‘আমাদের মহাবিশ্ব আসলে বিরাট এক জটিল গ্রন্থ, যা আমাদের চোখের সামনেই উন্মুক্ত। তবে এটা বুঝতে হলে জানতে হবে এর ভাষা। এটি লেখা হয়েছে গণিতের ভাষায়। মহাবিশ্ব আসলে জটিলতম এক গণিত ছাড়া আর কিছু নয়। এর বর্ণমালা হলো গণিতের সংখ্যা ও মাপজোখ।
গ্যালিলিও গ্যালিলি
০০ বড় সত্য কথা! তবে তার চেয়ে বড় সত্য হলো, এ মহাগ্রন্থের রয়েছেন একজন সর্বজ্ঞানী ‘গ্রন্থকার’, যিনি ঘোষণা দিয়েছেন, ‘দয়াময়ের সৃষ্টিতে দেখবে না তুমি কোন খুঁত’! ভাগ্যবান ঐ সকল জ্ঞানী যারা গ্রন্থ থেকে গ্রন্থকারের পরিচয় অর্জন করতে পারে
একটি কাঁচের পেয়ালা টেবিল থেকে মেঝেতে পড়ে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। টুকরোগুলো নিজে থেকে আর জোড়া লাগে না।
কেন? বাধাটা কিসের?
০০ আশ্চর্য, যে পদার্থবিজ্ঞানী এ প্রশ্নটা করেছেন তিনি বিশ্বাস করেন, এ মহাবিশ্ব নিজে নিজেই সৃষ্টি হয়েছে! মহাবিশ্বের এই মহাসম্প্রসারণ নিজে নিজেই হচ্ছে!
মনে পড়ে, নাস্তিক বিজ্ঞানী ডকিন্স বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী হকিন্সকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি মনে করেন, স্রষ্টা বলে কেউ সত্যি আছেন?
তিনি প্রশ্নটির উত্তর দেয়ার প্রয়োজন বোধ করলেন না; শুধু পাল্টা প্রশ্ন করলেন, এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির পিছনে কোন স্রষ্টা যদি থাকেন, আপনার সমস্যা কোথায়?
০০ তাই তো! সমস্যা কোথায়? বরং বহু সুবিধে! অনেক প্রশ্নের সহজ সমাধান হয়ে যায়! সবচে বড় কথা, মহাবিশ্বে মানুষ তার সবচে’ বড় ‘বন্ধু’কে খুঁজে পায়!!
কবি বলেছেন, ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সবশিশুরই অন্তরে’। কোন সম্ভাবনাকেই খাটো করে দেখা ঠিক নয়। কেউ জানে না, আজকের কোন্ শিশুটির মধ্যে ঘুমিয়ে আছে আগামী দিনের কোন্ সে বিপুল সম্ভাবনা।
হয়ত ভিখারিণী মায়ের কোলের শিশুটিই হবে আগামী দিনের ইবনে সিনা, ইবনে নাফিস, আলফারাবী ...। হয়ত আগামী দিনের বিজ্ঞানের রাজ্য তারই হাত ধরে ফিরে আসবে মুসলিম উম্মাহর অধিকারে! অসম্ভব কী!!
মানুষের বিজ্ঞানসাধনাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। মহাবিশ্বের রহস্যের সন্ধানে বিজ্ঞানের এই যে নিরন্তর অগ্রযাত্রা, এটা তখনই সার্থক হবে, বিজ্ঞান যখন সূত্রকে অতিক্রম করে সূত্র-¯্রষ্টার সন্ধান পাবে এবং মানুষকে নিয়ে যাবে পরম সত্যের সান্নিধ্যে।
হে মানুষ, তোমার বুদ্ধিমত্তা, তোমার মস্তিষ্ক কারো না কারো উপহার! তুমি কেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও কৃত্রিম মস্তিষ্কের পিছনে ছুটছো?! তাঁকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা কেন করো না, যিনি তোমাকে দান করেছেন এ বিস্ময়কর বুদ্ধি ও মস্তিষ্ক?!
ডায়াবেটিস রোগের পরিচয় কী? আমরা যে খাবার গ্রহণ করি তার মধ্যে ফ্যাট, শর্করা ইত্যাদি উপাদান থাকে। পরিপাকতন্ত্রে এগুলোর রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য আমাদের শরীরের বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে বিভিন্ন হরমোন নিঃসৃত হয়।
একটি গ্রন্থি হলো অগ্নাশয়, যা পাকস্থলীর পাশেই থাকে। তা থেকে যে রস নিঃসৃত হয় তার নাম ইনসুলিন। রক্তে যখন গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় তখন ইনসুলিন সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। যখন ইনসুলিনের ঘাটতি দেখা দেয় তখন গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়, যার নাম ডায়াবেটিস। তখন বাইরে থেকে ‘ তৈরী’ ইনসুলিন ‘পুশ’ করতে হয়।
ইনসুলিন আবিষ্কার করেছেন বেন্টিন ও বেস্ট নামের দু’জন বিজ্ঞানী ১৯২২ সালে।
পশু-পাখী ও প্রাণীজগত কি অঙ্ক ও গণিতের সঙ্গে পরিচিত? বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন। প্রায় সবক’টি গবেষণার সিদ্ধান্ত এই যে, পশু-পাখী ও প্রাণীদের মধ্যে মানুষের মত অঙ্ক ও গণিতের জ্ঞান না থাকলেও মৌলিক জ্ঞান অবশ্যই রয়েছে।
মৌমাছির সংখ্যাজ্ঞান, দূরত্ববোধ ও জ্যামিতিক প্রজ্ঞা দেখে বিজ্ঞানীরা রীতিমত অবাক!
০০ বিজ্ঞানীরা অবাক হতেই পারেন। তবে وأوحى ربك إلى النحل এই আয়াতের সন্ধান যারা জানে তাদের অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ যিনি মানুষকে যাবতীয় জ্ঞান দান করেছেন তিনিই তাঁর ক্ষুদ্র এক সৃষ্টি মৌমাছিকে এই সামান্য জ্ঞান দান করেছেন। হে আল্লাহ, তাওফীক দাও, যেন তোমার মহাজ্ঞান ও মহাপ্রজ্ঞার সামনে অবনত হতে পারি।