তোমাদের লেখা/ আমাদের দেখা জামিল, মাদরাসাতুল মাদীনাহ তোমার লেখাটি খুব মর্মস্পর্শী। ‘একটি ছোট্ট ছেলে দৌড়ে গিয়ে তার বাবার কোলে আশ্রয় নিলো, এ দৃশ্য দেখে নিজের অজান্তেই আমার দুচোখ থেকে অশ্রুর ধারা প্রবাহিত হলো। আমি তখন স্মৃতির শেষ সীমানায় খুঁজে পেতে চাইলাম আমার বাবার মুখাবয়ব। কিন্তু কোথায় তিনি!’ এ অংশটি খুব সুন্দর হয়েছে। তবে ‘চোখ দু’টো ছলছল করে উঠলো’ লেখাই যথেষ্ট ছিলো। মুহম্মদ ইলয়াস, নূরিয়া মাদরাসা ০ তুমি লিখেছো, ‘পাখীটি ফুড়ুৎ করে উড়ে গেলো।’ এদিকে হয়েছে কী! তোমার লেখাটিও ‘সুড়ুৎ’ করে হাওয়া হয়ে গেলো। তাই তা আর ছাপানো গেলো না। নতুন লেখা পাঠাও। আকীল আল মাহমূদ, হাটহাজারী মাদরাসা ০ তোমার লেখা ‘সুন্দর বনে একদিন’ পেয়েছি। ‘সময় তো চিরবহমান’ ‘কৈশোর পার হয়ে এলো নতুন জীবন’ ‘আনন্দের জোয়ারে ভাসতে ভাসতে’ তোমার একথাগুলো সুন্দর, কিন্তু একজায়গায় তুমি লিখেছো, ‘সফরের আগের দিন হলো ফাটাফাটি আনন্দ’। এটি কিন্তু অশিষ্ট শব্দ, যদিও সাধারণ মানের লেখকরা এটিকে বইয়ের পাতায় নিয়ে এসেছে। এধরণের শব্দ পরিহার করা উচিত। তুমি লিখতে পারতে, ‘সফরের আগের দিন হলো উপচে পড়া আনন্দের দিন’। নতুন লেখা পাঠাও। সুমাইয়া তাসনীম, মধ্যবাড্ডা, ঢাকা ০ তোমার লেখা ‘সাগর দেখে এলাম’ যথাসময়ে পেয়েছি। আমার এখনো কক্সবাজার দেখা হলো না, আর তুমি কিনা এইটুকুন মেয়ে আমাকে ফেলে ..! যাও, তোমার লেখা ছাপা হবে না! তবে তোমার একথাগুলো ভালো লেগেছে, ‘অসীম আকাশ আর উদার প্রকৃতি আমাকে সবসময় আকর্ষণ করে, কিন্তু আমি শুধু গ্রীলের ফাঁক দিয়ে একচিলতে আকাশ দেখতে পাই।’ ‘ফসলের বিস্তৃত মাঠ, নদী, গাছপালা ও গ্রাম; প্রকৃতি যে এত সবুজ এবং সজীব আগে তা অনুভব করিনি।’ ‘যে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলাম তার নাম ‘নিরিবিলি’, যদিও নামের সাথে পরিবেশের মিল নেই।’ সাগরের এত কাছে এসেও সাগরকে না ছুঁয়ে পারা যায়! তবু সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো, ‘আকাশ কত দূরে, তবু চোখ তুলে তাকালেই আকাশ দেখা যায়, সাগর কত কাছে, কিন্তু দেখা যায় না সাগরের সীমানা!’ তোমার লেখার সমাপ্তিটি সুন্দর হয়েছে। ‘সাগরের সঙ্গে মাত্র একদিনের পরিচয়, মনের অতৃপ্তি ও পিপাসা যেন আরো বেড়ে গেলো, কিন্তু উপায় নেই। ফিরে যেতেই হবে, বিষণ্ন হৃদয়ে বালুময় বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে দেখলাম সাগরের অশান্ত ঢেউগুলো, আর মনে মনে বললাম, ‘আবার আসিব ফিরে, এখানে এই সাগরের তীরে!’ মুসাদ্দিক হোসাই, আনোয়ারুল উলূম, হাযারীবাগ, ঢাকা ০ তোমার সফরনামা পেয়েছি, তোমার বানানভুল যথেষ্ট। তুমি লিখেছো, ‘মন কিছুতেই ‘স্বায়’ দিচ্ছে না।’ ‘নদীর একূল থেকে অকূল’, আসলে হবে ওকূল। ‘সফর করেই মানুষ হয় অভিজ্ঞ ও পরিপক্ক।’ আসলে হবে পরিপক্ব, অর্থাৎ ক+ব সংযুক্ত। নৌভ্রমণের কথা লিখতে গিয়ে তুমি বাংলাদেশের নদনদীর বর্তমান করুণ চিত্র তুলে ধরেছো, আবার কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় দেখতে গিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছো যে, ভূমিসংকটের এই দেশে জায়গার কী সীমাহীন অপচয়! মাত্র এগারটি হলবিশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়টি গ্রাস করে রেখেছে বারশ একরের মত বিশাল জায়গা! এটা আমার ভালো লেগেছে, তবে তুমি দু’দিন ধরে ক্যান্টনম্যান্ট দেখলে অথচ তার কোন বিবরণ দাওনি কেন বুঝলাম না। আশা করি, এটা তোমার শেষ লেখা নয়। মাকনূন বিনতে মানছূর আলম, মেহদিগঞ্জ, বরিশাল ০ তুমি কি মাকনূন, না মাকনূনাহ? নারীঅধিকার ও নারীর মর্যাদা সম্পর্কে তুমি লিখেছো ইসলাম ও তথাকথিত প্রগতিবাদের মাঝে তুলনা করে। তোমার লেখা ভালো হয়েছে। তুমি লিখতে থাকো। আব্দুল্লাহ আল মাহমূদ, বাইতুসসালাম, উত্তরা, ঢাকা ০ সাত বছরের বালক শফিকের আব্বা ইনতেকাল করেছেন। তুমি তার মনের কষ্ট বুঝতে পেরেছো। তার অবুঝ কান্না তোমারও অন্তরে কান্নার ঢেউ সৃষ্টি করেছে। কারণ তিন বছর আগে তুমিও হারিয়েছো তোমার আব্বাকে ... তোমার লেখা আমার হৃদয়কে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। যাদের মা-বাবা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের সবার জন্য দু‘আ করি, আল্লাহ তাদের সকলকে জান্নাত নছীব করুন, আর যাদের মাথার উপর এখনো মা-বাবার ছায়া বিদ্যমান রয়েছে, আল্লাহ যেন তাদের তাওফীক দান করেন মা-বাবার সন্তুষ্টি অর্জনের। আমীন। আফসোস তো এই যে, নেয়ামত থাকা অবস্থায় কেউ নেয়ামতের কদর করে না। ওয়ালিউল্লাহ সিরাজ, সিরাগঞ্জ ০ মোমবাতির গলে গলে শেষ হওয়া দেখে তুমি যে শিক্ষা গ্রহণের কথা লিখেছো তা খুব ভালো, তবে এটা যেন শুধু লেখার জন্য লেখা এবং কথার জন্য কথা না হয়, বরং এ শিক্ষা যেন তুমি হৃদয় থেকে অনুভব করতে পারো, কামনা করি। আবুবকর সিদ্দীক, রহমতপুর, বরিশাল ০ একটি সাদা কবুতরকে পশ্চিম দিকে উড়ে যেতে দেখে তোমার হৃদয়ে যে ভাবের উদয় হয়েছে তা আমারও হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। কবুতরকে তুমি তোমার হৃদয়ের আকুতি জানিয়ে বলেছো, ‘হে কবুতর! আমার তো নেই তোমার মত দু’টি ডানা! আমি তো উড়ে যেতে পারি না! তুমি যাও, উড়ে উড়ে চলে যাও সোনার মদীনায় এবং নবীজীর রওযায় পৌঁছে দাও আমার সালাম।’ তবে শোনো, তুমি যদি এখান থেকে দুরূদ পড়ো নবীজীর নামে তাহলে আল্লাহর হুকুমে ফিরেশতাগণ তা পৌঁছে দেবেন নবীজীর খেদমতে। তাই যত পারো দুরূদ পড়ো- ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মুহম্মদ ইউনুস, বাইতুসসালাম, উত্তরা, ঢাকা ০ নারী-উন্নয়ন নীতিমালা-এর বিরুদ্ধে রাজপথগুলোতে যে প্রবল আন্দোলন কিছুদিন আগে হয়ে গেলো সে সম্পর্কে তুমি তোমার নিজস্ব মূল্যায়ন তুলে ধরেছো। তাতে প্রতিপক্ষের সমালোচনা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে আত্মসমালোচনা। লেখাটি আমার ভালো লেগেছে। তুমি যদি চাক্ষুস না লিখে লিখতে চাক্ষুষ তাহলে বলতাম, তোমার লেখায় কোন বানানভুল নেই। তুমি নিয়মিত লিখতে থাকো। রোকন রাইয়ান, দারুররাশাদ, মিরপুর, ঢাকা ০ তুমি লিখেছো, ‘আগে অনেক স্বপ্ন দেখতাম, সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন, নিজের সম্পর্কে, দেশ এবং দেশের মানুষ সম্পর্কে! এখনো স্বপ্ন দেখতে চাই। কিন্তু সেই সুন্দর স্বপ্ন আর দেখতে পাই না। আমার সুন্দর স্বপ্নরা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। এখন শুধু দুঃস্বপ্ন দেখি! চারদিকে শুধু হানাহানি, হিংস্রতা, লোভ লালসা, আর নগ্ন পাশবিকতা। তবু আমি আশায় বুক বেঁধে আছি, এ দুঃস্বপ্নের দিনগুলো কেটে যাবে। আমি আবার দেখতে পাবো সুন্দর স্বপ্ন এবং মানুষকে দেখাবো সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন।’ তোমার লেখা আমার ভালো লেগেছে। শহীদুল্লাহ আবরার, কিশোরগঞ্জ ০ মিডিয়াসন্ত্রাস নামে তোমার লেখাটি আরো সমপ্রসারিত হতে পারতো। লেখাটির দু’টি বাহু, প্রথমত মিডিয়া সন্ত্রাসের স্বরূপ আলোচনা করা; দ্বিতীয়ত আমাদের করণীয় ও কর্তব্য আলোচনা করা। তো দ্বিতীয় অংশটি সম্পর্কে তুমি শুধু লিখেছো, ‘এদরকে রুখতে হবে এবং তা কলমের মাধ্যমে।’ এ অংশটি যথেষ্ট সমপ্রসারিত হতে পারে। যেমন, কীভাবে আমরা নিজেদেরকে কলমের জগতে প্রতিষ্ঠিত করবো এবং মিডিয়ার কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে আমাদের পদচারণা দরকার, ইত্যাদি। মোটকথা, লেখাটির উভয় বাহু কাছাকাছি আয়তনের হওয়া উচিত। নাম-ঠিকানাহীন ০ তোমার লেখার শিরোনাম হলো ‘একটি পুণ্য স্মৃতি’। তুমি অনুরোধ করেছো, ছাপা না হলেও যেন প্রাপ্তিস্বীকার করি। তোমার নাম নেই, ঠিকানা নেই, তবু প্রাপ্তি স্বীকার করলাম ‘আকাশের ঠিকানায়’! ফখরুল কবীর, (রাসেল) ফুলবাড়িয়া, মোমেনশাহী ০ তোমার লেখায় আকাবিরের ন্যায় পবিত্র জীবন ও নূরানী যিন্দেগি গড়ে তোলার আকুতি ফুটে উঠেছে । আল্লাহ তাওফীক দান করুন, আমীন। তোমার ‘অপূর্ব ঋণদাতা নামের লেখাটিও ভালো। আব্দুল্লাহ সাঈদ, কালিগঞ্জ, গাজিপুর ০ তুমি ছুটির সময় বাড়ীতে থাকার অবস্থা এবং তাবলীগ জামাতকে নোছরাত করার কথা লিখেছো। বাড়ীতে তোমার সমবয়সী কেউ নেই, তাই নিজেকে তোমার খুব নিঃসঙ্গ মনে হয়েছে। তাছাড়া তুমি কিছু সুন্দর অনুভব-অনুভূতির কথা লিখেছো, তুমি নিয়মিত লিখে যাবে বলে আশা করি। কামালুদ্দীন, মোহম্মদপুর, ঢাকা ০ তুমি লিখেছো, ইখলাছের সাথে আমল করা দ্বারা মানুষ দুনিয়াতে কী কী ফায়দা হাছিল করে। আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে তাওফীক দান করেন, আমীন। আশরাফুদ্দীন, তালীমুল কোরআন মাদরাসা, খুলশী, চট্টগ্রাম ০ তুমি লিখেছো, ‘হে তালিবে ইলম! তুমি হলে সেই ঝিনুকের মত, যা সাগরের তলদেশ থেকে উঠে আসে এক ফোঁটা বৃষ্টির প্রতীক্ষায়। সেই বৃষ্টির ফোঁটা গ্রহণ করার পর তার মাঝে সৃষ্টি হয় মহামূল্যবান মুক্তা। মুক্তা ধারণ করার আগে যা ছিলো সাধারণ এক ঝিনুক তা ... তুমি যদি হৃদয় উন্মুক্ত করে দাও এবং ইলমের বারি দ্বারা নিজেকে সিঞ্চিত করো ...।’ তোমার লেখা ভালো। তুমি চেষ্টা অব্যাহত রাখো। ইবনে আমীন, দারুল মা‘আরিফ, চট্টগ্রাম ০ বৈশাখের উপর তোমার লেখা পড়েছি। গদ্য লেখায় তুমি কষ্টার্জিত ছন্দ ও অন্ত্যমিল রক্ষা করার চেষ্টা করেছো, ফলে তা কৃত্রিমতাদুষ্ট হয়ে পড়েছে। তুমি সাবলীলভাবে লিখতে চেষ্টা করো, ঠিক যেভাবে কথা বলো। সুন্দর করে লেখা মানে আসলে সুন্দর করে কথা বলা, শুধু ভাষা ও বানানের বিশুদ্ধতা লক্ষ্য রাখতে হয়, আর কিছু নয়। মীযানুররহমান, মাদানীনগর, ঢাকা ০ তোমার রোযনামচা পেয়েছি। আওলাদে রাসূলের প্রতি তুমি যে আত্মিক নৈকট্য অনুভব করেছো তা তোমার জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। তুমি কি নিয়মিত রোযনামচা লেখো? আমার কিন্তু মনে হয় না। হুমায়ূন, ফরিবাদ মাদরাসা, ঢাকা ০ তোমার লেখার শিরোনাম যদি হতো ‘সবুজের প্রতি ভালোবাসা’ তাহলে ভালো হতো। তুমি লিখেছো, একসময় তোমার জীবন ছিলো সবুজবেষ্টিত। তোমার চারপাশে ছিলো সবুজ গাছাগাছালি, ফসলের সবুজ মাঠ, পায়ের নীচে ছিলো সবুজের গালিচা। শুধু সবুজ, আর সবুজ। তখন তুমি বুঝতে পারোনি সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের হৃদয় ও আত্মার কী নিবিড় সম্পর্ক! এখন বুঝতে পেরেছো সবুজের প্রতি তোমার হৃদয়ের ব্যাকুল ভালোবাসা। কারণ এখন তোমার জীবন থেকে সবুজ একেবারে হারিয়ে গেছে। ইট-পাথরের এই শহরে একটুকরো সবুজের সান্নিধ্য লাভা করার জন্য এখন তোমার হৃদয় কাঁদে। আসলে এমনই হয় জীবনের সবক্ষেত্রে। প্রিয় কিছু যখন হারিয়ে যায় তখন মানুষ বুঝতে পারে তার মূল্য। তোমার এ লেখা যদি হৃদয়ের লেখা হয়ে থাকে তাহলে বলবো, তুমি একজন ভালো লেখক হতে পারো, আর যদি হয়ে থাকে শুধু চিন্তার লেখা ...। নোমান আসলাম, বাইতুসসালাম, উত্তরা, ঢাকা ০ আমার মা শিরোনামে তুমি যা লিখেছো মা সম্পর্কে সন্তানের অনুভূতি এমনই হওয়া দরকার এবং অনুভূতিটা হওয়া দরকার হৃদয়ের, শুধু মুখের বা কলমের নয়। বানানের প্রতি তোমার হয়ত যত্ন আছে, তবে আরো যত্নবান হওয়া উচিত। আদেল শরীফ, আনোয়ারুল উলূম হাযারীবাগ, ঢাকা ০ তুমি কলম ধরা শিখেছো, এটা তো সুখের খবর। তবে তোমার স্বপ্ন সত্য হবে, যদি কখনো কলমটা হাত থেকে পড়ে না যায়, পড়ে গেলে বুঝতে হবে, তুমি কলম ধরেছো, কিন্তু কলম ধরা শেখোনি। এখন তোমার কথার সত্যতা প্রমাণ করার দায়িত্ব তোমার। তরীক বিন হাশমাতুল্লাহ, মেহদিগঞ্জ, বরিশাল ০ তোমার লেখা ‘হে নবী, তোমাকে স্মরণ করি’ পেয়েছি। তুমি নিয়মিত লিখতে থাকো। নাজমুল হাসান, মাদরাসাতুল মাদীনাহ ০ তুমি লিখেছো, ‘আমরা তালিবে ইলম, ইলমের তালিব। ইলমের যেমন কোন সীমা-পরিসীমা নেই, তেমনি তলবে ইলমেরও কোন সীমানা নেই। একজন তালিবে ইলমকে মৃত্যু পর্যন্ত ইলমের সাধনায় নিয়োজিত থাকতে হবে, যেমন ইমাম আবু ইউসুফ (র) মৃত্যুশয্যায়ও ইলমচর্চা করছিলেন। ... মুঈন আলবান্না, মাদারীপুর ০ তুমি লিখেছো, ‘প্রিয় বন্ধু! তুমি কী করছো, কোথায় চলেছো, তোমার কি কোন লক্ষ্য আছে, না লক্ষ্যহীন তোমার পথচলা? মনে রেখো, লক্ষ্যহীন কোন কাজ জীবনে সফলতা বয়ে আনে না। ...’ শোনো ভাই বান্না! একজন জ্ঞানী ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি এভাবে উপদেশ দিতে পারেন, অন্যরা নয়। তুমি এভাবে লিখলে শোভনীয় হতো, ‘ কী করছি আমি? কোথায় চলেছি? আমার পথচলা কি লক্ষ্যহীন? যারা লক্ষ্যহীনভাবে পথ চলে তারা তো জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারে না! ... শফীকুর-রহমান, জামিয়া ইসলামিয়া, পটিয়া ০ তোমার ‘একটি আশা’ পেয়েছি। আল্লাহ তোমার আশা পূর্ণ করুন। যারা আশা করে এবং সাধনা করে তাদেরই আশা আল্লাহ পূর্ণ করেন। শামীমা, সুলতানা, সিংগাইর ০ তুমি তোমার কবিতায় মানুষকে আলোর পথে আহ্বান জানিয়েছো। তুমি লিখেছো, ‘অন্ধকারের বাসিন্দা সব/ আলোর পথে চলো/ বিদ‘য়াতি পথ ছেড়ে সবাই/ দ্বীনের কথা বলো। মুসায়্যেব মুহম্মদ সালমান, মালতীনগর, বগুড়া ০ তুমি তোমার আম্মার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার যে সুন্দর অনুভব-অনুভূতি প্রকাশ করেছো সে জন্য তোমাকে সাধুবাদ জানাই। আর মা-দিবস সম্পর্কে আমিও তোমার সঙ্গে একমত যে, এটা আসলে মাতৃজাতির প্রতি অসম্মান। আসলে সন্তানের জীবনের প্রতিটি দিবসই মায়ের জন্য। কারণ সন্তানের সমগ্র অস্তিত্বই তো মায়ের কাছে ঋণী। এটা অবশ্যই বিজাতীয় সংস্কৃতি। ওরা তো মা-বাবাকে পাঠিয়ে দেয় বুড়ো-বুড়ীদের আশ্রয়কেন্দ্রে। তাই বছরে একবার দেখা-সাক্ষাতের জন্য দিবস পালনের ব্যবস্থা করেছে। আমাদের প্রতি তো কোরআনের শিক্ষা এই যে, ‘মা-বাবার সামনে উফ শব্দটিও বলো না। শরীফ বিন মাহবূব, বসুন্ধরা, গুলশান, ঢাকা ০ কিছু স্বপ্ন, কিছু আশা, এই শিরোনামের লেখাটি ভালোই হয়েছে। তুমি বলছো, এটা তোমার জীবনের প্রথম লেখা, কথাটার অর্থ আমি ঠিক বুঝিনি, অথচ তুমি লিখেছো, স্বপ্ন ছিলো বড় হওয়ার এবং কলমসৈনিক হওয়ার। স্বপ্ন ছিলো দেশ ও জাতির বড় কোন সেবা করার। স্বপ্ন ছিলো ...। তো এত বড় স্বপ্ন যার তার তো রীতিমত কলমের সাধনায় আত্মনিমগ্ন থাকার কথা ছিলো! হয়ত আমারই বুঝের ভুল, হয়ত এখন এভাবেই স্বপ্ন দেখার নিয়ম। নূরুন-নবী নকীব, দারুল উলুম, মিরপুর, ঢাকা ০ ডায়াবেটিসের রোগী তোমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সাহায্যের আশায়। তার পায়ে তিনবার অপারেশন হয়েছে, আবার অপারেশন করতে হবে। এসব বর্ণনা করার পর তুমি লিখেছো, ‘আমি লোকটির পায়ের দিকে তাকাতেই আমার দেহমন শিহরিত হয়ে উঠলো। আমি তন্ময় হয়ে লোকটির দিকে তাকিয়ে থাকলাম।’ শিহরণ অর্থ মৃদু মৃদু কম্পন, যা ভয়, উত্তেজনা বা আনন্দের কারণে হয়। এখানে হয়ত তুমি পায়ের বিভৎসতা দেখে শিহরিত হয়েছো, আর তন্ময়তা হয় মুগ্ধতার কারণে। তো একই সময়ে তুমি শিহরিত ও তন্ময় হতে পারো কীভাবে? তাছাড়া এখানে ‘দেহমন শিহরিত হলো’-এর পরিবর্তে লেখা উচিত, ‘আমি শিহরিত হলাম এবং বুকভরা দরদ নিয়ে লোকটির দিকে তাকিয়ে থাকলাম। মুহম্মদ আলআমীন, মালিবাগ মাদরাসা, ঢাকা ০ তুমি তোমার তিনমামা সম্পর্কে লিখেছো, ‘বড় মামা ছোটদের মনের কথা খুব সহজেই বুঝতে পারেন এবং মনের ইচ্ছেগুলো পূর্ণ করেন। আর মেঝোমামা মজার মজার গল্প জানেন, তবে তার প্রতিটি গল্পে থাকে কোন না কোন শিক্ষা, আর ছোটমামার গুণ হলো খাওয়ার পর আমাদের হাতে একটা করে মিষ্টি তুলে দেন, ছোট বড় সবার হাতে। একদিন খাওয়ার পর আমরা জানতে চাইলাম, মিষ্টি দেয়ার রহস্য। তিনি মৃদু হেসে বললেন, মিষ্টি খাওয়া হলো সুন্নত। আমাদের নবীজী খাওয়ার পর মিষ্টি খেতে পছন্দ করতেন। একথা বলে তিনি আমাদের হাতে মিষ্টি তুলে দিলেন। সুন্নতের তালিম পেয়ে, আর মজাদার মিষ্টি খেয়ে আমরা আনন্দে ‘লাফাতে লাগলাম’। ০০ আগে একটা কথা শোনো, সুন্নতের তালিম পেয়ে কেউ কি আনন্দে লাফায়! মিষ্টি খেয়ে কেউ যদি আনন্দে লাফাতে চায়, লাফাতে পারে, কিন্তু এটা যেহেতু ‘সুন্নতি মিষ্টি’ তাই এখানে আনন্দে লাফানোটা হবে অশোভান। ‘আনন্দে আত্মহারা হলাম’ বলা যায়; সবচে’ ভালো হয় যদি বলো, ‘খুব আনন্দিত হলাম। দ্বিতীয় কথা, মিষ্টির সুন্নত ছাড়া আরো তো অনেক সুন্নত আছে সেগুলোর খবর কী? তৃতীয় কথা মিষ্টি খাওয়া সুন্নত কথাটা তুমি কোন সূত্রে লিখেছো ফাহদ, শামসুল উলুম, শুক্রাবাদ, ঢাকা ০ তুমি লিখেছো, ‘মানুষ যখন চেষ্টা করে সুফল দেখতে পায় তখন সে আরো বেশী চেষ্টা করার উৎসাহ পায়। সাধনার পর যদি সে সফলতার মিষ্টি হাসি উপহার লাভ করে তখন সে সাধনার পথে আরো এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ হয়।’ তারপর তুমি রোযনামচা লিখে যে সুফল পেয়েছো তা উল্লেখ করে পুষ্পের বন্ধুদের প্রতি আবেদ জানিয়েছো, তারা যেন নিয়মিত রোযনামচা লেখে, রোযনামচা লেখা কখনো বন্ধ না করে। তোমার আবেদন পুষ্পের বন্ধুদের কাছে পৌঁছে দেয়া হলো। সেই সঙ্গে আমি পরামর্শ দেবো, সকলে যেন পুষ্পের পাতায় প্রকাশিত রোযনামচাগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ে এবং সেভাবে রোযনামচা লেখার চেষ্টা করে। আল্লাহ তাওফীক দান করুন। আমীন। ফারূক বিন মুজীব, হাটহাযারী মাদরাসা ০ ‘মহান অতিথি, মহৎ শিক্ষা’ নামে তোমার লেখাটি পেয়েছি। আওলাদে রাসূল হযরত মাওলানা আরশাদ মাদানী ছাহেব তোমাদের মাদরাসায় এসেছিলেন। তুমি তাকে দেখতে পেয়েছো এবং তাঁর মূল্যবান উপদেশ শুনতে পেয়েছো। সত্যি তুমি ভাগ্যবান, যদি উপদেশ গুলো নিজের জিবনে আনতে পারো। সাখাওয়াতুল্লাহ, বাইতুস-সালাম, উত্তরা, ঢাকা ০ তোমার লেখাটি ভালো। তবে ‘ছোটা বোনটির কাছে ফোন দিলাম’ কথাটি ভালো হতো যদি লিখতে, ছোটা বোনটিকে ফোন করলাম।’ ও বুঝি গাছ থেকে লিচু পেড়ে পেড়ে খাচ্ছিলো, আর তোমাকে ‘খাবে নাকি’ বলে লোভ দেখাচ্ছিলো! তা তুমি লোভ না দেখলেই তো পারতে! ও তখন জব্দ হয়ে যেতো। আসলে না, তোমার বুদ্ধি নেই। সামনে যদি কেউ এভাবে লোভ দেখায়, তুমি একদম লোভ দেখবে না; বুঝলে তো! শাহ আনিস বে-দার, হাটহাযারী, চট্টগ্রাম ০ তুমি রাঙ্গামাটির ভ্রমণকাহিনী লিখেছো ‘ঝুলন্ত সেতুর দেশে’ নামে। নামটি সুন্দর হয়েছে। ভ্রমণকাহিনী লেখার জন্য প্রথম কাজ হলো সবকিছু গভীর মনোযোগের সাথে অবলোকন ও পর্যবেক্ষণ করা এবং গভীরভাবে অনুভব করা। সফরের সময় জরুরী নোট নেওয়া, যাতে পরবর্তীতে সবকিছু লেখা যায়। আমার মনে হয়, তুমি আগে থেকে ভ্রমণকাহিনী লেখার কথা চিন্তা করোনি এবং প্রয়োজনীয় নোট নাওনি। তাই তোমার ভ্রমণকাহিনীটা হয়ে পড়েছে এরকম- ‘রাঙ্গামাটি গিয়েছি। অনেক কিছু দেখেছি এবং খুব আনন্দ করেছি। তারপর ফিরে এসেছি।’ তোমার দেখা, ভাবনা এবং অনুভব-অনুভূতিতে তুমি যদি পাঠককে পূর্ণভাবে শরীক করতে পারো তাহলেই হবে সার্থক ভ্রমণকাহিনী। যে বিষয়ে পাঠকের না আছে আগ্রহ, না আছে আনন্দের খোরাক সেগুলো যদি উল্লেখ করো লেখার কলেবর বৃদ্ধি করার জন্য তাহলে তা পাঠকের বিরক্তি উৎপাদন করবে। সুতরাং সেগুলো অবশ্যই পরিহার করতে হবে। যেমন তুমি লিখেছো- ‘ ফজরের নামায আদায় করার পর সূরা ইয়াসীন তিলাওয়াতরত অবস্থায় মসজিদ থেকে বের হলাম। এমন সময় আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু এসে বললো, আজ তো আমাদের মাদরাসায় বিরতি; চলো না ঝুলন্ত সেতুর দেশ রাঙ্গামাটি ঘুরে আসি!’ তুমি এভাবে লিখতে পারতে, ‘মাদরাসার বিরতির দিন ভোরে আমার প্রিয় বন্ধু অমুক বললো, চলো রাঙ্গামাটি ঘুরে আসি। তারপর তুমি লিখেছো, ‘আমি বললাম, হাতে তো টাকা নেই। সে বললো, টাকার কথা তোমাকে ভাবতে হবে না। তোমার টাকার ব্যবস্থা আমি করবো। আমি বললাম, তা কীভাবে হয়! এখন থাক, অন্য সময় ঘুরে আসবো ... দেখো এগুলো অপ্রয়োজনীয় তথ্য; পাঠকের তাতে কোন আগ্রহ থাকার কথা নয়। এতে শুধু লেখাটা স্ফীত হয়েছে। ভ্রমণকাহিনী লেখার সময় নিজেকে পাঠক হিসাবে চিন্তা করে লিখবে যে, অন্য কেউ যদি লিখতো, আর আমি পাঠক হতাম তাহলে কী কী বিষয় পসন্দ করতাম, আর কী কী অপসন্দ করতাম! ওবায়দ হাবীব, শিকড় সাহিত্য মাহফিল, মোমেনশাহী ০ তোমার রোযনামচা পেয়েছি। তোমার এ বাক্যটি ভালো হয়েছে, ‘দিনের সবচে’ স্নিগ্ধ সময় হলো বিকেল। তখন সূযের রোদ ততটা প্রখর থাকে না। চারদিকে ছড়িয়ে থাকে সোনালী আলোর আভা।’ তারপর তুমি লিখেছো, আর দক্ষিণা হিমশীতল বায়ু যেন প্রকৃতির গায়ে লাগিয়ে দেয় মিস্টি প্রলেপ।’ দেখো, হিমশীতল বাযু কিন্তু মিষ্টি প্রলেপ বুলিয়ে দেয় না, হাড়ে কাঁপন ধরিয়ে দেয়। আর তুমি মনের সুখে সবকটি ‘বায়ু’ লিখেছো দীর্ঘ ঊকার দিয়ে।