হযরত ছাফওয়ান বিন ‘আস-সাল হইতে একটি দীর্ঘ হাদীছের শেষাংশ বর্ণিত যে, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলিয়াছেন, ‘আলমারউ মা‘আ মান আহাব্বা’, মানুষ যাহাকে ভালোবাসিবে কেয়ামতের দিন তাহার সঙ্গেই থাকিবে। (তিরমিযি ও অন্যান্য) ফায়দা- আলোচ্য হাদীছে আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলের প্রতি মুহব্বতের ফযীলত প্রকাশ করা হইয়াছে। ইহা এত বড় সুসংবাদ যে, মুসলিম শরীফের হাদীছে হযরত আনাস (রা) বলেন, ‘ইসলাম গ্রহণের পর আমরা এত বেশী আনন্দিত হই নাই যত আনন্দিত হইয়াছি নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই বাণী শ্রবণ করিবার পর।’ ইহার কারণ এই যে, আর কোন আমল সম্পর্কেই বলা হয় নাই যে, উহা দ্বারা কেয়ামতে ও জান্নাতে নবী-সান্নিধ্য লাভ হইবে; শুধু মুহব্বত সম্পর্কেই এই মহাসুসংবাদ আসিয়াছে। আর যেহেতু তাঁহারা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আপন প্রাণ, সন্তান ও সম্পদ অপেক্ষা অধিক মুহব্বত করিতেন সেহেতু তাঁহারা আনন্দ লাভ করিয়াছিলেন যে, মুহব্বতের উছিলায় দুনিয়ার ন্যায় কেয়ামতে ও জান্নাতেও অবশ্যই তাঁহারা নবী-সঙ্গ লাভ করিবেন। তাই হযরত আনাস (রা) আরও বলিয়াছেন, আমি আল্লাহকে এবং তাঁহার রাসূলকে, আর আবুবকর ও ওমরকে মুহব্বত করি, সুতরাং আশা করি, আমি তাঁহাদের সঙ্গেই থাকিব, যদিও তাঁহাদের ন্যায় আমল করিতে পারি নাই। বস্তুত হযরত আনাস (রা)-এর উপরোক্ত বক্তব্যে নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি মুহব্বত পোষণকারী প্রত্যেক মুমিন মুসলমানই অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যত দুর্ভাগা ও বে-আমল হই না কেন আল্লাহর অসীম রহমতের ভরসায় আমরাও এই মহানেয়ামত লাভের আশা রাখি। তবে মনে রাখিতে হইবে যে, মুহব্বত শুধু মুখের দাবী নহে। বরং মুহব্বতের অর্থ তো এই যে, নবীর প্রতিটি সুন্নতকে মুহব্বত করিয়া উহার উপর আমলের চেষ্টা করিবে, অবশ্য চেষ্টার ত্রুটি হইলে নিরাশ হইবার কারণ নাই। হযরত আনাস (রা) ‘যদিও ..’ বলিয়া সেদিকেই ইঙ্গিত করিয়াছেন। আলোচ্য হাদীছে নেককার মুমিনদিগের প্রতি যেমন মহাসুসংবাদ রহিয়াছে তেমনি তাহাদের প্রতি রহিয়াছে মহাহুঁশিয়ারি যহারা মুসলমান হইয়াও কাফির-মুশরিকদের তরীকা ও জীবনধারা পছন্দ করে এবং ঐরূপ জীবন যাপন করে। কেননা তাহদের হাশর তাহাদেরই সঙ্গে হইবার আশঙ্কা।
বিশ্বনবী সম্পর্কে
জনৈক বিবেকবান অমুসলিম বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিতরূপে বলতে পারি যে, মুহম্মদ সাহেব এমনই পূর্ণাঙ্গ আদর্শবান ব্যক্তি যে, যদি আজ সমগ্র বিশ্বে শাসনভার তাঁর হাতে তুলে দেয়া হয় তাহলে সমগ্র মানবজাতিকে তিনি ইনছাফ, সাম্য ও শান্তির সঙ্গে শাসন করতে সক্ষম হবেন এবং পৃথিবী থেকে সমস্ত অশান্তি ও বৈষম্য দূর হয়ে শান্তি ও সাম্যের স্বর্গীয় একটি পরিবেশ পৃথিবীতে বিরাজ করবে।’ এভাবে বহু মনীষী নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বহু শ্রদ্ধাপূর্ণ মন্তব্য..