রজব ১৪৩০ হিঃ (১২)

কুরআন ও হাদিস

কুরআনের আলো

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করিয়াছেন- আর আমি কোন রাসূলকে প্রেরণ করি নাই তবে তাহার কাউমের ভাষাভাষী করিয়া, যাহাতে তিনি তাহাদের উদ্দেশ্যে (বিধানসমূহ) বর্ণনা করিতে পারেন। অনন্তর আল্লাহ যাহাকে ইচ্ছা করেন হিদায়াত দান করেন, আর যাহাকে ইচ্ছা করেন ভ্রষ্ট করেন। (সূরা ইবরাহীম, ৪) ফায়দা- আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম উম্মাহকে এবং বিশেষত ওলামায়ে উম্মতকে দ্বীনের দাওয়াত ও তাবলীগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দান করিয়াছেন যে, ওয়ারিছে নবী হিসাবে কীভাবে তাহারা দাওয়াত ও তাবলীগের দায়িত্ব সুচারুরূপে আঞ্জাম দিতে পারে। যুগে যুগে বিভিন্ন কাউমের মাঝে যত নবী ও রাসূল আসিয়াছেন তাঁহারা আপন কাউমের ভাষায় কথা বলিতেন এবং কাউমের ভাষায় তাহাদিগকে দ্বীনের দাওয়াত দিতেন। কাউমের ভাষা তাহারা অতি উত্তমরূপে জানিতেন এবং ইহা দাওয়াতের অপরিহার্য অনুষঙ্গরূপে গণ্য ছিল। এই জন্যই মূসা (আ) শুধু মুখের জড়তার কারণে আল্লাহ তা‘আলার নিকট আপন ভ্রাতা হারূন (আ)-এর অনুকূলে নবুয়তের দরখাস্ত করিয়াছিলেন, আর বলিয়াছিলেন, আমার ভাষা সচ্ছন্দ নহে, পক্ষান্তরে আমার ভ্রাতা হারূন, তিনি আমা হইতে অধিক বিশুদ্ধভাষী। আমাদের প্রিয় নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরবের মাঝে সর্বাধিক বিশুদ্ধভাষী ছিলেন। ইহা তিনি যেমন দাবী করিয়াছেন তেমনি তাঁহার মুখনিঃসৃত বাণীসমূহ ইহার সত্যতার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। মুসলিম উম্মাহ যেহেতু ‘সর্বজাতীয়’ উম্মাহ সেহেতু ওলামায়ে উম্মতের দাওয়াতি কর্তব্য হইল নিজ নিজ কাউমের ভাষায় পারদর্শিতা অর্জন করা যাহাতে নবীর ওয়ারিছ ও উত্তরাধিকারীরূপে কাউমকে তাহাদের ভাষায় দাওয়াত দিতে এবং দ্বীনের বিধানসমূহ উত্তমরূপে উপস্থাপন করিতে পারেন। এই কারণেই পারস্যের আলিমগণ ফারসিভাষা, তুর্কিস্তানের আলিমগণ তুর্কীভাষা, সিন্ধের আলিমগণ সিন্ধিভাষা এবং হিন্দুস্তানের আলিমগণ উর্দূভাষা উত্তমরূপে শিক্ষা করিয়াছিলেন। দুঃখজনকভাবে বাংলাভাষার আলিমগণের ক্ষেত্রে অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। শুরু হইতে তাহারা আপন কাউমের ভাষা সম্পর্কে উদাসীন থাকিয়া অন্য ভাষার চর্চায় নিমগ্ন ছিলেন, ফলে বাংলাভাষায় দাওয়াতি দায়িত্ব উত্তমরূপে আঞ্জাম দেওয়া সম্ভব হয় নাই। ফল হইয়াছে বড়ই বেদনাদায়ক। বিলম্ব হইলেও এখন আমাদিগকে আপন কাউমের ভাষা শিক্ষার চেতনা অর্জন করিতে হইবে। তবে ইহাও মনে রাখিতে হইবে যে, উত্তম ভাষা উত্তম দাওয়াতের মাধ্যম ছাড়া অন্য কিছু নহে। উত্তম ভাষায় উত্তমরূপে দাওয়াত প্রদানের পর হিদায়াত বা গোমরাহির ফায়ছালা আসিবে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হইতে। তিনি উত্তম ভাষা বা অন্যকিছুর মোহতাজ নহেন। আর তিনি মহাপ্রতাপশালী, তিনি কাহাকেও হিদায়াত দিতে বা গোমরাহ করিতে চাহিলে কাহারও বাধা দিবার ক্ষমতা নাই। তদ্রূপ তিনি মহাপ্রজ্ঞার অধিকারী, তিনি উত্তমরূপে অবগত আছেন যে, কে হিদায়াতের উপযুক্ত, আর কে গোমরাহির উপযুক্ত।

কোরআন সম্পর্কে

জনৈক নওমুসলিম বলেন, আমি কোরআনের ভ্রান্তি প্রমাণ করার জন্য আরবী শিখতে শুরু করি, তারপর সমালোচনার উদ্দেশ্যে কোরআন অধ্যয়ন শুরু করি, কিন্তু আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম যে, আমার অন্তরে কোরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হচ্ছে, তখন আমার মনে হলো, নিঃসন্দেহে এটি আল্লাহর কালাম। একদিন পরীক্ষার উদ্দেশ্যে দশবার কোরআনের বিভিন্ন স্থান খুলে দেখতে পেলাম প্রত্যেক বারই ‘হিদায়াত’ সম্পর্কিত আয়াত বের হচ্ছে, তখন আমি...।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা