রজব ১৪৩৯ হিঃ (৩/৩)

তোমাদের পাতা

তোমাদের লেখা পেয়েছি

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

০ মুহাম্মদ ... মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা

০০ তোমার লেখা পেয়েছি। ভালো লিখেছো। বানানও মোটামুটি ত্রুটিমুক্ত। শুধু একটা জিনিস ত্রুটিমুক্ত ছিলো না। তুমি লিখেছো, ‘আমি চাই, আমার লেখা সবদিক থেকে ত্রুটি মুক্ত হোক।’ তুমি আলাদা লিখেছো, একসঙ্গে লিখতে হবে। আর শোনো, মানুষের লেখা সবদিক থেকে ত্রুটিমুক্ত হবে, এটা কামনা করা যায়, বাস্তবে না হওয়ারই কথা। তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

০ আব্দুল্লাহ/ মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা

০০ তোমার হাতের লেখা তো বেশ সুন্দর! এখন কম্পিউটারের যুগে সুন্দর হাতের লেখা বড় একটা দেখা যায় না। লেখার জন্য তুমি এমন কঠিন বিষয় কেন নিয়েছো? কঠিন বিষয় নিয়ে লিখবে লেখা শেখার পর, এবং ঐ বিষয়ে পর্যাপ্ত অধ্যয়নের পর। এখন শুধু তোমার চারপাশের হালকা বিষয়গুলো নিয়ে লেখো। তোমার চারপাশেই দেখবে, লেখার বিচিত্র সব উপাদান ছড়িয়ে আছে। তুমি লিখেছো, ‘সারা পৃথিবীতে মুসলমানদের রক্ত নিয়ে এখন চলছে হোলিখেলা। আমরা সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই, এবার রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়। ...’ তুমি দেখি বেশ গরম মানুষ আছো! এখন নিজের বা অন্যের রক্তপাতের চিন্তা বাদ দাও। নিজের রক্ত নিজের বুকে ধরে রাখো, আর কলমের কালি দিয়ে কিছু লিখতে চেষ্টা করো। যেটাকে লোকেরা বলে, কলমের জেহাদ, সেটা শিখতে চেষ্টা করো, আর যদ্দুর পারো, মুসলিম-অমুসলিম সমস্ত মানুষের খিদমতে নিজেকে নিয়োজিত করো। বড়ো হও, উপযুক্ত হও। তারপর না হয় দেখা যাবে।

০ ফারিয়া সুলতানা/টাঙ্গাইল

০০ তোমার লেখা নিয়মিত পাচ্ছি। লেখার ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে দেখে ভালো লাগছে। তুমি চেষ্টা করে যাও নিজের জন্য নয়, তোমার সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য।

 

হাফীয, নেত্রকোনা

০০ তোমার একটি দিনের রোযনামচা পেয়েছি। তোমাদের এক সহপাঠীর অভিভাবকের মৃত্যুতে মাদরাসায় খতমে কোরআন ও দু‘আর মজলিস হয়েছে; সেই বিবরণ তুমি লিখেছো। সুন্দর হয়েছে। যদি নিয়মিত রোযনামচা লেখো, আর গভীর চিন্তার সঙ্গে পুষ্পের অধ্যয়ন অব্যাহত রাখতে পারো, ইনশাআল্লাহ তোমার লেখার অভাবনীয় উন্নতি হতে পারে।

তুমি লিখেছো

‘হে পুষ্পের প্রিয় বন্ধু, তুমি হয়ত  তোমার মায়ের আহাজারি শুনেছো, কিন্তু কখনো কি শুনতে চেয়েছো ঐ মায়ের আহাজারি...!’

দেখো ভাই, তুমি মাত্র দ্বিতীয় বর্ষের তালিবে ইলম! পুষ্পের অনেক পাঠক, বয়সে তোমার চারগুণ, এবং ইলমে...! তোমার জন্য কি সাজে ‘তুমি সম্বোধন!!

তুমি লিখতে পারতে, ‘আামি হয়ত শুনেছি আমার মায়ের আহাজারি, কিন্তু কখনো কি শুনতে চেয়েছি ঐ মায়ের...! এ দুর্বলতাটা পুষ্পের শুরু থেকেই দেখতে পাচ্ছি। সম্ভবত পুষ্পের সম্পাদককে অনুসরণ করার চেষ্টা, কিন্তু বয়সের পার্থক্যটা?!

ইবনে মুজীব/নেত্রকোনা কয়রাটি

০০ তুমি ১৪.৩.১৪৩৯ হি.-এর রোযনামচায় লিখেছো, ‘আজ মাদরাসায় বিরতি। সবাই মায়ের কাছে গিয়েছে। আমার তো মা নেই!

০০ তোমার মা নেই, তাহলে কার গর্ভে তুমি দুনিয়াতে এসেছো? তোমার মা অবশ্যই আছেন, সবারই মা আছেন। কিন্তু কারো মা সবসময় চোখের সামনে থাকেন না। কখনো এই পরিমাণ দূরে থাকেন যে তার দেখা পাওয়ার জন্য, একদিন অপেক্ষা করতে হয়। কখনো এত দূরে থাকেন যে, তার দেখা পাওয়ার জন্য তিনদিন বা আরো বেশী ইনতিযার করতে হয়। তখন কি আমরা বলি, ‘আমাদের মা নেই?!’

একজন তালিবে ইলম যখন মাদরাসায় থাকে তখন কি তার মা আছেন? আছেন, বাড়িতে। সে যদি মাকে দেখতে চায়, কতটা সময় পরে দেখতে পাবে? বিরতির একটা মাস তো অপেক্ষা করতেই হয়। এমনকি এখনই রওয়ানা হলে পাঁচঘণ্টা, দশঘণ্টা পরে হয়ত দেখা হবে। তো তোমারও মা আছেন, মাটির উপরে নয়, নীচে, কবরে। তার সঙ্গে দেখা হতে পারে তোমার একদিন পরে, একবছর পরে, দশবছর পরে, পঞ্চাশবছর পরে। এ সময়টা তোমাকে ইনতিযার করতে হবে।

তবে দূর থেকে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়, চিঠি লিখে, ফোন করে; তুমিও পারো তোমার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। যোগাযোগের মাধ্যম হলো ‘রাব্বিরহামহুমা কামা রাব্বায়ানী ছাগীরা!’ তুমি এ দু‘আ করবে, আর তোমার মায়ের কাছে ছাওয়াব পৌঁছে যাবে যে, আমার ছেলে আমাকে স্মরণ করেছে!

 

এবার নিজের কথা বলি, আমার বাবা ইন্তেকাল করেছেন, একযুগের বেশী হলো। কিন্তু একবারের জন্যও মনে হয়নি, তিনি নেই। তিনি আগে ছিলেন দুনিয়াতে, এখন আছেন কবরে। আল্লাহ যখন ইচ্ছে করেন স্বপ্নে তাঁর দেখা পাই। আর আমলের ছাওয়াব পৌঁছানোর মাধ্যমে তো সবসময় যোগাযোগ করতে পারি।

০ তুমি লিখেছো, ‘আমি আমার বোনের কাছে গেলাম। আমি আমার বোনের মাঝেই মায়ের ছবি দেখতে পাই। তিনি আমাকে মায়ের ¯েœহ-মমতা দিয়েই লালনপালন করেছেন।

০০ তোমার লেখা যথেষ্ট সুন্দর। তুমি আরাকানের মুহাজিরীনের খেদমতের নিয়তে মজদুরি করেছো এবং শ্রমের বিনিময়ে অর্থ সংগ্রহ করেছো, আশা করি, আল্লাহর কাছে এর অনেক মর্যাদা হবে।

নো‘মান আহমদ/মেরাজুল উলূম, বৌয়াকুড়, নরসিন্দী

০০ তোমার ১৬/১২/১৭ তারিখের রোযনামচা পেয়েছি। সারামাসে কি তুমি একটিমাত্র রোযনামচা লিখেছো? তাহলে হয়েছে লেখা শেখা! আর যদি সারা মাস লিখে থাকো তাহলে কয়েকদিনের রোযনামচা পাঠালে সেখান থেকে একটিকে বাছাই করা আমাদের জন্য সহজ হয়। তোমার বানানভুল যথেষ্ট, যেমন ‘দাড়ালাম, কাজে লেগে পরলাম, মাটি ক্ষুড়তে’। বানানের বিষয়ে যতœবান হও।

তোমার এ বাক্যটি বড় সুন্দর হয়েছে, ‘আমার মা, তাঁকে আমি ভালোবাসি হৃদয়ের এমন তলদেশ থেকে যেখান থেকে অন্যকাউকে ভালোবাসা যায় না। আমার মা, আমার হৃদয়ের স্পন্দন, আমার আত্মার প্রশান্তি।’

মুশফিকুল ইসলাম, মাদরাসাতুল মাদীনাহ,

০০ জীবন সম্পর্কে তোমার সুন্দর লেখাটি পেয়েছি। ভালো লেগেছে, তবে বানানে আরো সতর্ক হতে হবে, ‘তুমি লিখেছো কীভাবে জীবনের মহামূল্যবান সময়গুলোর অপচয় হয়েছে, এখন তা হারে হারে টের পাচ্ছি’।

আমিও ‘হাড়ে হাড়ে’ টের পাচ্ছি, আমার ছেলেরা বাংলাভাষার প্রতি এবং লেখা শেখার প্রতি কতটা উদাসীন!

আহমদ মানছূর, উশা

০০ তোমার লেখাটি সুসংক্ষিপ্ত, সুন্দর এবং হৃদয়বিদারক। আগামী কোন সংখ্যায় হয়ত ছাপা হবে।

কিন্তু একটা প্রশ্নের উত্তর দাও। সন্ধ্যায় পাখীটা নীড়ের উদ্দেশ্যে উড়ে যাচ্ছিলো, অন্ধকার আরো গাঢ় হওয়ার কারণে পাখীটা ভাবছে, এখন কীভাবে ফিরে যাবে। হঠাৎ পাখীটা ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে মাটিতে পড়ে গেলো কীভাবে? বেশীর চেয়ে বেশী পাখীটা নেমে আসতে পারে!!

আমীনুল ইসলাম

০০ তোমার ২৪-৪-৩৯ হি. রোযনামচা পেয়েছি। তোমার লেখা এবং লেখার কাগজ দেখে তোমাকে লেখার প্রতি যতœবান মনে হয়নি। এটা দুঃখজনক। আশা করি, তুমি ...।

জোবায়র বিন আবেদীন

০০ তোমার লেখা পেয়েছি। তুমি যদি ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে দেখা করো তাহলে তোমার জন্য আমার কিছু পরামর্শ আছে!

মাহদী হাসান মারূফ, মিরপুর-১৩ ঢাকা-১২১৬

০০ তোমার লেখা পেয়েছি। তুমি শীত মৌসুম সম্পর্কে লিখেছো ‘একদিকে শীত হচ্ছে অনেকের কাছে আনন্দ-উৎসব এবং মেলা ও অনুষ্ঠান আয়োজনের মৌসুম। পিঠা-উৎসবের মৌসুম। অন্যদিকে বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য শীত হচ্ছে মহাদুর্ভোগের নাম। একখ- শীতবস্ত্রের অভাবে তার রাত কাটে নির্ঘুম অবস্থায়। যাদের রয়েছে তাপ ও উষ্ণতা লাভের সবরকম আয়োজন তাদের শীত অবশ্যই আনন্দের এবং উৎসবের, তবে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে ঐ সব অসহায় মানুষের কথাও একটু ভাবা, শীতের কারণে যাদের জীবন হয়ে পড়ে দুর্বিষহ।’

আবু বরক, টাঙ্গাইল

০০ তোমার রোযনামচা পেয়েছি। মোট সাতদিনের রোযনামচা পাঠিয়েছো।

২৪-১০-৩৮ এ তুমি সবুজ প্রকৃতির প্রতি তোমার ভালোবাসা প্রকাশ করেছো এভাবে যে জানালার পাশে বসে মুতালা‘আ করি সেখান থেকে দেখা যায় সবুজের প্রসারিত মাঠ, বিস্তৃত সবুজের অপূর্ব সমারোহ ... শৈশব থেকেই সবুজ আমার ভালো লাগে। .... চারদিকে চোখ ধাঁধানো সবুজের প্রাচুর্য ....

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোটামুটি ভালোই হয়েছে; শুধু ছন্দপতন ঘটেছে একটা শব্দচয়নের ক্ষেত্রে এবং তা বেশ গুরুতর! তোমাকে মনে রাখতে হবে, সবুজ কখনো চোখ ধাঁধায় না; বরং সবুজ আমাদের দৃষ্টিকে ¯িœগ্ধ করে।

১০-১-৩৯ হি. এ তুমি লিখেছো, ‘অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে আজ পালিত হলো মুহররমের প্রথম রোযা... কারো মৃত্যুর শোকের মজলিসে ঈদের সাজপোশাকে উপস্থিত হওয়া যেমন, মুহররমের রোযার ক্ষেত্রে ‘উৎসবমুখর পরিবেশ’ লেখাটা আসলে প্রায় তেমন। তুমি ঈদের দিনের উপযোগী শব্দ ব্যবহার করেছো ভাবগম্ভীর সাধনার দিন সম্পর্কে! বানান ভুল আছে যথেষ্ট। আশা করি, তোমার জানা আছে, স্বতন্ত্র ও স্বাতন্ত্র্য, লিখতে হবে স+ব সংযুক্ত, কিন্তু বেখেয়ালি, তুমি লিখেছো শুধু ‘স’!

তুমি লিখেছো, ‘জীবনতরী গভীর জলধীর ঘূর্ণাবর্তে এসে নিপতিত হয়েছিলো’। তোমার হাতের কাছে কি লোগাত আছে, ‘জলধী’-এর বানান দেখোনি কেন? নিজেকে ফিরে পাওয়ার ‘আকাংখায়’। পুষ্পের মত সাহিত্যসেবী পত্রিকার নামে প্রেরিত অল্প আয়তনের একটা লেখা, তাতে যদি হয় বানানের এরূপ দুরবস্থা, বোঝা যায়, উদাসীনতা ও অবহেলা আসলে কতটা সর্বব্যাপী।

‘তখন খুঁজতে থাকে তার হারিয়ে যাওয়া ‘সত্ত্বা’কে’।

লেখার সময় দেখোনি, এখন অন্তত লোগাত খুলে দেখে নাও সত্তা শব্দের বানান!

মু‘আয আশরাফ/

০০ তোমার দীর্ঘ লেখাটি পেয়েছি। বানানত্রুটি থেকে মোটামুটি মুক্ত। লেখার ‘আন্দায’ও ভালো। আবেগ আছে, গতি আছে এবং ...।

তুমি লিখেছো, ‘অত্যন্ত লজ্জা ও পরিতাপের বিষয়, রোহিঙ্গা শব্দটিকে মানুষ এখন যেন গালি বানিয়ে নিয়েছে, কিংবা পরিহাসের শব্দ। একজন আরেকজনকে গালি দিয়ে বা ঠাট্টাচ্ছলে বলে, ‘রোহিঙ্গা’, এমনকি আমাদের মাদরাসায়ও...!

প্রিয় মু‘আয, সত্যি দুঃখজনক। তুমি আহ্বান জানিয়েছো, আমাদের মধ্যে যেন চিন্তা ও চেতনা জাগ্রত হয়। তুমি লিখেছো, ‘আমরা হয়ত চিন্তাও করি না, এভাবে কোথায় কোথায় আঘাত হানা হচ্ছে! ... হায়, আমি যদি আমার হৃদয়ের আকুতি কোনভাবে তুলে ধরতে পারতাম আমার ভাইদের কাছে! ... আমাদের মধ্যে যদি সঠিক ঈমানী চেতনা জাগ্রত হতো তাহলে ‘রোহিঙ্গা’ আমাদের মুখে উচ্চারিত হতো গালিরূপে নয়, ঠাট্ট বা পরিহাস-রূপে নয়, এমনকি করুণারূপেও নয়, বরং ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রকাশরূপে।...

তুরস্কের স্বনামধন্য প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান তার দেশের মানুষকে ঠিক এ চেতনাই ধারণ করতে বলেছেন পঁয়ত্রিশ লাখ সিরীয় মুহাজিরীন সম্পর্কে। তিনি বলেছেন, আপনারা আমাদের ভাই। আমরা আনছার, আপনারা মুহাজিরীন। যারা আপনাদের সম্পর্কে ... বলে তারা আসলে জানে না। ‘আনছার-মুহাজিরীন’ কী অর্থ বহন করে।...

পুষ্পের বন্ধুদের প্রতি আমার আকুল আবেদন, আসুন, আমরা আমাদের অন্তরে সুদৃঢ় ঈমানী চেতনা জাগ্রত করার সাধনায় আত্মনিয়োগ করি।

প্রিয় মু‘আয, তোমাকে ধন্যবাদ! আমি তোমার পুরো বক্তব্যের সঙ্গে একাত্ম। আশা করি, তুমি নিয়মিত লিখবে। তোমার সামনের পথ মসৃণ হোক।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা