কাশ্মীরসংখ্যা

কচি ও কাঁচা

ছোট্ট খোকা, ছোট্ট খুকি!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

ছোট্ট খোকা, ছোট্ট খুকি!

ছোট্ট খোকা, ছোট্ট খুকি! আমার ছোট্ট একটি সালাম নাও। আশা করি তোমরা সবে আল্লাহর রহমতে ভালো আছো, সুস্থ আছো, লেখা-পড়ায় ব্যস্ত আছো এবং ভবিষ্যতের সুন্দর জীবনের পথে সুন্দরভাবে এগিয়ে চলেছো। জীবনের সকল কাজে তোমরা সফল হও, তোমাদের জন্য আমার এটাই কামনা।

এসো, আজ আমার মনের বড় একটা কষ্টের কথা তোমাদের বলি! আরাকানের কষ্টের কথা তোমাদের বলেছি। তারপর আলকুদসের কষ্টের কথা বলেছি। এখন বলতে চাই কাশ্মীরের কষ্টের কথা। আমাদের কষ্টের তো শেষ নেই। এখন তো আমাদের প্রতিটি জনপদ একটা করে কষ্ট! সিরিয়ার কষ্টটাও কি কম! ছোট্ট মেয়ে আইলানের কথা কি আমরা ভুলতে পেরেছি! ভুলতে পারি!! সাগরে ভেসে এলো তার লাশ! পড়ে থাকলো সাগরের তীরে বালুর উপর।

এখন হয়েছে কী! সবকষ্ট ছাপিয়ে উঠেছে কাশ্মীরের কষ্ট। প্রতিটি মুসলিম জনপদে আছে তোমাদের মত ছোট ছোট ছেলে মেয়ে। কাশ্মীরেও আছে, যেমন আছে ফিলিস্তীনে। ইহুদিরা যেমন ফিলিস্তীনে শিশুদের উপর যুলুম-নির্যাতন করছে, বিভিন্নভাবে; কাশ্মীরেও হিন্দু যালিম ফুলের মত সুন্দর শিশুদের উপর কত রকমের যে যুলুম-নির্যাতন করছে, শুনলে শরীর কাঁটা দিয়ে ওঠে। অবাক হয়ে ভাবি, হিন্দুস্তানের সৈন্যরা কি মানুষ না! ওদের ঘরে কি ছোট ছোট বাচ্চা নেই! ফুলের মত শিশু নেই। সবদেশের, সবধর্মের শিশুরা তো মাছুম, নিষ্পাপ! ওরা তো দুনিয়াতে এসেছে ফিতরতের উপর! তো ওদের ঘরে যে নিষ্পাপ শিশুরা আছে, সেই শিশুদের কথা চিন্তা করেও কি হিন্দু হায়েনাদের দিলে কোন দয়া আসে না! কীভাবে ওরা মায়ের কোল থেকে শিশুদের কেড়ে নিয়ে যায়! মায়ের সামনেই কীভাবে মেরে ফেলে!

আমাদের মুসলিম সৈন্যরা, যাদের বলা হয় মুজাহিদীন। আমাদের মুজাহিদীন তো কত দেশ জয় করেছেন! কিন্তু কখনো তারা কারো উপর যুলুম করেননি। শিশুদের তো মুজাহিদীন শুধু আদর করেছেন। কারণ এই শিশুদের দেখে তাদের মনে পড়তো, নিজেদের শিশুদের কথা, যাদের তারা ঘরে রেখে জিহাদে বের হয়েছেন।

আমাদের মুজাহিদীন তো নারী-বৃদ্ধ কাউকে কখনো কষ্ট দেননি। কারণ আমাদের নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নারীকে, শিশুকে কষ্ট দিয়ো না; গাছ, বাগান, ফসল নষ্ট করো না। কিন্তু দেখো আমাদের ভাগ্য, দুশমন হোক, ইহুদি, নাছারা, হিন্দু, বৌদ্ধ যখনই দুশমন আমাদের কোন জনপদে ঢুকে পড়ে, সব তছনছ করে ফেলে। নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ কাউকে ছাড়ে না, ধরে ধরে শুধু হত্যা করে। ঘরবাড়ী, বাগান ফসল সব জ¦ালিয়ে দেয়। এমনকি মানুষকেও পুড়িয়ে মারে।

কাশ্মীরে এখন চলছে এমনই ভয়াবহ যুলুম। আশা করি, তোমরা আল্লাহর কাছে মুনাজাত করবে, কাশ্মীরের এবং সবজনপদের মযলূম মুসলিমীনকে আল্লাহ্ যেন হিফাযত করেন, আমীন।

পুষ্পেরউদ্যানে তোমাদের স্বাগতম!

পুষ্পের প্রতি ছেলেদের, মেয়েদের এমন ভালোবাসা যে, পুষ্পের আসতে একটু দেরী হলেই সবাই অস্থির! ওদের ইচ্ছে, পুষ্পের খোঁজ নিতে পুষ্পরানীর কাছে ছুটে যায়, একদু’বার গিয়েছিলোও। কিন্তু এতদিনে ওরা জেনে গিয়েছে, বড়দের সঙ্গে ছাড়া একা একা এত দূরের পথে বের হওয়া পুষ্পরানীর একদম পছন্দ না। সেটা অবশ্য ওদেরই নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে। পথে ঘাটে কখন কী বিপদ হয়, বলা তো যায় না!

সমস্যা হলো, বড়দের তো বড় বড় কাজ! ছোটদের মনের কষ্টটা নিয়ে ভাবার সময় কোথায় তাদের! এদিকে ছোটদের জন্য জাওয়াল ব্যবহার পুষ্পরানীর পক্ষ হতে একদম নিষেধ। নিষেধ মানে নি-ষে-ধ!

তো কী করা! ছেলেরা, মেয়েরা চিন্তা করে একটা বুদ্ধি বের করলো। আগের যুগের লোকেরা কবুতরের পায়ে চিঠি বেঁধে দূরে আপনজনদের কাছে পাঠাতো। আমাদের তো আর উপায়টা বুদ্ধি খরচ করে বের করতে হবে না! আমাদের তো জানাই আছে! যেমন ভাবা তেমন কাজ! সুন্দর একটা চিঠি লেখা হলো পুষ্পরানীর নামে এবং পোষা কবুতরটার পায়ে বেঁধে ওড়িয়ে দেয়া হলো পুষ্পরানীর ঠিকানায়। কবুতরও পৌঁছে গেলো ঠিক ঠিক। পুষ্পরানী তো চিঠি পেয়ে দারুণ খুশী! ছেলেরা মেয়েরা এত্তো... ভালোবাসে আমাকে!

ছেলেদের চিঠি আলাদা। কথাগুলোও ছেলেদের মত। রাগ রাগ ভাব! মেয়েদের চিঠি আলাদা। ভাষাটাও মেয়েদের মত। মানে অভিমানে একটু যেন গালফোলাভাব। দু’টো চিঠি পড়েই পুষ্পরানী খুশী হলো। তবে কিনা ছেলেদের চিঠি পড়ে হলো আনন্দিত, আর মেয়েদের চিঠি পড়ে হলো আহ্লাদিত।

পুষ্পরানী তো এখন মহাব্যস্ত পুষ্প নিয়ে। তাই ছেলেদের জন্য এবং মেয়েদের জন্য একত্রে একটা চিঠিই লিখলো। প্রথমে কবুতরটাকে অনকে আদর করলো। দানাপানি খাওয়ালো; তারপর কবুতরের পায়ে চিঠিটা বেঁধে উড়িয়ে দিলো। পুষ্পরানীর চিঠিটা তোমরাও দেখো

... তোমাদের ভালোবাসা পেয়ে আমি খুব খুশী। তোমরা তো জানো কাশ্মীরের মুসলমানদের এখন কত দুর্দিন! ওখানেও আছে তোমাদের মত ছোট ছোট ছেলে মেয়ে। কিন্তু ভারতের দুষ্ট সেনারা এত যুলুম নির্যাতন করছে যে, বড়দের তো বটেই, ছোটদেরও জীবন তাতে অতিষ্ঠ। আমি আর কী করতে পারি এত দূর থেকে! পুষ্পের পাতায় কিছু সান্ত¡নার কথা লিখে কাশ্মীরের ছোট বড় সবার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করতে চাই। আর চাই, তোমরাও পুষ্পের পাতায় কাশ্মীরের মযলুমানের কথা পড়ে তাদের মুক্তির জন্য, তাদের স্বাধীনতার জন্য...!

কাশ্মীরের অসহায় শিশুদের জন্য তোমাদেরও কলম থেকে, চোখ থেকে একটু যে কালি ঝরে, একটু যেন অশ্রু ঝরে...!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা