রবিউছ ছানী ১৪৪৫ হিঃ

তোমাদের লেখা আমাদের রেখা। দুয়ে মিলে হোক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা

এমন সম্বোধন কি ঠিক হলো!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 এমন সম্বোধন কি ঠিক হলো!


পুষ্পের জন্য যখন লিখতে বসি, বিশেষ করে পুষ্পের সম্পাদকের উদ্দেশ্যে তখন অন্তরে একটি মনোরম অনুভ‚তির উদয় ঘটে! মনে হয়, পুষ্পের সম্পাদক আমার মতই সবুজ সতেজ তরুণ, যার সঙ্গে আমার অত্যন্ত নিকট সাদৃশ্য বিদ্যমান। এমনকি মনে হয়, আমি আর তিনি এক ও অভিন্ন। নিজের অজান্তেই তখন এমন ভাব ও ভাবনা এবং এমন শব্দ ও সম্বোধন আসতে থাকে, যেন আমি আমার দীর্ঘ দিনের অন্তরঙ্গ বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছি, যার সঙ্গে আমার চিন্তার যেমন মিল তেমনি চেতনার অভিন্নতা।পরে যখন তন্ময়তা দূর হয় তখন ভাবি, আদীব হুযূরকে এমন সম্বোধন করা কি ঠিক হলো!যার নামের সঙ্গে জান্নাতের দরজার সম্পর্ক রয়েছে!)০০ না, এমন সম্বোধন মোটেই ঠিক হলো না!তবে তোমার লেখাটা এদিক থেকে অত্যন্ত মূল্যবান যে, শুধু পুষ্পের ফুলেরা এবং কলিরাই নয়, আমার নিছক ছাত্ররাও, বিশেষ করে যাদের একটু চোখ ফুটেছে, আমার প্রতি আচরণে ও উচ্চারণে তারা যথেষ্ট বিভ্রান্তির শিকার। এতে আল্লাহ্র ইচ্ছায় আমার কোন ক্ষতি নেই, বরং হয়ত কিছু কল্যাণই রয়েছে! কিন্তু তোমার ও তোমাদের জন্য....!তাই তোমার চিঠিটিকে কেন্দ্র করে অত্যন্ত শুভকামনার সঙ্গে সবার উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে চাই। তোমার লেখা  এবং তার উপর আমার পর্যালোচনা দেখোÑ০০ আমি কামনা করি, তুমি যেন হতে পারো একজন সবুজ সতেজ তরুণ; কিন্তু তোমার জীবন ও কর্ম এখনো কি নিজেকে এমন ভাবার মত হয়েছে!০০ ‘আমি, আর তিনি যেন একই!’ আমিও খুশী হবো, বাস্তবে যদি তা হয়! তবু সঙ্গত হবে যদি লেখো, ‘তিনি, আর আমি...০০ যখন তন্ময়তা দূর হয় তখন শুধু এইটুকু ভেবেই দায়মুক্ত হয়ে যাও! কোন অনুতাপ বা অনুশোচনা কি জাগে না যে, এমন অসঙ্গত চিন্তা কেন এলো আমার...! তারপর প্রকৃতপক্ষে তোমার সঙ্গে তোমার ‘বন্ধুর’ জীবন ও কর্মের মধ্যে যে দুস্তর ব্যবধান সে বিষয়ে একটা দু’টো বাক্য লেখা কি সঙ্গত ছিলো না!দেখো, আল্লাহ্র রহমতে নিজের ক্ষুদ্রতা ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আমার  যথেষ্ট সচেতনতা রয়েছে, তারপরো উপরের কথাগুলো লিখছি তোমার দিক থেকে তোমার তারবিয়াতের জন্য।০০ এবার নতুন প্রসঙ্গ। তুমি নিশ্চয় জানো, হযরত পাহাড়পুরী হুযূর রহ. আমার মুহসিন উস্তায! তো তাঁর সঙ্গে আমার এবং আমার সঙ্গে তোমার পার্থক্য ও ব্যবধান সম্পর্কে তোমার কী ধারণা। বাস্তবের কাছাকাছি একটি ধারণা অর্জনের চেষ্টা করো।কখনো কি আমার কলম তাঁর সম্পর্কে এমনকিছু লেখার সাহস করেছে! তোমার কলমের কসম করে বলো!০০ এবার দেখো, ঠিক তোমার অবস্থান থেকে যদি আমি আদীব হুযূর সম্পর্কে এমন লেখা লিখতাম তাহলে সেটা কেমন হতো!‘পুষ্পের মাননীয় সম্পাদকের উদ্দেশ্যে কিছু লেখার জন্য যখন কলম হাতে নেই তখন ব্যাখ্যা করা কঠিন এমন আশ্চর্য এক অনুভ‚তি আমাকে আন্দোলিত করে। বুঝতে পারি, এভাবনা অসঙ্গত এবং এ অনুভ‚তি অসুন্দর! তবু কথাগুলো লিখতে চাই যাতে তাঁর কাছ থেকে সংশোধনের কিছু আলো পাই।আমার মনে হয়, পুষ্পের সম্পাদকের মতই আমি সবুজ সতেজ এক তরুণ। আমার জীবনে, আমার চিন্তায় চেতনায় যেন তাঁরই জীবনের ¯িœগ্ধ ছায়া এবং তাঁরই চিন্তা-চেতনার  কোমল ছোঁয়া।তখন নিজের হৃদয়ের আবেগ অনুভ‚তি তাঁর সামনে তুলে ধরতে এবং তাঁকে সম্বোধন করতে গিয়ে অবচেতনভাবে কলম যেন সংযম হারিয়ে ফেলে এবং আদবের সীমারেখা ভুলে যায়!যখন তন্ময়তা দূর হয় তখন লজ্জায় অনুশোচনায় ইচ্ছে হয়, মাটির সঙ্গে মিশে যাই। কলমের এমন অসংযম  এবং চিন্তার এমন বিচ্যুতি কীভাবে ঘটতে পারে!হয়ত তাঁর অপার ¯েœহ ও অপরিসীম প্রশ্রয়, যার উদ্দেশ্য হলো শুভ ও শুভ্রতার পথে কলম চালনার জন্য আমাকে উদ্বুদ্ধ করা, বুঝের দৈন্যের কারণে সেটাই হয়ে যায় আমার অসংযম ও বিচ্যুতির কারণ। যাবতীয় অসংযম থেকে কলমকে আল্লাহ্ যেন রক্ষা করেন, চিন্তার যাবতীয় বিচ্যুতি থেকে আল্লাহ্ যেন সুরক্ষা দান করেন।০০ প্রিয়! সজীবতা, সতেজতা ও তারুণ্যের সম্পৃক্তির যে পরিবর্তন ঘটিয়েছি, তোমার চিন্তায় তা ঠিকমত আত্মস্থ নাও হতে পারে! হয়ত তুমি ভাববে...! তো তোমাকে একটু সাহায্য করার জন্য বলছি, কোরআনের মুশরিকীনে আরবের যে মন্তব্য বর্ণিত হয়েছে Ñ إنَّـمـا الـبَـيْـعُ مِـثْـل الرِّبـى এ সম্পর্কে চিন্তা করো।আবারো তোমার এবং তোমাদের সবার সার্বিক কল্যাণ কামনা করে ইতি টানছি।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা