দশবছরের শিশু সোলায়মান গুণে গুণে দশটা পাথর ছুঁড়ে মারলো আকছার চত্বরে রাইফেল তাক করে দঁড়িয়ে থাকা ইসরাইলী সেনাদের লক্ষ্য করে। তিনটা পাথর আঘাত করলো তিনজন সেনাকে। সাধারণত পাথরের জবাব ওরা রাইফেলের তাজা গুলি দ্বারাই দিয়ে থাকে। ক্যামেরাহাতে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেলে সংযম প্রদর্শন করে। এতটুকু শিশু বন্দুকের নলকে ভয় পেলো না! কেমন অবলীলায় একের পর এক পাথরগুলো ছুঁড়ে মারলো! হাতের নিশানাও মন্দ না! কৌতূহল হলো। শিশুটির দিকে এগিয়ে গেলাম। কী নাম তোমার? সোলায়মান বিন মুছ‘আব।
ওরা তো তোমার ক্ষতি করেনি। দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ। কেন ওদের পাথর ছুঁড়ে মারছো? ছেলেটির চোখ ছলছল করে উঠলো। তুমি বলছো, চুপচাপ! ওরা আমার বাবাকে, ভাইকে গুলি করে মারেনি? তোমরা কীভাবে জানবে, ওরা কত নিষ্ঠুর!
ঃ তোমার প্রাণের মায়া নেই! যদি গুলি করতো!
ঃ করলে শহীদ হতাম! জান্নাতে যেতাম, আমার রক্তের মূল্যে আলআকছা যদি আযাদ হয়, এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে বলো!
আমার মনে হলো, বয়সের চেয়ে অনেক বড় একজন পরিপক্ব মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলছি, যার রয়েছে জীবনের প্রতি, মৃত্যুর প্রতি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি।
সোলায়মান উঠে চলে গেলো। হয়ত আবার পাথর কুড়াবে। আবার পাথর ছুঁড়বে।
আমার মনে হলো ওর ছোট্ট বুকটা প্রতীক্ষায় আছে একটা তাজা বুলেটের!
এমন নির্ভয় যে জাতির শিশুরা তাদের সঙ্গে কীভাবে পারবে রাইফেলধারী ভীরুর দল!! আজ হোক কাল হোক পরাজয় তাদের অনিবার্য!!
হঠাৎ দেখি আমারও চোখদু’টো ছলছল করে উঠেছে। - আলজাযীরা, সাংবাদিক