শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

মুহাররম ১৪৪৫ হিঃ | পুষ্পকলি

আলী মিয়াঁ রহ.-এর লেখা অবলম্বনে

আমার চোখ আমাকে বলে!

আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি, আমাদের জীবনে চোখ আল্লাহহর অনেক বড় নেয়ামত! বিশ্বাস করি, কিন্তু চিন্তা করি না! আল্লাহর দেয়া এত বড় নেয়ামতের আমরা কোন শোকর আদায় করি না।

 ২

যাদের চোখ নেই তাদের জিজ্ঞাসা করো, চোখের দৃষ্টির মূল্য কত! পৃথিবীতে এত আলো, এত জোসনা! কিন্তু যার চোখে আলো নেই তার জন্য তো গোটা পৃথিবী অন্ধকার! 

 ৩

পৃথিবীতে এত ফুল! গোলাব-বেলী-চামেলী! এত সবুজ! এত পাতা ও পাতাবাহার! নদী ও ঝর্ণা! বৃষ্টি ও রঙধনু! ময়ূরের পেখম! দেখে আমরা কত আনন্দ পাই! আনন্দ পাই কিন্তু শোকর করি না! যার চোখে আলো নেই তার জন্য সুন্দর ফুল, সবুজ পাতা ও পাতাবাহার, বৃষ্টি ও রঙধনু এবং পেখম মেলা ময়ূরের নাচ, সব অর্থহীন।

আমাদের চোখে আলো আছে বলে আমরা লিখতে পারি, পড়তে পারি! চোখের আলো যদি না হতো, আমাদের শিক্ষার জগত, আমাদের জ্ঞানের রাজ্য অন্ধকার হয়ে যেতো! জ্ঞানের আলো থেকে হয়ত আমরা বঞ্চিত হতাম! যাদের চোখে আলো নেই, তাদের অনেকের মনেই রয়েছে জ্ঞানের পিপাসা, কিন্তু... 

আমাদের চোখ আছে, তাই আমরা মাকে, বাবাকে দেখতে পাই! ভাইবোনকে দেখতে পাই! কাছের মানুষ এবং দূরের মানুষ সবাইকে দেখতে পাই! আমাদের কত আনন্দ! যাদের আম্মা আছেন, আব্বা আছেন, ভাই আছে, বোন আছে, বন্ধু আছে, স্বজন আছে, কিন্তুা চোখের আলো নেই! তাদের কষ্ট কত!

 ৬

আযান হলো। মসজিদের পথ আমাদের চেনা আছে! আর চোখে আছে আলো। কত সহজে পথ চিনে আমরা মসজিদে চলে যাই! আমারই চোখের সামনে আমারই ভাই মসজিদে যেতে পারে না বলে,কাঁদে! কে তাকে নিয়ে যাবে মসজিদে! তার তো চোখের আলো নেই! 

এবার শোনো আমার চোখের কথা! একদিন আমি রঙধনু দেখে মুগ্ধ হলাম! আর বললাম, বাহ কী সুন্দর! আমার চোখ আমাকে তিরস্কার করে বললো, ভুলে যেয়ো না, রঙধনুর সৌন্দয এবং চোখের দৃষ্টি আল্লাহর দান! একদিন একটি মন্দ জিনিসের দিকে দৃষ্টি পড়লো! আমি দৃষ্টি ফেরাতে পারলাম না! মন্দ ছিলো, তবে সুন্দর ছিলো। আমার চোখ আমাকে তখন তিরস্কার করে বললো, তাওবা করো! ভুলে যেয়ো না, চোখের দৃষ্টি মন্দ কিছু দেখার জন্য নয়। একদিন একটি অন্ধ ছেলে পথ পার হচ্ছিলো। আমি দেখলাম কিন্তু তার সাহায্যের জন্য এগিয়ে গেলাম না! আমার চোখ আমাকে তিরস্কার করে বললো, যার চোখে আলো নেই, নিজের চোখের আলো দিয়ে তাকে পথ দেখালে না কেন তুমি!একদিন এক তালিবে ইলম আমাকে বললো, আজকের পড়াটা আমাকে পড়ে শোনাও। আমি হাসিমুখে পড়ে শোনালাম। আমরা চোখ তখন আমাকে বললো, তুমি কত ভালো ছেলে!

আমি বললাম, শোকর আলহামদু লিল্লাহ্