মুহম্মদ রাঈসুল ইসলাম মদীনাতুল উলূম মাদরাসা, আশরাফাবাদ, ঢাকা
০ ‘সৃষ্টির সৌন্দর্যের মাঝে স্রষ্টার সৌন্দর্য’-এই শিরোনামে তোমার লেখাটি পেয়েছি। তুমি নিয়মিত লিখতে থাকো।
হোসাইন বিন মুহম্মদ আলী মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা
০ তোমার লেখাটি মোটামুটি ভালো হয়েছে, তুমি লিখেছো, ‘মানুষের জীবনে সুখ যেমন আল্লাহর দান তেমনি দুঃখ-মুছিবতও আল্লাহর দান। তাই সুখের সময় যেমন তাকে হতে হবে শোকরগুযার তেমনি দুঃখ ও মুছিবতের সময়ও তাকে ছবরের পরিচয় দিতে হবে, তাহলেই বান্দার প্রতি আল্লাহ খুশী হবেন।’ তোমার ‘মুষরে’ পড়া বানানে মূর্ধন্য-ষ তো ঠিকই ছিলো, কিন্তু ‘ড়’ হবে। বাকি বানানগুলো ঠিক আছে।
আব্দুল্লাহ আল মাসঊদ, দারুল উলূম, মাদানীনগর, ঢাকা ০ তোমার চিঠি পেয়েছি। তোমার সুন্দর চিন্ত, চেতনা ও প্রেরণার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। এখন তুমি শুধু এসো আরবী শিখি এবং তামরীন পড়ো, আর যথাসাধ্য মেহনত করে পড়ো। এখন তোমার অন্য কিতাব পড়ার সুযোগ কোথায়!
তোমার বাংলাবানান বেশ দুর্বল। প্রতিজ্ঞা করো, এ বছর তুমি বানানের দুর্বলতা থেকে অবশ্যই মুক্ত হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। সম্ভব হলে একবার আমার সঙ্গে দেখা করো। দু‘আ করি, আল্লাহ তোমাকে তাওফীক দান করুন।
এনায়েত বিন খলীলুর-রহমান লালমাটিয়া মাদরাসা, ঢাকা
০ তুমি লিখেছো ‘মানবতাহীন জাতি’ তোমার এবাক্যগুলো ভালো লেগেছে, ‘হৃদয়ে কিছু কথা আছে, আছে কিছু ব্যথা, কিন্তু প্রকাশ করার শব্দ নেই। কলমে কিছু কালি আছে, আর আছে ছেঁড়া কাগজ, কিন্তু ভাষা নেই। কীভাবে তাহলে তুলে ধরবো হৃদয়ের অব্যক্ত ব্যথা!’
তুমি আরো লিখেছো, ‘আমি দেখেছি মানবতার লাঞ্ছিত মুখ এবং তার ক্ষতবিক্ষত দেহ। মানবতা যেন এখন এক ধর্ষিতা নারী, কিংবা এসিডে ঝলসে যাওয়া যুবতী! কাদের হাতে আজ মানবতার এই লাঞ্ছনা ও অপদস্থতা? মানুষেরই হাতে, না পশুদের হাতে? মানবতাকে রক্ষা করার জন্য মানুষের সমাজে কি নেই কোন মানুষ?!’
মুহম্মদ রিযওয়ান, দারুল উলূম, উত্তরা, ঢাকা
০ তোমার লেখা ও চিঠি পেয়েছি। বানানের জন্য তুমি বাংলা একাডেমির লোগাত দেখতে পারো। এছাড়া আর কী বলতে পারি! কোন আলিম তো বাংলাভাষার লোগাত লেখেননি! জানি না, মাতৃভাষার এ ঋণ থেকে কবে আমরা মুক্ত হতে পারবো!
আশরাফুল ইসলাম, মাদানীনগর মাদরাসা, ঢাকা
০ তোমার লেখা পেলাম। তুমি লিখেছো, আগে তুমি কিছু লিখতে পারতে না, গভীরভাবে কিছু ভাবতে পারতে না; এখন তুমি কিছু না কিছু লিখতে পারো এবং কিছু না কিছু ভাবতে পারো। ... দু‘আ করি, উন্নতির পথে তোমার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। তুমি লিখেছো, ‘অগ্নিশর্মা লেখা’, এটা ঠিক নয়। মানুষ ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়, আর কলম, লেখা, ভাষণ হয় অনলবর্ষী। লেখক এবং বক্তাও অনলবর্ষী হন।
জুম্মানা আরবীন (পুষ্প), পাহাড়পুর, মুরাদনগর, কুমিল্লা
০ তোমার ডাকনাম পুষ্প জেনে খুব ভালো লাগলো। তুমি তোমার লেখায় তোমার দাদুর স্মৃতিচারণ করেছো। তিনি ছিলেন স্বভাবলেখক। অর্থাৎ নিজের আনন্দেই তিনি তার মনের কথাগুলো লিখে যেতেন, কখনো বারান্দায়, কখনো গাছের ছায়ায়, আবার কখনো দূরে সবুজ মাঠে গিয়ে। তুমি লিখেছো, ‘দাদুর লেখাগুলো তখন বোঝার মত বয়স ছিলো না, কিন্ত তার হাতের লেখা ছিলো এত সুন্দর যে মনে হতো, সদ্য ঝিনুক থেকে বের করে আনা মুক্তা।
এখন দাদু নেই, আছে খাতায় লেখা তার সেই কবিতাগুলো। বিষণ্ন সন্ধ্যায় আমি যখন দাদুর কবিতাগুলো পড়ি, তখন আকাশ থেকে যেন রিমঝিম বৃষ্টি নামে! তার কবিতায় আছে আকাশের কথা, বৃষ্টি ও রঙধনুর কথা, সবুজ ঘাস ও শিশিরের কথা, নদী ও ঝর্ণার কথা; আছে গ্রামবাংলার কথা এবং মানুষের হাসি-কান্না ও দুঃখ-দারিদ্র্যের কথা। কবিতাগুলো পড়ি আর ভাবি, কী সুন্দর, কোমল ও পবিত্র একটি হৃদয় ছিলো তার! কত গভীর দরদের সাথে তিনি ভাবতেন তার চারপাশের মানুষের কথা! এমন আশ্চর্য একটি প্রতিভা নীরবে নিভৃতেই হারিয়ে গেলো। তিনি যদি নিজেকে প্রকাশ করার এবং আপন প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর অনুকূল পরিবেশ পেতেন তাহলে অবশ্যই আমাদের সাহিত্য মূল্যবান কিছু সম্পদ লাভ করতো। তিনি লিখেছেন-
আমি হাসতে চাই দুঃখের পরে/ আমি কাঁদতে চাই সুখের আগে/ আমি মরতে চাই মরণের আগে/ আমি বাঁচতে চাই মরণের পরে।’ জুম্মানা পুষ্প! দাদুর সম্পর্কে তোমার লেখাটি আমার হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। সত্যি তোমার দাদু খুব ভালো মানুষ ছিলেন। যেমন ছিলেন জ্ঞানী তেমনই ছিলেন গুণী। তাঁর প্রতিভা ছিলো অসাধারণ। তোমার সঙ্গে আমরাও কামনা করি, আল্লাহ তাঁকে জান্নাত নছীব করুন।
মুহম্মদ ওয়াছেফ রঊফ, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া
০ পুষ্পের ভালো-মন্দ কিছু দিক পর্যালোচনা করে তুমি যে লেখাটি পাঠিয়েছো, পেয়েছি। তোমার অনেকগুলো কথার সঙ্গে আমি একমত। তবে এদিকেও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরো চেষ্টা করবো তোমার কথাগুলো বিবেচনায় রেখে, অন্তকরণে ও দেহাবয়বে পুষ্পের উৎকর্ষসাধন করতে, বাকি আল্লাহর ইচ্ছা। পুষ্পের প্রতি তোমার আন্তরিক ভালোবাসার জন্য, আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও শুভকামনা।
কাজী মাহমুদ হাসান, মাদরাসা আব্দুল্লাহ বিন উমর, গাজীপুর
০ তোমার লেখাটি তোমার কথামত মন দিয়েই পড়েছি। শেখ সা‘দীর গুলিস্তা কিতাবটি লেখাই হয়েছে কতকটা গদ্যীয় ছন্দে, তাই অনুবাদের ভাষায় সেটা অনুসরণ করা হয়েছে; কিন্তু এর অর্থ এ নয় যে, তোমরা তোমাদের স্বাভাবিক লেখায়ও সেটা অনুসরণ করবে। তাতে তো লেখার গতিময়তা নষ্ট হয়ে যাবে। লেখার স্বাভাবিক রীতি অনুসরণ করে লিখতে চেষ্টা করো। পুষ্পের এতগুলো পৃষ্ঠা বাদ দিয়ে শুধু ঐ একটি মাত্র পৃষ্ঠাকে কেন অনুসরণ করছো!
মুহম্মদ শামীম, মাদরাসাতুল ইহসান, উত্তরা
০ তোমার চিঠি ও লেখাগুলো পেয়েছি। তুমি যদি নিয়মতি পুষ্প পড়তে থাকো এবং নিয়মিত লিখতে থাকো তাহলে অবশ্যই তোমার লেখার উন্নতি হবে ইনশাআল্লাহ। তুমি যে নিজের লেখা ছাপার অক্ষরে দেখার জন্য ব্যস্ত নও এটা খুব ভালো। তোমার এবাক্যটি আমার ভালো লেগেছে, ‘এখন তো আমার কলম থেকে শুধু কালি ঝরে; তাই আমার লেখা এখন শুধুই কালির লেখা। যেদিন আমার কলম থেকে ফোঁটা ফোঁটা মধু ঝরবে, ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু ঝরবে এবং ঝরবে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত, সেদিন আমার লেখা হবে মধুর লেখা, অশ্রুর লেখা এবং রক্তের লেখা।’ আমিও প্রতীক্ষায় থাকবো সেই শুভদিনটির। আল্লাহ তোমার হৃদয়ের স্বপ্ন পূর্ণ করুন, আমীন।
আব্দুর-রাহীম বিন সিকেন্দার, দারুল উলূম, উত্তরা, ঢাকা
০ তোমার লেখা পেয়েছি। তুমি লিখতে থাকো এবং পাঠাতে থাকো। দু‘আ করি আল্লাহ যেন তোমার মায়ের অছিয়ত পূর্ণ করে দেন। তুমি যেন সাচ্চা খাদিম ও সেবক হতে পারো। জিহাদ বিল কলমের যে প্রতিজ্ঞা তুমি করেছো, আল্লাহ যেন তা সফল করেন, আমীন।
আরিফ রাহমান, মাখযানুল উলূম, মোমেনশাহী
০ তুমি একটি বৃষ্টিভেজা দিনের রোযনামচা পাঠিয়েছো, তুমি লিখেছো, ‘ওরা বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করে যাচ্ছে জীবিকার নিষ্ঠুর তাগিদে।’ এক্ষেত্রে নিষ্ঠুর শব্দটি সঠিক নয়, ‘কঠিন তাগিদে’ বলতে পারো। নির্মমও চলতে পারে।
যুলফিকার মাহমূদ, মাদরাসাতুন্নূর, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল
০ তোমার চিঠি পেয়ে খুশী হওয়ার চেষ্টা করেছি এবং কিছু খুশী হতে পেরেছি। পুরো খুশী হতে পারিনি কেন? কারণ তুমি ‘খোজ’ করতে গিয়ে চন্দ্রবিন্দু হারিয়ে ফেলেছো! তুমি কলমসৈনিক হয়ে দুনিয়াতে ইসলামের ‘শীর’ উঁচু করতে চাচ্ছো ভালো কথা, কিন্তু আমার কথা হলো, আগে বাংলাভাষার অঙ্গনে নিজে ‘শির’ উঁচু করে দাঁড়াতে চেষ্টা করো।
রাফিদ আমীন, সেনানিবাস, ঢাকা
০ তোমার লেখার শিরোনাম হলো, ‘সেই গোলাপটি মারা গেছে’। লিখেছো ভালোই, নিয়মিত লিখতে থাকো। সেই গাছটি ‘মারা গেছে’ চলে, কিন্তু ফুলের ক্ষেত্রে মারা যাওয়া বলে না, বলে ‘শুকিয়ে গেছে’। গাছ থেকে ফুল ‘ঝড়ে’ যায় না, ‘ঝরে’ যায়। বানানের ক্ষেত্রে এত অসর্তকতা কেন?
ফয়যুল্লাহ সাকী, পটিয়া মাদরাসা
০ তোমার সফরনামা পড়েছি। ভালো, আরো যত্নের সাথে নিয়মিত লেখার অনুশীলন চালিয়ে যাও, তবে বানানের বিষয়ে আরো যত্নবান হও। তুমি পাহাড়ী পথে হেঁটেছো একেবারে চন্দ্রবিন্দু ছাড়া। যদি হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে! তুমি লিখেছো, ‘ভোরে ঘুম থেকে উঠি, ফজরের নামায পড়ি। তিলাওয়াত করি, বন্ধুদের কাছে যাই। দেখি সকলেই তৈরী হয়ে আছে। সকালেই বের হলাম।’ এখানে তুমি ‘বের হলাম’ লিখলে কেন? ‘বের হই’ লিখলে না কেন? একই কারণে তোমার লেখা উচিত ছিলো, ‘ঘুম থেকে উঠলাম, নামায পড়লাম, তিলাওয়াত করলাম, বন্ধুদের কাছে গেলাম। এখানে ‘দেখি’ যেমন ঠিক আছে, তেমনি ‘দেখলামও হতে পারে। লেখার সমাপ্তি অংশে রয়েছে, ‘মাদরাসার দিকে রওয়ানা দিলাম। ... রাত এগারোটার দিকে মাদরাসায় পৌঁছি। এখানে দ্বিতীয় ক্রিয়াটি আসলে হবে ‘পৌঁছলাম। ক্রিয়ার ব্যবহারে এধরনের ভুল অনেকেই করে। সুযোগ হলে এসম্পর্কে বিস্তারিত....