সালাম গ্রহণ করো। কিছু দিন থেকে মনের ভিতরে বড় রকমের একটা কষ্ট ও জ্বালা অনুভব করছি। তোমাদের কাছে বললে হয়ত তা কিছুটা হালকা হবে, আর তোমরাও তা থেকে চিন্তার খেরাক পাবে।
একটি ছেলে, বয়সে কচি, চিন্তায় কাঁচা, তবে তার ভিতরে লুকিয়ে আছে কিছু সম্ভাবনা। যাদের ভিতরে সম্ভাবনা থাকে তাদের মুখমন্ডলে সেই সম্ভাবনার উদ্ভাস থাকে। মানুষ গড়া যাদের জীবনের লক্ষ্য তারা যখন কোন মুখমন্ডলে সম্ভাবনার উদ্ভাস দেখতে পান, তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকেন। স্বপ্নের সফলতার আনন্দে তারা যেমন উদ্বেলিত হন, তেমনি স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় তারা ...।
সেই ছেলেটি হঠাৎ একদিন আর আসে না। আসে না তো আসেই না। প্রথমে উৎকণ্ঠিত হলাম, তারপর বিচলিত, তারপর অস্থির। কী হলো ছেলেটির? কোন দুর্ঘটনা? কিংবা জীবনের চলার পথে হোঁচট খাওয়া? ছেলেটির বাবা আমার ফোন ধরেন না, নিজেও খবর দেন না। পরে জানলাম, তিনি তার ব্যবসা নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। হায় রে!
চিঠি দিয়ে একজন শিক্ষক পাঠিয়ে ছেলেটিকে আসতে বললাম। সে এলো। খুব আন্তরিকভাবে, একেবারে বন্ধুর মত জানতে চাইলাম, কী হয়েছে তোমার?
সে বললো, আমি মাদরাসায় পড়বো না। মাদরাসায় যারা পড়ে তাদের কোন মর্যাদা নেই। আমি মাদরাসায় পড়ি বলে ‘ছেলেরা’ আমাকে খেলতে নেয় না, ইত্যাদি।
অন্তরের দরদ ঢেলে আমি তাকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম। অনেক কথা বললাম। কথাগুলো কেউ যদি ধরে রাখতো ভালো হতো। আমি বললাম, এতটুকুতেই তুমি ভেঙ্গে পড়বে?! শুধু এই জন্য নিজের দল ছেড়ে ‘ওদের’ দলে ভিড়ে যাবে?! এভাবে জীবনে কেউ মর্যদা পেয়েছে, না পাওয়া যায়!
যারা ভীরু, দুর্বল, কোথাও তাদের মর্যাদা নেই। কোথায় তোমার সাহস ও আত্মমর্যাদা?! দ্বীনের শিক্ষা অর্জন করছো বলে যারা তোমাকে অবজ্ঞা করছে, তাদের ভয়ে তুমি পালিয়ে যাবে। যারা পালিয়ে যায় তারা কখনো বিজয়ী হতে পারে না। তুমি রুখে দাঁড়াও, সাধনা দিয়ে, সংগ্রাম দিয়ে, যোগ্যতা দিয়ে তাদের অবজ্ঞার জবাব দাও। তোমাকে প্রমাণ করতে হবে, দ্বীন শিক্ষার পথই মর্যাদার পথ।
ছেলেটি প্রতিজ্ঞা করেছে। আমার আকুল প্রর্থানা, আল্লাহ তাকে সাহায্য করুন, আমীন!