প! তাই তোমার জন্য আমাদের প্রাণ এত কাঁদে হে প্রিয় পুষ্প!!

তুমি আমাকে কলম ধরা শিখিয়েছো, কাগজের পাতায় হৃদয়ের রেখাগুলো আঁকতে শিখিয়েছো, তুমি আমাকে মনের ভাবনাগুলো লিখতে শিখিয়েছো!!  হোঁচট খেয়ে খেয়ে হলেও আজ আমি গন্তব্যের পথে চলতে শিখেছি, সে তো তোমারই কল্যাণে!! তাই তোমাকে আমি এত ভালোবাসি হে প্রিয় পুষ্প!! তোমার জন্য তাই আমার চোখে এত অশ্রু ঝরে প্রিয় পুষ্প!! কবির জন্য যেমন তার কবিতার ছন্দ, শিল্পীর জন্য যেমন তার গানের সুর, সন্ধ্যার জন্য যেমন জোনাকির আলো, রাতের জন্য যেমন তারার ঝিলিমিলি, বা জোসনার বন্যা, কৃষকের জন্য যেমন মাঠের সোনালী ফসল, বাগানের মালীর জন্য যেমন ফুলের হাসি, তুমি আমার জন্য তেমনি হে পুষ্প! হে আমার আত্মার আকুতি, আমার হৃদয়ের স্পন্দন!! হে আমার প্রাণের শীতলতা এবং উষ্ণতা!!

আমি তোমার, শুধু তোমার!! কিন্তু তুমি! আমি জানি, তুমি একা আমার নও, তুমি সবার!! তোমাকে যারা ভালোবেসে হাতছানি দিয়ে ডাকে তুমি তাদের সবার!! আমার তাতে ঈর্ষা নেই প্রিয় পুষ্প!!

তুমি সবার জীবনে আলো ছড়াও! সবাইকে পথ চলার প্রেরণা যোগাও!! সবাই যেন তোমার সুবাস গ্রহণ করে ধন্য হয়, আজ তোমার নবজন্মের শুভলগ্নে এটাই আমার অন্তরের কামনা!!

আবার এসো হে প্রিয়! বড় ব্যাকুল হৃদয়ে তোমার পথ চেয়ে আছে এক অভাগা প্রেমিক!! আসবে তো হে প্রিয়?!

মুহাম্মদ বিন শাব্বীর জামেয়া উছমানিয়া, চাটখিল, নোয়াখালি।

 

একটি স্বপ্নের জন্য

একটি স্বপ্ন ছিলো তার বুকের মধ্যে, তার চোখের তারায়! স্বপ্ন দেখার যোগ্যতা তার ছিলো না, তবে স্বপ্নের আকুতি ও ব্যাকুলতা ছিলো এবং ছিলো আকাশের কাছে বিনম্র মিনতি!!

আকাশ তার প্রতি সদয় ছিলো। আকাশ তাকে জোসনার স্নিগ্ধতা, মেঘের শুভ্রতা এবং শিশিরের আর্দ্রতা মেখে একটি স্বপ্ন দান করেছিলো। সেই স্বপ্নের প্রতি

তার পরম মমতা ছিলো, যেমন থাকে কোলের শিশুর প্রতি মায়ের!!

মমতার পরশে তার স্বপ্ন বড় সজীবতা লাভ করেছিলো। তার স্বপ্ন একটু একটু করে পেখম মেলতে শুরু করেছিলো।

কিন্তু ....!!

চারদিক আঁধার করে হঠাৎ এক ঝড় শুরু হলো! সেই ঝড়ে তার নরম কোমল স্বপ্নটি তছনছ হয়ে গেলো! ঝড় তো ঝড়ের মতই নির্দয়, নির্মম!! তাই ঝড়ের প্রতি কোন অভিযোগ ছিলো না! তুমি  তো তার আপন ছিলে! তুমি তো তার অনেক অনুগ্রহ দ্বারা সিক্ত ছিলে!! তুমি কেন এগিয়ে এলে না! তুমি কেন অন্তত কোমল হাতের স্পর্শে একটু সান্ত¦না দিলে না!! তোমার ঠোঁটের কোণে কেন এ বাঁকা হাসি!!

আলী হোসাইন/ মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা

তাকে  দেখিনি,  হয়ত দেখবো না, তবু ...

সেই শৈশব থেকে আমি পুষ্পকে আপন করে নিয়েছিলাম, পুষ্পও যেন আমাকে আপন করে নিয়েছিলো। আমার জীবন ধীরে ধীরে পুষ্পের সুবাসে সুবাসিত এবং পুষ্পের শুভ্র-সুন্দর চিন্তায় আলোকিত হয়ে চলেছিলো...

হঠাৎ... পুষ্পই যেন ঘুমিয়ে গেলো ‘দাস্তাঁ ক্যহতে ক্যহতে’! পুষ্পকে হারিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি বিরহের বেদনা কাকে বলে এবং তার দহন কত কঠিন!!

তারপর থেকে আমার নির্জন রাতের একটাই শুধু আকুতি ছিলো আল্লাহর কাছে, ‘প্ষ্পু যেন তার সব আলো ও সুবাস নিয়ে আবার ফিরে আসে আমার জীবনে!!

দিন যায়, রাত যায়, আমার শুধু অশ্রু ঝরে, আর বিরহের দহন আরো তীব্র হয়!

বাগানে বসন্ত আসে, ফুল ফোটে, আমার হৃদয় শুধু ব্যাকুল প্রতীক্ষায় থাকে, নতুন বসন্তের, নতুন পুষ্পের!! এবং ...

অবশেষে আল্লাহর রহমতের দরিয়ায় যেন মউজ এলো। বান্দার ব্যাকুল মিনতি যেন তিনি কবুল করলেন। নতুন সাজে, নতুন সজ্জায়, নতুন চেতনায়, নতুন প্রাণমহিমায় পুষ্প আবার প্রস্ফুটিত হলো। আরাকানসংখ্যা আসলে সময়ের অনেক বড় একটি প্রয়োজন ছিলো। পুষ্প তা সর্বোত্তমরূপে পূর্ণ করেছে। প্রতিটি শব্দ যেন মুসলিমহৃদয়ের একটি করে স্পন্দন! প্রতিটি বাক্য যেন মযলূমানের একটি করে দীর্ঘশ্বাস!! প্রচ্ছদের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যেন  খুন-আগুনের দরিয়া এবং তুফানের উত্তাল বিক্ষোভ!! আল্লাহ যেন করেন, বাতিলের দুর্গ যেন কেঁপে ওঠে, ভেঙ্গে পড়ে!! মিথ্যা যেন চিরতরে পরাজিত হয়, সত্য যেন চিরকালের জন্য জয়ী হয়!! আমীন!!

পুষ্পের সম্পাদক, আমি তাকে কখনো দেখিনি, হয়ত কখনো তার দেখা পাবো না!! তবু এই দুর্বল হৃদয়ে তাঁর প্রতি যে ভালোবাসা আল্লাহ দান করেছেন তা চিরকাল আমি লালন করে যাবো। আমাদের চলার পথে তিনি যে আলোর মশাল ধরেছেন সে আলোতেই পথ চলার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ!!

মুজাহিদুল ইসলাম, মাদরাসাতুল উলূমিল ইসলামিয়া, ডেমরা, ঢাকা

 

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা