আজকের সন্ধ্যাটা বড় সুন্দর। আকাশে চাঁদ আছে। খোলা জানালা দিয়ে আলো আসছে, বড় স্ণিগ্ধ আলো, আর আসছে হাসনাহেনার সুবাস মাখা কোমল বাতাস। ...
(সম্পাদক- তুমি লিখেছো, ‘কোমল বাতাস ঢুকছে’ দেখো, একটা ‘ঢ’ কিন্তু সব কোমলতা শেষ করে দিয়েছে।)
অন্ধকার রাতে যখন আকাশভরা তারা থাকে তখনো বড় সুন্দর দৃশ্য হয়।
গতকাল সন্ধ্যায় সেই তারাভরা আকাশটাই যেন দেখতে পেলাম এই মাটির পৃথিবীতে। খালের একদিকে যে ঝোপঝাড় সেখানে অসংখ্য জোনাকি উড়ছে; জ্বলছে, আর নিভছে। কী অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য! আকাশে বসে তারাদের স্থির মেলা, আর পৃথিবীতে যেন বসেছে উড়ন্ত তারাদের মেলা। বুঝতেও পারিনি কখন পথচলা থেমে গেছে। দাঁড়িয়ে তন্ময় হয়ে জোনাকিদের দেখছি। সবুজ আলোর কণাগুলো ছোটাছুটি করছে। নিজের অজান্তেই মন আমার চলে যায় দূর শৈশবে। আমাদের গ্রামের ঠিক মধ্যখানে যে বড় পুকুরটা তার পাশে পুরোনো মসজিদ। তার পাশে বাঁশবাগান। ঝিরঝির বাতাসে বাঁশঝাড়ের পাতায় যে অপূর্ব সুরসঙ্গীত তৈরী হতো তা আমার মনকে কেমন যেন উতালা করে তুলতো!
সন্ধ্যার কিছু পরে অন্ধকার যখন আরো ঘন হয়ে এসেছে তখন দূর আকাশে দেখতাম তারাদের মেলা, আর এখানে খুব কাছে বাঁশবাগানে, পাশের ঝোপঝাড়ে দেখতে পেতাম জোনাকিদের খেলা। তখন মনের ভিতরে বাজতো কবিতার ছন্দ-
‘যখন হিরে মানিক জ্বলে/ তখন থমকে দাঁড়ায় শীতের হাওয়া/ চমকে গিয়ে বলে/ খুশি খুশি মুখটি নিয়ে/ তোমরা এলে কারা?!/ তোমরা কি ভাই নীল আকাশের তারা?!
আলোর পাখী/ নাম জোনাকি/ জাগি রাতের বেলা/ নিজেকে জ্বেলে এই আমাদের ভালোবাসার খেলা।