রবিউছ ছানী ১৪৪৫ হিঃ

বিজ্ঞান বিচিত্রা

আগ্নেয়গিরি আল্লাহ্র কুদরত!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

পৃথিবীতে আল্লাহ্র আযাব-গযব ও কুদরতের যতগুলো ভয়ঙ্কর নিদর্শন রয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটা হলো আগ্নেয়গিরি। আমরা আজ আল্লাহ্র কুদরত আগ্নেয়গিরি সম্পর্কে জানবো এবং আল্লাহ্র আযাব-গযব থেকে পানাহ চাইবো। কারণ আল্লাহ্ ছাড়া আল্লাহ্র আযাব-গযব থেকে কেউ পানাহ দিতে পারে না।আগ্নেয়গিরি আসলে কী? তার আগে আমাদের জানতে হবে পৃথিবী নামক এই গ্রহের ভিতরে কী আছে! ভিতরে যেমন প্রচুর পানি আছে তেমনি আছে এমন ভয়ঙ্কর আগুন যার তাপে পাথর পর্যন্ত গলে যায়। এখান থেকেই আমরা বুঝতে পারি পাথর কীভাবে হবে জাহান্নামের জ¦ালানী ও ইন্ধন!আরেকটি বিষয় জানতে হবে, ভ‚ত্বকের শিলাস্তর সবখানে একই ধরণের কঠিন বা গভীর নয়। আবার ভ‚গর্ভে উর্ধ্বমুখী চাপ সবসময় একই রকম থাকে না, বিভিন্ন অজ্ঞাত কারণে চাপটা কখনো থাকে হালকা, কখনো প্রবল। তো ভ‚গর্ভের চাপ যখন প্রবল হয় তখন শীলাস্তরের দুর্বল অংশে যে ফাটল তৈরী হয়, বা আগে থেকেই ফাটল তৈরী থাকে, সেই ফাটল দিয়ে ভিতরের গলিত পাথর, ছাই ও লাভা প্রবল বেগে উপরের দিকে বের হয়ে আসে, সেই স্থানটিকেই বলে আগ্নেয়গিরি। আর যে ফাটল দিয়ে এগুলো উৎক্ষিপ্ত হয় সেটাকে বলে আগ্নেয়গিরির জ¦ালামুখ। সাধারণত পাহাড়ের চ‚ড়ায় বিদ্যমান ফাটল দিয়েই লাভা উৎক্ষিপ্ত হয়। ঐ পাহাড়কেই বলা হয় আগ্নেয়গিরি। আগ্নেয়গিরির মুখ দিয়ে লাভা বের হওয়াকে বলে অগ্ন্যুৎপাত।এমনো হয় যে, ফাটল দিয়ে লাভা বের হয়ে চারপাশে জমতে থাকে এবং একসময় পাহাড়ের রূপ ধারণ করে।ভূগর্ভের যত নীচে যাবে তাপমাত্রা তত বাড়তে থাকবে। এমনকি ঐ তাপমাত্রায় পাথর পর্যন্ত গলে তরল আকার ধারণ করে। তবে পৃথিবীর উপরের দিকের কঠিন শিলাস্তরের কারণে ঐ গলিত পদার্থ প্রচÐ ঊর্ধ্বচাপ সত্তে¡ও বের হয়ে আসতে পারে না। যখন কোন ফাটল বা ছিদ্রপথ পায় তখনই শুধু ঐ আগুনে গলিত পদার্থ তীব্র বেগে বের হয়ে আসে এবং ঐ স্থানটি আগ্নেয়গিরি রূপে পরিচিত হয়।অগ্ন্যুৎপাতের দিক বিবেচনা করেআগ্নেয়গিরিগুলো তিনভাগে ভাগ করা হয়।জাগ্রত বা জীবন্ত আগ্নেয়গিরি। যে সমস্ত আগ্নেয়গিরি থেকে মাঝে মধ্যেই ধোঁয়া, লাভা ও গরম ছাই বের হয় সেগুলোকে জাগ্রত বা জীবন্ত আগ্নেয়গিরি বলে।সুপ্ত বা ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি। যা থেকে অতীতে অগ্নুৎপাত হয়েছিলো, কিন্তু এখন তা সক্রিয় অবস্থায় নেই, তবে যে কোন সময় তা জেগে উঠতে পারে তাকে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি বলে। জাপানের ফুজি পর্বত হলো তেমনি একটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরি। লুপ্ত বা মৃত আগ্নেয়গিরি। যে সমস্ত আগ্নেয়গিরি থেকে কোন একসময় অগ্নুৎপাত হয়েছে, কিন্তু এখন আর তা থেকে অগ্নুৎপাতের কোন সম্ভাবনা নেই সেগুলোকে বলে লুপ্ত বা মৃত আগ্নেয়গিরি। উদাহরণ হিসাবে এখানে ইরানের কোহি সুলতান আগ্নেয়গিরির কথা বলা যায়।পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ষাটটি আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাত ঘটে।***আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে বের হয়ে আসা গলিত লাভার ¯্রােতে মানুষসহ বড় বড় জনপদ তলিয়ে যায়। ১৮৭৯ সালে ইতালির ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি থেকে লাভার ¯্রােত নির্গত হয়ে হারকিউলে নিয়াম ও পাম্পেই শহরদু’টো উত্তপ্ত লাভার ¯্রােতে তলিয়ে গিয়েছিলো। খননের মাধ্যমে পরে শহরটি উদ্ধার করা হয়।কথিত আছে, পাম্পেই শহর তখন পাপাচারের পূর্ণ শহর ছিলো। শহরবাসীর পাপাচারের ফলরূপেই আল্লাহ্ ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে আযাব নাযিল করেছিলেন। চোখের পলকে শহরটি। সময়টা ছিলো খৃস্টপূর্ব ৭৯ সালের ২৭ শে আগস্ট দুপুর বেলা। পুরো দুইদিন লাভা উদ্গীরণ অব্যাহত ছিলো। পাম্পেই শহর ডুবে গিয়েছিলো ৬০ ফুট গলিত লাভার নীচে। আমরা যেন সতর্ক হই এবং সমস্ত আসমানি-যমীনি আযাব গযব থেকে আল্লাহ্  যেন আমাদের....

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা