কাশ্মীরসংখ্যা

সম্পাদকের রোযনামচা

সম্পাদকের রোযনামচা

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

একটু সতর্ক হওয়া কি যায় না!

শব্দের সঠিক উচ্চারণটাও যদি আমাদের দ্বারা না হয়, তাহলে কিসের তালিবে ইলম! সেদিন সঙ্গত-অসঙ্গত বিভিন্ন কারণে মনটা এমনিতেই বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছিলো। অসুস্থতাও ছিলো। এর মধ্যে চারজন ‘মাওলানা তালিবে ইলম’ এলেন মাদরাসায়। দু’জন মাদরাসা দেখার জন্য, দু’জন অভিভাবক পরিচয়ে।

এ পর্যন্ত ঠিক ছিলো। আমাকে মসজিদে দেখতে পেয়ে তাদের ইচ্ছে হলো, দেখা করবেন। যদিও আমি প্রস্তুত ছিলাম না। তবু ঠিক আছে। দেখা করলেন, বিক্ষিপ্ত মন নিয়েই কুশল জিজ্ঞাসা করলাম। আসার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসার জবাবে, ঐ দু’জন জানালেন, ‘খালতো বাইয়ের সঙ্গে ...!’

কী করবো, আমারও মাজবূরি। এধরণের কথা শুনলে শরীর রি রি করে ওঠে। এত বড় মানুষ, এত নীচু স্তরের উচ্চারণ! সম্ভবত আর কোথাও তাদেরও সমস্যা হয় না। আমার সমস্যা হয়, বড় ধরনের সমস্যাই হয়। এজন্য সাধারণত আমি মানুষের সঙ্গ এড়িয়ে চলি। কিন্তু গায়ে পড়ে এসে কষ্ট দিয়ে যায়, এর কী করা! একজন ‘রিকশাওয়ালা’ যখন এভাবে বলেন, কষ্ট হয় না। কিন্তু তালিবে ইলম! মাওলানা তালিবে ইলম!!

একটু সতর্ক হওয়া কি যায় না! ভাষার শুদ্ধতা ও উচ্চারণের বিশুদ্ধতা খুব কি কঠিন কাজ! অথচ এর সুফল কত সুদূর বিস্তৃত! সেদিন উচ্চস্তরের আধুনিক শিক্ষিত একদম্পতি এসেছিলেন। মাক্তাবের শিশুদের দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন এভাবে, ‘ছোট ছোট বাচ্চা, কী সুন্দর শুদ্ধ ভাষায় কথা ‘বলতেছে’, কল্পনাই করা যায় না।’ অর্থাৎ নিজেরা না পারলেও, অন্যের মুখে শুদ্ধভাষা, শুদ্ধ উচ্চারণ সবাইকে মুগ্ধ করে! বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, এটা কি ‘সুন্নতে নববী’ এর মধ্যে পড়ে না!

 

১- ১২ -৪০ হি.

‘আমার মা’ লেখাটির একটি বাক্য সম্পর্কে আলোচনা। প্রথমে লিখেছিলাম এভাবে, ‘দুধের ফোয়ারা এবং অশ্রুর ফোয়ারা একসঙ্গে প্রবাহিত হতো’। মনে হলো, দু’টি ‘হত’ এর পাশাপাশি তাকরার ও পুনরুক্তিতে তানাফুর বা শ্রুতিকটুতা রয়েছে। তাই পরিবর্তন করে লিখলাম, ‘দুধের ফোয়ারা ও অশ্রুর ফোয়ারা, দুটোরই প্রবাহ একসঙ্গে হতো।’ এখানে দু’টি ‘হ’ পাশাপাশি নেই, কাছাকাছি আছে। মাঝখানে ‘একসঙ্গে’ এর আড়াল থাকার কারণে সামান্য তানাফুরও আর নেই।

আবার মনে হলো, ফোয়ারা এর তাকরারে যদিও তানাফুর নেই, তবে বুকের দুধ ও চোখের অশ্রু, দু’টোর যেহেতু নিজস্ব ভিন্ন আবেদন রয়েছে সেহেতু দু’টোর সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন শব্দ হওয়াই সঙ্গত। এ চিন্তা থেকে প্রথমে ফোয়ারা-এর পরিবর্তে ‘ঝরণা’ শব্দটি লিখেছি। কোনটির সঙ্গে ঝরণা এবং কোনটির সঙ্গে ফোয়ারা হওয়া সঙ্গত সে সম্পর্কে অনেক ভাবনা চিন্তার পর বর্তমান সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।

আরেকটা কথা, এখানে আলোচনার সময় ‘বুকের দুধ ও চোখের অশ্রু’ যখন লিখছি তখন হঠাৎ করেই মনে হলো, মূল বাক্যেও বুক ও চোখ যুক্ত হওয়া দরকার। তাতে বক্তব্যের আবেদনটি আরো জোরালো হয়।

এবার বাক্যটির সম্পাদনাপূর্ব রূপ এবং সম্পাদনাপরবর্তী রূপ পাশাপাশি দেখুন

(ক) দুধের শিশুকে কোলে নিয়ে নানী যখন... তখন দুধের ফোয়ারা এবং অশ্রুর ফোয়ারা একসঙ্গে প্রবাহিত হতো নীরবে নিঃশব্দে।

(খ) ...তখন বুকে দুধের ঝরণা এবং চোখে অশ্রুর ফোয়ারা দুটোরই প্রবাহ একসঙ্গে হতো, নীরবে নিঃশব্দে।

পুরো বক্তব্যের সঙ্গে একমত হওয়া জরুরি নয়। আমি শুধুবোঝাতে চাচ্ছি, সম্পাদনার জন্য কী পরিমাণ সময়, চিন্তা ও শ্রম ব্যয় করা কর্তব্য যদি...।

তৃতীয় সম্পাদনার সময়, নীরবে, নিঃশব্দে-এর সঙ্গে

হৃদয়ের গভীরে সুখ ও যন্ত্রণা মাখামাখি হয়ে

এ অংশটি যুক্ত হয়েছে। এখন বক্তব্যটি কতটা পূর্ণতা লাভ করেছে!

এখন আবার মনে হচ্ছে, সুখের মধ্যে কিছুটা হলেও স্থুলতা রয়েছে, পক্ষান্তরে যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে কিছু তীব্রতা, অথচ এখানে কোমলতা হলো কাক্সিক্ষত। ‘আনন্দ’-এর মধ্যে স্থুলতা ও শরীরবৃত্তির পরিবর্তে রয়েছে হৃদয়বৃত্তির ছোঁয়া। অন্যদিকে ‘বেদনা’-এর মধ্যে রয়েছে তীব্রতার পরিবর্তে কোমলতা ও গ্ধতা। শেষ সম্পাদনার সময় তাই শব্দদু’টির পরিবর্তন করা হয়েছে।

৪- ১২- ৪০ হি.

পুরো পত্রিকার মধ্যে সম্পাদনার যে দীর্ঘ ও পর্যায়ক্রমিক কাটাচেরা ও পরিমার্জন এবং পরিচর্যা ও সম্পাদনা সম্পন্ন হয়, এমনকি সম্পাদকের রোযনামচা লেখার সময় তাতেও যে পুনঃপৌনিক সম্পাদনা হয়, যদি সেগুলো সংরক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হতো তাহলে সম্পাদনা-সাহিত্য নামে অত্যন্ত মূল্যবান এক বিশাল সম্ভার গড়ে উঠতো, যা নবীন লেখকদের জন্য হতে পারতো ...! ভিতরে সম্ভাবনা আছে এমন কেউ আমার কাছে আসবে, পাশে বসে পর্যবেক্ষণ করবে, তারপর সংরক্ষণ করবে, এটা ছিলো আমার কামনা, কিন্তু তা আর হলো কোথায়! অথচ লেখার জীবনের মত আমার সম্পাদনার জীবনও কয়েক দশকের বিস্তার ধারণ করে!

আত্মপ্রশংসার মত শোনায়, তবে আকাশ সাক্ষী, এটা আত্মপ্রশংসা নয়, হৃদয়ের যন্ত্রণার প্রকাশ; আমার সুদীর্ঘ জীবনের সম্পাদনা-গুলো সংরক্ষণ করেও বহু নবীন গড়ে উঠতে পারতো শক্তিমান লেখকরূপে। কবে কোন্ দেশের কোন্ ভালো মানুষটি যেন বলে গিয়েছেন, ‘আয় ব্যসা আারযূ কে খাক... ‘কত আকাক্ষাই তো মাটির সঙ্গে মিশে গেলো!’

৫ -১২- ৪০ হি.

আমার লেখায় ‘বিনোদন ও সাধনার ভিন্ন জগত’ সম্পর্কে একটি লেখা তৈরী করার ইচ্ছে মনের মধ্যে ঝিলমিল করছে বেশ কিছু দিন থেকে। বিষয়টি সম্পন্ন হলে তাও হতে পারে লেখার জগতে নতুন অভিজ্ঞতার মূল্যবান কিছু উপাদান। নিজে লেখার সময় করে ওঠা তো কঠিন। কারো সঙ্গে যদি মুযাকারা করা সম্ভব হতো, আর সে আমার তত্ত্বাবধানে পুরো লেখাটা সাজিয়ে নিতো তাহলেও বড় একটা কাজ হতে পারতো। কিন্তু আমার কাছে এত মানুষ যে, ভিড়ের মধ্যে সেই  ‘মানুষটি’ আর খুঁজে পাই না। খুব সস্তাভাবে কেউ কেউ অবশ্য বলে, ‘আমি হতে চাই আপনার সেই দশজন তরুণের একজন’।

হতে তো চায়, তবে স্বপ্নে সুখযাত্রার মধ্য দিয়ে, বাস্তবের কঠিন সাধনার পথ ধরে নয়। কাকে বলে সাধনা (যে কোন বিষয়েই হোক) কাকে বলে আত্মনিবেদন ও ফানাইয়্যাত, তার নযীর তো আর কম নেই, দূর অতীতে এবং নিকট সময়ে, এমনকি বর্তমানেও। কিন্তু কোথায় আমার জীবনে দুর্গম পথের সেই সাহসী অভিযাত্রী!

৭ -১২ -৪০ হি

‘যেন শরীরের উত্তাপ দিয়ে মায়ের অন্তরে নিজের হৃদয়ের উত্তাপ-উষ্ণতাটুকু ঢেলে দেয়ার চেষ্টা’।

প্রথমে ছিলো, ‘যেন ... চেষ্টা করতেন।’

সাধারণভাবে জুমলা ইসমিয়্যার আবেদন বেশী জোরালো হয় এবং হৃদয়ে তা বেশী রেখাপাত করে।

র জুমলা ফি’লিয়্যা ক্ষেত্রবিশেষে বক্তব্যের গতি ও প্রবাহকে বিক্ষিপ্ত ও ব্যাহত করে।

উপরের বাক্যটি দু’ভাবে পড়ে দেখলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। আমাদের সাধারণপ্রবণতা হলো জুমলা ফি’লিয়্যা-এর দিকে। তাই আমিও যখন লিখি, প্রথমে সাধারণত ফি‘লিয়্যাই আসতে থাকে। পরে সম্পাদনার সময় যতটা সম্ভব সংশোধনের চেষ্টা করি। আমার ইচ্ছে আছে, কোন উপলক্ষে এধরনের কিছু ইসমিয়্যা ও ফি’লিয়্যা পাশাপাশি একত্র পরিবেশন করে বিষয়টির বিশদ আলোচনা তুলে ধরা।

১৬ -১২ -৪০ হি.

‘বুকে দুধের ঝরণা এবং চোখে অশ্রুর ফোয়ারা, দু’টোরই প্রবাহ একসঙ্গে হতো, নীরবে নিঃসব্দে; হৃদয়ের গভীরে আনন্দ ও বেদনা মাখামাখি হয়ে।’

কয়েকদিন আগে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে একটি আঙ্গিকে, আজ আলোচনা করছি অন্য একটি আঙ্গিকে

বাক্যটা বেশ বড়, তবে এখানে পর্ববিভক্তিটি এত সঙ্গত এবং গদ্যের যে নিজস্ব সুরছন্দ তা এমনই গতিময় যে, আবৃত্তি কোথাও একটুও ব্যহত হয় না। হৃদয়ের অনুভব অনুভূতি বাক্যের বক্তব্যের সঙ্গে একেবারে যেন একাকার হয়ে যায়। প্রথমে দেখি পর্ববিভক্তির বিষয়টি

প্রথম দু’টি পর্ব একই সমতায় বিভক্ত

বুকে দুধের ঝরণা/চোখে অশ্রুর ফোয়ারা

তারপর লম্বা সরল একটি রেখা, /দু’টোরই প্রবাহ একসঙ্গে হতো;

তারপর ছোট ছোট শসে উচ্চারিত ছোট্ট দু’টি শব্দ

নীরবে/নিঃশব্দে

তারপর দীর্ঘ শসের একটি অংশ, যেখানে বক্তব্যের পূর্ণ আবেদনটি যেন মূর্ত হয়েছে। আবার পড়ি

বুকে দুধের ঝরণা/(এবং) চোখে অশ্রুর ফোয়ারা/ দু’টোরই প্রবাহ একসঙ্গে হতো/ নীরবে, নিঃসব্দে/হৃদয়ের গভীরে আনন্দ ও বেদনা মাখামাখি হয়ে। বয়স থেকে মৃত্যু পর্যন্তই তো দেখেছি’ অপেক্ষাকৃত সহজ ও সাবলীল হয়নি!

খুবই সামান্য একটা অস্পষ্টতা অবশ্য রয়ে গিয়েছে যে, কার মৃত্যু পর্যন্ত? যদিও বুঝতে বিলম্ব হয় না যে, যাকে দেখা হচ্ছে, তার মৃত্যু পর্যন্ত। বাক্যটি এমনও হতে পারে, ‘বুঝের বয়স থেকে শেষ পর্যন্তই তো দেখেছি’।

১৯ -১২ -৪০ হি.

... পৃষ্ঠায় ... কলামে .... অংশে দেখুন ‘যখন বুঝ হয়েছে তখন থেকে মৃত্যু পর্যন্তই তো দেখেছি’ এটি ছিলো একটি অন্তবর্তী বাক্য, আরবীতে যাকে বলে জুমলা মু’তারিযা; সবভাষাতেই এর ব্যবহার ও প্রচলন রয়েছে।

এখানে দু’টি ত্রুটি নযরে আসছে। ‘যখন ও তখন’-এ উসলুবটি মূলধারার বাক্যের ক্ষেত্রে বেশী উপযোগী, অন্তবর্তী বাক্য বা ই’তিরাযিয়া জুমলার ক্ষেত্রে নয়। দ্বিতীয়ত প্রথম অংশটি দীর্ঘ হওয়ার কারণে গতিময়তা ব্যাহত হয়েছে। তাই এভাবে সম্পাদনা করেছি, ‘বুঝের বয়স থেকে মৃত্যু পর্যন্তই তো দেখেছি’ অপেক্ষাকৃত সহজ ও সাবলীল হয়নি!

খুবই সামান্য একটা অস্পষ্টতা অবশ্য রয়ে গিয়েছে যে, কার মৃত্যু পর্যন্ত? যদিও বুঝতে বিলম্ব হয় না যে, যাকে দেখা হচ্ছে, তার মৃত্যু পর্যন্ত। বাক্যটি এমনও হতে পারে, ‘বুঝের বয়স থেকে শেষ পর্যন্তই তো দেখেছি’।

২০ -১২- ৪০ হি.

‘ব্যাখ্যাতলব’; বাংলায় সাধারণত বলা হয়, ব্যাখ্যাসাপেক্ষ, প্রশ্নসাপেক্ষ, এটা ঠিক আছে। তবে নতুন একটি ‘তা‘বীর’ হিসাবে ‘ব্যাখ্যাতলব’ গ্রহণযোগ্য হতে পারে। এটি মূলত উর্দূ ভাষার তা‘বীর।                                                                   

২২ -১২ -৪০ হি.

‘এই তো সেদিনের কথা! রাতের ঘড়ি তখন দু’য়ের ঘর পার হয়েছে।..

এখানে তা‘বীর ও প্রকাশশৈলীতে একটু নতুনত্ব আছে। সাধারণ ভাবে এখানে লেখা হবে, রাত তখন দু’টোর বেশী বাজে। অথবা রাত তখন দু’টো বেজে বিশ/ পঁচিশ... এ জাতীয় কিছু।

এটা এতই জানা ও পরিচিত বাক্য যে, পাঠকের জন্য তাতে কোন আকর্ষণ বা আবেদন নেই। যদি একটু নতুনত্ব আনা যায় তাহলে এই সাদামাটা কথাটার মধ্যেই পাঠকের জন্য হতে পারে বাড়তি কিছু প্রাপ্তি। ঘড়ির বা সময়ের যে দু’টো অংশ আছে দিন ও রাত, ধারণাটা এখানে আলাদা করে উঠে এসেছে। ঘড়ি তো ঘড়িই। কিন্তু যখন ইযাফাত করে বলি, দিনের ঘড়ি, রাতের ঘড়ি, পাঠক তখন একটু সময়ের জন্য হলেও ফিরে তাকাবে যে, কী বলা হলো! আচ্ছা! বেশ তো!

হাঁ, সেই নতুনত্বের মধ্যে সৌন্দর্য, বৈচিত্র্য, মাধুর্য ও সারবত্তা অবশ্যই থাকতে হবে। তরলতা থাকলে তা আর গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।

আল্লাহ্র ইচ্ছা! এবার পাঠকের কাছ থেকে লেখার সাড়া আসছে কম। যা কিছু আসছে দায়সারাগোছের রোযনামচা! পুষ্পের বিভিন্ন পাতায় লেখার বিভিন্ন ধরনের যে নমুনা দেয়া হচ্ছে, তা অনুসরণ করে লেখার চেষ্টা তেমন একটা নেই। সবকিছু তাই কেমন যেন গতানুগতিক। কিছু ব্যতিক্রম অবশ্য আছে, তবে...!

ভাবছি, এবার কিশোর বিভাগের সম্পাদকীয়তে এসম্পর্কে কিছু লিখবো কি না!

১০ -২ -৪১ হি.

একটু বিলম্ব হলো সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করতে। বর্তমান সংখ্যাকে ‘কাশ্মীরসংখ্যা’রূপে বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শরীর ও স্বাস্থ্যের সমান্তরালে সার্বিক যে প্রতিকূলতা তাতে বলতে হয়, দুঃসাহসই করা হলো। তবে আল্লাহ্র উপর ভরসা করতে পারলে পুরো কাজটাই উঠে যায়, ‘সহজ-কঠিন’-এই জটিলতার ঊর্ধ্বে।

২৯ -২ -৪১ হি.

দিনের পর দিন পার হচ্ছে, ভিতর থেকে লেখার যে প্রবাহ সেটা আর আসছে না! আল্লাহর রহমতে আজ রাতে সেটা এলো। এর পিছনে আবার সেই একই বেদনা! আমার ছেলেরা বড় বেশী কষ্ট দিয়েছে। যারা দায়িত্বশীল বয়সের তারা...!

আমি উপকৃত হলাম, অনেক দিন থেকে থেমে থাকা প্রবাহটি ফিরে পেলাম। আমাকে কষ্ট দিয়ে ওদের কী লাভ হলো! তাই নিজে উপকৃত হওয়া সত্ত্বেও ওদের প্রতি কল্যাণআকুতি থেকে আলাদা একটা ব্যথা বুকের মধ্যে চিন চিন করছেই। 

১৬ -৮ -৪০ হি.

‘কাশ্মীরী শিশুর প্রতি কৃতজ্ঞতা’ রাতের নির্জনতায় হঠাৎ করেই আল্লাহ্ দান করলেন। সন্ধ্যার আগে একটি মর্মান্তিক ছবি ও লেখা পড়েছিলাম। তা থেকেই লেখাটির উম্মেষ। পৃথিবীর সবশিশুকে আল্লাহ নিরাপদ রাখুন, আমীন।

আকাশের করুণায় হৃদয়ের ঝরণা কুলকুল সঙ্গীতের তরঙ্গদোলায় বয়েই চলেছে... 

 (চলবে ইনশাআল্লাহ্)

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা