জীবনের বিস্তৃতি!
একটি ভাব ও ভাবনা কৈশোরে যেমন হৃদয়কে স্পর্শ করতো, এখনো করে। তবে সময়ের ব্যবধানে ভাবনার প্রকৃতিতে বেশ পার্থক্য এসেছে। আগে ভাবতে ভাবতে চোখ ভিজে উঠতো, এখন শুধু মন যেন কেমন করে! আমার ভাবনাকে যদি শিরোনাম দিতে চাই তাহলে সেটা হবেÑ‘জীবনের বিস্তৃতি’একটি ছোট পরিবার ধীরে ধীরে বিস্তৃত হতে থাকে। কাছের মানুষ চলে যায় দূরে, দূরের মানুষ এসে পড়ে কাছে।এক ঘরে একই ছাদের নীচে ভাইবোনের মিলেমিশে একাকার জীবন, অথচ জীবনেরই ডাকে দু’জনের পথ চলে যায় দু’দিকে! এমনকি দু’টি পথের মধ্যবর্তী দূরত্বও হতে থাকে বিস্তৃত! এভাবে দূরত্ব ও নৈকট্যের পালাবদল চলতে থাকে, চলতেই থাকে, এমনকি একসময় তা চিরদিনের জন্য...!একদিন কুলছুম নামের যে মেয়েটির ‘বাড়ী’ ছিলো দূরের কোন গাঁয়ে, এখন সে এই গাঁয়ের মানুষ, এমনকি তার চিরশয়নও হয়েছে এখানকার কবরস্তানে! আবার এ গাঁয়ের কুসুম চলে গিয়েছে দূরের ঐ গাঁয়ে, এবং...!আত্মীয়তার ক্রমবিস্তারের কথা ভাবতে গিয়ে হঠাৎ মনে হয়, আদমের ঘরে আমরা তো একই ভাইবোন ছিলাম। একটি মাত্র পরিবার ধীরে ধীরে বিস্তৃত হয়ে রূপ নিলো বহু পরিবারে এবং অসংখ্য পরিবারে। একসময় শুধু বিভিন্ন দেশে নয়, আদমের সন্তান ছড়িয়ে পড়লো বিভিন্ন মহাদেশে! তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বর্ণের ভিন্নতা এবং ভাষার বিভিন্নতা! কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে এক পরিবারের বন্ধন এবং ভাইবোনের সম্প্রীতি! তখন তো এক ভাই একভাইকে হত্যা করেছে, এখন একজাতি একজাতিকে ধ্বংস করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে মারণাস্ত্র হাতে!আমাদের ¯্রষ্টা এক, আমাদের আদি পিতা ও মাতা এক, এ চেতনা আবার কি ফিরে আসতে পারে না আমাদের জীবনে! পৃথিবীটা তাহলে কত শান্তির বাসভ‚মি হয়ে যায়!আচ্ছা, এই যে, আমাদের প্রিয় নবী বলেছেন, ‘কাজাসাদিন ওয়াহিদিন’, আমরা পুরো মুসলিম উম্মাহ্ কি হতে পারি না একদেহের মত!...يَـوْمَ يَـفِـرُّ الـمَـرْءُ مِـنْ ... জানি, এটা জীবনেরই সত্য, তবে ইহজীবনের জন্য তো নয়, এ তো পরজীবনের জন্য, ইহজীবনের সত্য তোÑإنَّـما الـمُـؤْمِـنُـونَ إخْـوَةতো দু’টি জীবনের সত্যকেই সামনে রেখে আমরা যেন সুন্দর একটি জীবন গড়ে তুলতে পারি নিজের জন্য এবং উম্মাহ্র জন্য! আমীন।