পুঁইশাকের পুষ্টিগুণ!
যে কথাটা গ্রামবাংলায় সবার মুখে মুখে তা দিয়েই শুরু করি পুঁইশাকের উপর আজকের লেখা, ‘শাকের রাজা পুঁই, মাছের রাজা রুই।আমার ছেলে আবার বাগড়া দিলো যে, রুই তো এখানে রাজা হওয়ার সুযোগ পেয়েছে পুঁইয়ের বদান্যতায়, নইলে মাছের রাজা তো ইলিশ! আপাতঃ দৃষ্টিতে কথাটা হালে পানি পেলেও মনে রাখতে হবে যে, ইলিশ হলো মাছের রাজা স্বাদের বিচারে। নইলে আকারে উপকারে রুই নিজের তুলনা নিজেই।যাক, এখন পুঁইয়ের কথা শোনো। পুঁই একটি লতা-পাতাজাতীয় সব্জী বা শাক, অর্থাৎ লতার বিচারে সব্জী, পাতার বিচারে শাক। পুঁইশাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, বি, সি; ক্যালশিয়াম, আয়রণ, ফলিক এ্যাসিড, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক রয়েছে। শিশুদের শরীরবৃদ্ধিতে পুঁইশাকের অবদান অনেক। চোখ ও চোখের দৃষ্টির জন্য পুঁঁইশাক বেশ উপকারী। পুঁইশাকে প্রচুর পরিমাণে লিপোইক এ্যসিড নামে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্র কমায়। পাশাপাশি ইনসুলিনের ভারসাম্য ধরে রাখে, অর্থাৎ ডায়বেটিসের জন্য উপকারী। পুঁইশাক রক্তে চর্বি জমতে দেয় না, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।ুঁপুঁইশাকের ম্যাগনেসিয়াম ও ফোলেট হলো এনার্জির উৎস। এতে আমাদের শরীর তরতাজা থাকে। পুঁইশাকের পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পুঁইশাক ক্যানসার প্রতিরোধেও উপকারী। এর ফাইবার পাকস্থলীর ক্লোন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। পুঁইশাক র্ভিটামিন কে,র ভালো উৎস, যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং হাড় শক্ত করে। পুঁইশাক ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ফলে পাইলসের সম্ভাবনা কমিয়ে আনে, আর হযমে সাহায্য করে। ভিটামিন এ,র কারণে চুল ও ত্বকের জন্য পুঁইশাক উপকারী। পুঁইশাক সাধারণত গরমকালের সব্জী হলেও, এখন বারমাসেই কমবেশী চাষ করা হয়।পুঁইশাকের প্রধানত দু’টি জাত আছে; লাল পুঁইশাক, যার পাতা ও কাÐ লালচে হয়। সবুজ পুঁইশাক, যার পাতা ও কাÐ সবুজ। পুঁইশাক, যেটি আকারে লম্বা, সেটিকে মাচায় তুলে দিতে হয়, আর যেটি আকারে ছোট সেটিকে জমিতে চাষ করতে হয়।পুঁইশাকের ডগা লম্বা হতে শুরু করলে ডগা কেটে সংগ্রহ করতে হয়, তাতে নতুন নতুন ডগা গজায় এবং ফলন বাড়ে।