বছর দুয়েক ধরে শুনে আসছি একটা শব্দ ‘ডিজিটাল’। যারা বোঝে তারা তো বলেই, যারা বোঝে না তারা যেন আরো বেশী বলে। ডিজিটাল-এর তোড়ে আমাদের যে এখন টাল সামলানোই মুশকিল!
বলা হচ্ছে, ‘আগামী এত বছরের মধ্যে বাংলাদেশটা আর এমন থাকবে না। সবকিছুতে আসবে আমূল পরিবর্তন। দেশটা তখন হয়ে যাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। দেশটা যখন আমূল পাল্টে যাবে তখন দেশের মানুষগুলোও পাল্টে যাবে নিশ্চয়? আমার বড্ড জানতে ইচ্ছে করে, মানুষগুলোর আকার আকৃতি তখন কেমন হবে? তারা কী খাবে, কীভাবে হাঁটবে, কোন ভাষায় কথা বলবে? ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাঙ্গালী এবং ডিজিটাল ল্যঙ্গুয়েজ! নাহ, ভাবতেই কেমন জানি রোমাঞ্চ লাগে! দুঃখ এই যে, দৃশ্যটা উপভোগ করার জন্য তখন হয়ত আমরা থাকবো না।
আচ্ছা, আমূল পরিবর্তন মানেটা কী? তখন কি আকাশ নেমে আসবে সাগরে, আর সাগর উঠে যাবে আকাশে? ডিজটাল মাছেরা এবং ডিজিটাল পাখীরা তখন কী করবে? মাছেরা উড়তে শিখবে, আর পাখীরা শিখবে সাঁতার? তখন কি নদীতে গাড়ী চলবে, আর রাস্তায় চলবে নৌকা? তখন কি মানুষ গাড়ী চালাবে বৈঠা দিয়ে, আর নৌকা চলবে চার চাকার উপর? এখন বৃষ্টি হলে রাজধানীর রাস্তায় নৌকা চলার যে ছবি আসে পত্রিকায় সেটা কি তবে ডিজিটাল বাংলাদেশের পূর্বাভাস? তাহলে তো ভারি মজা!
তখন তো শহরগুলো হয়ে যাবে গ্রাম, আর গ্রামগুলো হবে শহর! ঢাকার গ্রামে কি তখন যানজট থাকবে? গ্রামের শহরে বসবে শেয়ারবাজার?
সম্পাদকঃ দেখো ব্রাদার, আমার মনে হয়, ইতিমধ্যেই তোমার মধ্যে ডিজিটাল পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে। চিন্তার নৌকাটা এভাবে আর কিছুদিন ‘বাইয়া’ যাও, আশা করা যায়, তুমি পুরো দস্ত্তর একখান ডিজিটাল মস্তিষ্কের অধিকারী হয়ে যাবে। তোমার লেখায়ও একটা ডিজিটাল বানান পেয়েছি, তুমি ‘আবিস্কার’ লিখেছো দন্ত্যস দিয়ে। আগের যুগে লেখা হতো মূর্ধন্য ষ দিয়ে। তোমাদের পুষ্প কিন্তু এখনো ডিজিটাল যুগে...