ভালোবাসা ও মমতারমধুর জ্বালা!!আমার ছোট্টমণিকে আমি কত ভালোবাসি? আমার কাছে এ প্রশ্নের কোন উত্তর নেই; হয়ত পৃথিবীর কোন মায়ের কাছেই এর কোন উত্তর নেই।আমার ছোট্টমণি, সে তো আমার প্রাণকণিকা! তার প্রতি আমার মমতা ও ভালোবাসা, কী দিয়ে পরিমাপ করবো?!শুধু বলতে পরি, তার হাসি-কান্না দু’টোই আমার প্রাণে তরঙ্গ- জোয়ার সৃষ্টি করে। তুলতুলে দু’টি হাত দিয়ে আমার প্রাণকণিকা যখন আমাকে আদর করে, আমি বিগলিত হই! নিজেকে মনে হয়, পৃথিবীর সবচে’ সুখী, সবচে’ ভাগ্যবতী নারী। এমন কি সে যখন তার মত করে জ্বালাতন করে, দুধের দাঁতে কামড় দেয়, সেই কামড়ে, সেই জ্বালাতনে কী যে সুখ থাকে, ভাষার দীনতা স্বীকার করে বলছি, শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কারো জ্বালাতনও হতে পারে এত মধুর!!যখন সে অভিমান করে, আমার ভিতরে যেন অস্থিরতার ঝড় ওঠে। মান ভাঙ্গানোর, কান্না থামানোর যত উপায় আছে, সব উপায়ে চেষ্টা করি। যখন কান্না থামে, মুখ থেকে হাসি ঝরে, প্রাণ আমার শীতল হয়। তারপরো ইচ্ছে হয়, আবার অভিমান করুক, আবার কাঁদুক। আবার আমি ওর মান ভাঙ্গাই।আমার প্রাণের আকুতি, এখন যেমন আছে, চিরকাল সে তেমনি ছোট্টটি থাকুক। এখন যেমন আমাকে জড়িয়ে ধরে, আমার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ে, চিরকাল তেমনি করুক।কখনো কখনো ওকে বলি, মামণি! তুমি আর বড় হয়ো না। এতটুকুই থাকো চিরকাল, অন্তত আমার চোখে, আমার কাছে। ও তো জানেই না, আমি কী বলি! শুধু অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে, আর আমার মুখে গালে আদর ছড়িয়ে দেয়। আহ, কী শান্তি!!আচ্ছা, ও যখন বড় হয়ে যাবে, হবেই তো! তখন কি ওর সঙ্গে আমার এ মধুর সম্পর্ক, আত্মার এই আত্মীয়তা অক্ষুণœ থাকবে!? ওর অন্তরে আমার প্রতি এ টান, এই আকর্ষণ শিথিল হয়ে যাবে না তো!? আজকের শিশু- হৃদয়ের এ স্বর্গীয় ভালোবাসা নড়বড়ে হয়ে যাবে না তো!? ভাবতেও কেমন জানি, ভিতরটা অবশ হয়ে আসে। ওর সান্নিধ্যই যেন এখন আমার জীবনে পরম আরাধ্য। ওর মুখের হাসি আমাকে যেন শিশির-¯œাত করে রাখে। ওর আধো আধো বোল আমার হৃদয় ও আত্মাকে যেন আচ্ছন্ন করে রাখে! হাঁটি হাঁটি পা পা করে আমার কাছে ওর আসা, আমার কোলে ঝঁপিয়ে পড়া, আদুরে গলায় আব্দার করা, এমনকি চোখ পাকিয়ে আমাকে শাসন করা, আর আমি ভয় পেলে ওর খুশী হওয়া, এ-ই তো এখন আমার জীবন! এগুলো ছাড়া, বাঁচবো কীভাবে কল্পনাই তো করা যায় না! ... উম্মে হাবীবা তামান্না ০ প্রিয় সম্পাদক ভাইয়া!আপনি আমাকে বলেছেন (৩য় প্রকাশনার ৫ম সংখ্যার ৭৯ পৃষ্ঠায়), তুমি স্বপ্ন দেখবে, আমি বাধা দেবো কেন? আমি শুধু বলবো...!০০ যে কথাটি বলিনি তা কি শুনতে পেয়েছো?!০ আরো বলেছেন, ‘সামনেও তোমার লেখা আশা করি।’ তো আপনি যখন আশা করেন তখন আমি আপনার আশা ভাঙ্গবো কেন? ০০ ভেঙ্গে তো বসেই আছো! নইলে দূরের ছেলেরা পাঠায় এত এত লেখা, আর তুমি কিনা পাঠিয়েছো মাত্র এক’টি ছত্র!০ যতক্ষণ পারবো ততক্ষণ লেখা পাঠাতেই থাকবো ০০ এবং অবশ্যই প্রতিটি লেখা যেন হয় আগেরটির চেয়ে উন্নত!০ এবং আমাদের সবার পুষ্পের ঘ্রাণ গ্রহণ করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ!মাহমূদুল হাসান বিন মুজীবমাদরাসাতুল মাদীনাহ দ্বিতীয় বর্ষ০০ এই দীর্ঘ জীবনে কম তো দেখা হলো না! চলো, তোমাকেও না হয় একবার দেখি!!
তখনো যেন বেঁচে থাকে পুষ্প!আকাশ ঘনকালো মেঘে ছেয়ে যাবে। ঝড় ওঠবে সাগরের বুকে। ঢেউ-দানবের নির্মম আঘাতে ডুবে যাবে মাঝির ভাঙ্গা মাস্তুলের পালছেঁড়া নৌকা। কিন্তু এ ঝড়, এ ধ্বংসলীলা চিরদিনের জন্য নয়। হবে সময়ের পালাবদল। শুরু হবে বর্ষার রিমঝিম একটানা সুর। জল পড়বে, পাতা নড়বে। তখনো যেন বেঁচে থাকে আমার প্রিয় পুষ্প!আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ হাসবে। পুকুরজলে দেখা যাবে চাঁদের প্রতিবিম্ব। দুধে ধোয়া জোসনায় ¯œাত হবে পৃথিবী। সবকিছু মনে হবে সুন্দর এক স্বপ্ন! কিন্তু এই চাঁদ, এই জোসনা, এই শুভ্র মেঘের আকাশ, এই শিউলী ফুলের হাসি চিরকালের জন্য নয়। আসবে পাকা ধানের নতুন আমেজ, নতুন ঘ্রাণ। তখনো যেন বেঁচে থাকে আমার প্রিয় পুষ্প!হেমন্ত আসবে। নবান্নের উৎসবে মেতে ওঠবে গ্রামবাংলা। ... তবে কৃষক-বধুর এ আনন্দ চিরকালের জন্য নয়। হারিয়ে যাবে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের ঝাপটায়। তখনো যেন বেঁচে থাকে আমার প্রিয় পুষ্প! ভোরের কুয়াসা! নরম রোদে দুর্বাঘাসে ঝলমল করা শিশির এবং খেজুরের কাঁচা রস! হাড়কাঁপানো শীতকেও এগুলো করে তোলে কত মধুর! কিন্তু তা চিরকালের জন্য নয়। শীতও হারিয়ে যাবে ঋতুর পালাবদলের অমোঘ নিয়মে। তখনো যেন বেঁচে থাকে আমার প্রিয় পুষ্প! বসন্ত আসবে। বাগানে বাগানে ফুলের হাসি ফোটবে। কোকিলের কণ্ঠে শোনবো বসন্তের গান! এ বসন্ত চিরকালের জন্য নয়, আবার আসবে ফিরে কালবৈশাখির ঝড়। তখনো যেন বেঁচে থাকে আমার প্রিয় পুষ্প!একদিন আমিও থাকবো না। আমারও জন্য বেজে ওঠবে বিদায়ের করুণ সুর। হয়ত আমার ভালোবাসার স্মৃতি হয়ে পুষ্পের পাতায় জ্বল জ্বল করবে আমার এ সামান্য লেখা। আমি যখন থাকবো না তখনো যেন বেঁচে থাকে আমার প্রিয় পুষ্প! ওমায়র বিন রফীক,মুহম্মদপুর, ঢাকা০০ তোমার এ সুন্দর লেখাটির জন্য তুমি এবার পুষ্পের তৃতীয় অতিথিসম্পাদক।
পুষ্প এবং আমি১০/৭/৩৯ হি. আজ ভাইয়া পুষ্প এনেছেন। যখন পুষ্প আসে, আমাদের মনে আনন্দের বান ডাকে। কার কাছে পুষ্প কেমন, জানি না; আমার কাছে পুষ্প পুষ্পের মতই প্রিয়। শুনেছি, ভালোবাসার চোখে যা দেখে তাই মনে হয় পৃথিবীর সেরা সুন্দর। হতে পারে পুষ্পের প্রতি ভালোবাসার কারণেই পুষ্প আমার কাছে এত সুন্দর। পুষ্পের প্রতিটি লেখা আমার হৃদয়কে কোমলভাবে স্পর্শ করে। পুষ্পের প্রতিটি লেখা আমাকে আলাদা সুবাস দান করে। পুষ্পের সান্নিধ্যে আমার সমগ্র সত্তা যেন সুবাসিত এবং আলোকিত হয়। আমাদের জীবনের বসন্ত-উদ্যানে পুষ্প যেন চিরকাল সজীব থাকে ১২/৭/৩৯ হি.কিছুদিন ধরে আম্মু অসুস্থ। আজ কিছুটা সুস্থ আছেন। আম্মু অসুস্থ হলে মনটা আমার এত বিষণœ থাকে যে, কিছু ভালো লাগে না। সবকিছু অন্ধকার মনে হয়। কোথাও যেন কোন আলো নেই। কোথাও যেন কোন ছায়া নেই। আজ আম্মুকে সুস্থ দেখে আমারও মনের বিষণœতা কিছুটা দূর হয়েছে। আল্লাহ, তুমি আম্মুকে দ্রুত সুস্থ করে দাও।উম্মে আতীকা, তামীমা
রো য না ম চা র পা তালাবীবার রোযনামচা ২৯/৬/৩৯ হি, ১৬/২/১৮ খৃ. শুক্রবারবই আমার ভালোবাসা, বই ছাড়া জীবন আমার কষ্টে ভরা। কত দিন হয়ে গেলো বইয়ের সঙ্গ থেকে আমি বঞ্চিত। আগের বাসা ছেড়ে নতুন বাসায় আসতে হয়েছে। বইগুলো আনা সম্ভব হয়নি। আব্বুর পক্ষে এখন সেখানে যাওয়াও সম্ভব না। কারণ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর পক্ষে কথা বলার অপরাধে তিনি আজ সময় ও সমাজের সহিংসতার শিকার।...৩/৭/৩৯ হি. ২০/২/১৮ খৃ. মঙ্গলবারআমার ছোট চাচা সম্পাদক ভাইয়ার ছাত্র। তার কাছ থেকে তিনি আর যাই শিখেছেন, কানটানাটা অতি উত্তমরূপে রপ্ত করেছেন। তবে তাঁর পড়ানোর পদ্ধতিটা এত আনন্দদায়ক যে, কানটানার কষ্টটা ভুলতে সময় লাগে না। ...(এখানে সম্পাদক ভাইয়ার স্থলে আদীব হুযূর-এ পরিচয়টা উল্লেখ করা সঙ্গত ছিলো। যেখানে যে বিষয় আলোচিত হবে সেখানে ঐ বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পরিচয় উল্লেখ করা কর্তব্য।)০০ লাবীবা, এতদিন কোথায় ছিলে তুমি? পুষ্পের পাতায় এত বিলম্বে দেখা দিলে যে! তোমার লেখা প্রশংসার যোগ্য। পুরো একমাসের রোযনামচা পাঠিয়েছো ছোট হরফে টাইপ করা ১৯ পৃষ্ঠাজুড়ে। (তুমি তো আমার ছেলেদের রীতিমত লজ্জায় ডুবিয়ে দিয়েছো, তবে কিনা ওরা ভালো ‘সাঁতার’ জানে! অর্থাৎ ডুবে যাওয়ার মত লজ্জা ওরা পায় না।)আমার সাধ্য কি সবগুলো লেখা প্রকাশ করি! ছেলেরা ভাববে, মেয়ে বলে ...।তোমার ছোট চাচা আমার ছাত্র হলে একটা পুরস্কার তার প্রাপ্য। কারণ তোমাদের তিনি আন্তরিকভাবে সময় দিচ্ছেন।তাকে কে যেন জিজ্জাসা করেছে, ‘আপনি কি ঈদের জুতা কিনেছেন? তিনি কী উত্তর দিয়েছেন? না, আমি পায়ের জুতা কিনেছি! উপভোগ করার মত বিচক্ষণতাপূর্ণ উত্তর। আমার পক্ষ হতে তাকে একটা ধন্যবাদ। আশা করি, আবার লেখা হবে, আবার দেখা হবে।আকাশ কত সুন্দর!আকাশের মত সুন্দর আর কী আছে সৃষ্টিজগতে! হাঁ, সৃষ্টি মানেই সুন্দর কিছু! তবে তার মধ্যে আকাশ সত্যি অপূর্ব! অনন্য!! নীল আকাশে যখন পাখির ঝাঁক ডানা মেলে সুন্দর এক ছন্দ তৈরী করে উড়ে যায়! মনে হয় তাকিয়েই থাকি! সন্ধ্যার আকাশে পশ্চিম দিগন্তে যখন লাল আভা ছড়িয়ে পড়ে! কোন তুলনা আছে এ সৌন্দর্যের!! আকাশে যখন মেঘ জমে ...!বৃষ্টিধোয়া আকাশে যখন রঙধনু সাতটি রঙের পসরা সাজায়! কিংবা পূর্ণিমার রাতে জোসনার আকাশ!! ...মুগ্ধ দৃষ্টিতে আমি যখন আকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করি, মনে হয়, একটা কিছুর আড়াল থেকে আরেকটি মুগ্ধ কণ্ঠস্বর শুনতে পাই! কার কণ্ঠস্বর? কী তার বক্তব্য? আমারই ভিতরের কেউ নয় তো?! সেও কি আকাশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়?! কিংবা সেকি বলে আমাকে, বাইরে আকাশে আর কতকাল!! এবার ফিরে তাকাও তোমার ভিতরে তোমার হৃদয়ের আকাশপানে! দেখো, কত সৌন্দর্য তার! দেখো, হৃদয়ের সৌন্দর্যের কাছে আর সব সৌন্দর্য কত ম্লান! (উসাইদ আল মাহদী, মাদরাসাতুল মাদীনাহ)
শুকনো পাতা,সবুজ পাতা!লেখার নেই যে দেখা!!প্রতিদিন লিখতে বসে লেখার কিছু পাই না। তবু চুপ করে অনেক সময় ধরে বসে থাকি, যদি কোন লেখার দেখা পাই। আজও খাতা কলম নিয়ে বসে আছি অনেক্ষণ হলো। কিন্তু কোন লেখা আসছে না। বড় আপু বললেন, এই যে খাতা-কলম নিয়ে বসে আছো, অথচ লেখার নেই দেখা, এটাই লোখো না! ... ভালো বুদ্ধি তো! তো সেটাই লিখে রাখলাম। (৬/৪/৩৯ হি.)একটু আগে গাছে পানি দেয়ার জন্য বারান্দায় গেলাম। পুরো বারান্দা কামিনী ফুলের ঘ্রাণে...। ছোট্ট গাছটাতে অনেক ফুল ফুটেছে। সাদারঙ্গের ছোট ছোট কী সুন্দর ফুল! কয়েকদিন আগে ভাইয়া গাছটি এনেছেন। গাছের প্রতি ভাইয়ার যত্ন ও মমতা দেখলে খুব ভালো লাগে। আল্লাহ ভাইয়াকে উত্তম বিনিময় দান করুন, আমাীন।(৭/৪/৩৯ হি.) উম্মেহানি তাক্বিয়া, গেন্ডারিয়া, ঢাকা
আমার ছোট বোন প্রতিদিন রোযনামচা লেখে। নিয়মিত রোযনামচা লিখে সে এখন আমার চেয়ে ভালো লেখা শিখে ফেলেছে। ছোট বোনের উন্নতি দেখেও রোযনামচা লেখার প্রতি আমার আগ্রহ হয় না। বড় ভাইয়ার কানমলা না হলে রোযনামচা লেখায় রীতিমত ফাঁকি দেই! (উসামা, ফরিদপুর) ০০ কাকে? বড় ভাইয়াকে, না নিজেকে?!আ মা র ক বি তাসম্পাদক দাদু, সালাম। আশা করি পুষ্পের নাতি-নাতিনদের নিয়ে সুখেই আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আল্লাহ আমাকে অনেক ভালো রেখেছেন। আচ্ছা দাদু ভাই, কবিতা লেখা কি ভালো না! আমি কবিতা লিখতে ভালোবাসি, তাই ওরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। আমি ওদেরকে বলি কী! তোমরা হাসতে পারো, কিন্তু সম্পাদক-ভাইয়া আমার কবিতা দেখে খুশী হবেন। দাদু, এই যে দেখুন আপনার ছোট্ট নাতনীর ছোট্ট একটি কবিতা-শিশুর হাতে যখন/থাকবে কলম-খাতা/তখন কেন কুড়ায় তারা/ ঝরা শুকনো পাতা!/ কে দেবে জবাব, কে নেবে দায়?!/চালায় কেন ভেন-রিক্সা/ চালায় কেন ঠেলাগাড়ী/সারাটা দিন পায় না খাবার/ঘোরে শুধু বাড়ী বাড়ী/ কে দেবে জবাব, কে নেবে দায়?!/ সবাই মিলে এসো আজ/ হাতে হাত রেখে শপথ করি/পথ-শিশুদের চলার পথে/ মোরা জ্ঞানের মশাল ধরি!(সুমাইয়া বিনতে শামসুদ্দীন/ আয়েশা সিদ্দীকা মহিলা মাদরাসা/৪৮ বাঘমারা, সদর, মোমেনশাহী)০০ বাহ, তুমি দেখি, রীতিমত একখান কবিতা ‘শিকার’ করে ফেলেছো! অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। তুমি হলে গিয়ে ‘বাঘমারা’ মেয়ে!!তবে লেখা শেখার জন্য গদ্যই উপযুক্ত মাঠ। ওখানে ছন্দের বাঘ-ভল্লুক নেই! আছে শুধু সবুজ বনে হরিণের মত ডাগর ডাগর চোখের সুন্দর সুন্দর শব্দ! একটা করে শব্দ কলমের নিব দিয়ে কোমল করে তুলে আনো, আর পাশাপশি সাজিয়ে যাও, ব্যস, হয়ে গেলো সুন্দর লেখা!রাতের দু’টি রূপ¯্রষ্টার কুদরতের নিদর্শনরাত দু’টো। বাইরে কী সুন্দর শান্ত পরিবেশ! এমনিতেই যেন মন ভালো হয়ে যায়! পথে মানুষ -জন নেই, গাড়ীঘোড়াও নেই। সারি সারি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। একফোঁটা বাতাসও তাদের গা ছুঁয়ে যায় না! তাই একটা পাতাও নড়ে না। আকাশে চাঁদ নেই,তারা আছে। তবে তারাদের ঝিলিমিলি নেই। যদি জোনাকির আলো থাকতো! তাও নেই। তবু মনে হলো আজকের রাত কত না সুন্দর! তাতেও বেশ স্পষ্ট অনুভব করা যায় ¯্রষ্টার প্রতি সৃষ্টির নীরব সমর্পিতি!! জোসনাধোয়া রাত যেমন সুন্দর! তারাদের ঝিলিমিলি এবং জোনাকির আলোকসজ্জা যেমন সুন্দর তেমনি সুন্দর মেঘলা আকাশের মেঘলা রাতও। কারণ দু’টোই আমাকে বলে ¯্রষ্টার কুদরতে কথা! জোসনাধোয়া রাতে এবং মেঘঢাকা রাতে দৃশ্যের আড়াল থেকে আমি শুনতে পাই একটি বাণী, ‘আমার ইচ্ছায় রাত হয় জোসনা -ধোয়া; আমরাই ইচ্ছায় রাত হয় মেঘে ঢাকা। তোমার কর্তব্য শুধু আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা নিবেদন করা, রাত যখন মায়াবী হয় তখনো; রাত যখন মায়াহীন হয় তখনো। ১৯ - ১১ - ৩৯ হি.(মুহাম্মাদ আলআমীন, আজমপুর, দারুল উলূম উত্তরা, ঢাকা)মাদরাসা আমারপ্রাণের চেয়ে প্রিয়মাদরাসা! শান্ত, প্রশান্ত, ভাবগম্ভীর একটি শব্দ। একটি আদর্শ, একটি জীবন-দর্শনের উজ্জ্বল শিরোনাম। বড়দের বলতে শুনেছি, ‘ম্যদর্যসা হ্যয় ওয়াত্যন আপনা’।শিক্ষাঙ্গন বলি, আর বিদ্যাঙ্গন বলি, সেখানে বহু ছাত্র বাস করে, আর বাস করেন কিছু শিক্ষক। তাদের চিন্তা-চেতনা, তাদের আচরণ-উচ্চারণ রয়েছে সবার সামনে। তাদের জীবনের উজ্জ্বল দিক এবং ‘অনুজ্জ্বল’ দিক দু’টোই পরিষ্কার। মাদরাসাও একটি শিক্ষাঙ্গন। এখানেও রয়েছে শিক্ষা, দীক্ষা এবং জীবনের প্রতি স্বতন্ত্র একটি দৃষ্টিভঙ্গি। এখানেও বাস করে বহু ছাত্র, যাদের বলা হয় তালিবে ইলম। এখানেও বাস করেন কিছু শিক্ষক, যাদের বলা হয়, ‘মু‘আল্লিম’। তাদেরও রয়েছে নিজস্ব চিন্তা-চেতনা, রয়েছে আচারণ ও উচ্চারণ। তাদেরও জীবনে রয়েছে উজ্জ্বল এবং অনুজ্জ্বল দু’টো দিক। ওখানে এবং এখানে তাহলে পার্থক্য কোথায়? অনুপাতে! এখানে সবার পোশাক সাদা, তবু দাগ দেখা যায় কম, খুবই কম। এটা কারো দাবী নয়; এটা জীবনের বাস্তবতা।বড় বেশী ব্যথিত হই যখন দেখি, কেউ মাদরাসা সম্পর্কে, এখানকার সাদা পোশাক সম্পর্কে যুক্তিহীন কথা বলে! হৃদয়হীন মন্তব্য করে!!আমাদের বড় ‘দুর্বলতা’ এই যে, আমাদের শিক্ষা, দীক্ষা, আমাদের জীবন-দর্শন আমাদের, প্রতিবাদের পরিবর্তে ধৈর্য ও সহনশীলতার পথ দেখায়। মাদরাসায় যারা দিন-রাত যাপন করে, ভুলে গেলে তো চলবে না, তারাও মানুষ এবং সমাজেরই অংশ। একটু চিন্তা করলেই হয়, তারপরো তাদের সাদা লেবাসে এত কম দাগ কেন? কীভাবে তা সম্ভব?সততার কারণে হোক, বা সাহসের অভাবে, কিংবা অযোগ্যতার কারণে, কারা দুর্নীতি থেকে মুক্ত? কারা মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্ত? ¯্রষ্টার ‘শাস্তি-পুরস্কার’কে ভয় করে এখনো কারা চেষ্টা করে পাপের পথ থেকে দূরে থাকার?আমাদের নবী বলেছেন, আমি শিক্ষক (মু‘আল্লিম)রূপেই প্রেরিত হয়েছি! আজকের যুগে কারা সেই নবীর প্রতিনিধিত্ব করার কিছুটা হলেও হকদার?! কারা আজ একটু হলেও বলতে পারে, আমরা ছুফ্-ফার উত্তরসূরী?!কামনা করি, আমাদের বিবেক যেন জাগ্রত হয়! সবার মধ্যে শুভবুদ্ধির যেন উদয় হয়। নিজেদের ত্রুটি সংশোধনে আমরা যেন সচেষ্ট হই। অন্যের ত্রুটি সম্পর্কে আমরা যেন সহানুভূতিশীল হই।(ইকবাল জাবের,আজমপুর দারুল উলূম, উত্তরা, ঢাকা)ঁজানালার পাশে বসে আছি। বৃষ্টিভেজা বাঁশঝাঁড়টাকে লাজুক লাজুক মনে হচ্ছে। একটু দূরে একটি ফুলবাগান। বিভিন্ন প্রকার গাছ ও তার সবুজ পাতাগুলো জবুথবু হয়ে আছে। দু’য়েকটা জবাফুল বাগানটাকে যেন লাল করে রেখেছে। গোলাপের ভেজা পাপড়িগুলোকে আজ বড় বেশী ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে। কয়েকটি বেলীফুল ফুটে আছে, যেন কতগুলো মুক্তো বাতাসে দুলছে। বেলীগাছের ডালগুলো যেন তাদের ভেজা শরীর এলিয়ে দিচ্ছে সখীর গায়ে। সবার উপরে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে গন্ধরাজ। আজকের বিকেলটা আমার কাছে বড় পবিত্র মনে হচ্ছে। সেই পবিত্রতা যেন আমার হৃদয়কেও স্পর্শ করছে।২৬/৮/৩৯ হি. ১৯/৭/১৮ ঈ. বৃহস্পতিবারবিনতে আব্দুল বাসেত, সতাল তারাপাশা, কিশোরগঞ্জমাসুম বিল্লাহ সালিম/দড়াটানা মাদরাসা, যশোর০০ তোমার কয়েকদিনের রোযনামচা পেয়েছি। আমার মনে হয়, তোমরা প্রায় সবে একই দুর্বলতায় আক্রান্ত। অর্থাৎ রোযনামচা তোমরা নিয়মিত লেখো না। যত্ন ও মমতার সঙ্গে লেখো না। পুষ্পে প্রকাশিত হবে এ আশায় তাড়াহুড়া করে কিছু লিখে পাঠিয়ে দাও। তোমাদের লেখা দেখে যে ধারণা করছি তা যদি সত্য হয় তাহলে বলতেই হয়, জীবন গড়ার যে সাধনা, সেখানে ফাঁক-ফাঁকির সুযোগ নেই। বাকি আল্লাহ হাফেয।তোমার গলায় কাঁটা বিঁধেছে শুনে দুঃখিত হয়েছি এবং দু‘আ করছি; আল্লাহ যেন দ্রুত আরোগ্য দান করেন। তুমি অনেক মূল্যবান কথা লিখেছো, ‘সুস্থতা আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত। অসুস্থতা ছাড়া সুস্থতার নেয়ামত বোঝা যায় না।’ সত্য কথা, তবে আরো বড় সত্য এই যে, আল্লাহর পক্ষ হতে তাওফীক না হলে অসুস্থতার মধ্যেও মানুষ গাফলত থেকে উদ্ধার পায় না। কামনা কনি, গাফলাত থেকে সবাই যেন মুক্ত থাকতে পারি। (ওমর ফারূক বিন রূহুল আমীন)বসন্ত এবং ...যখন বসন্ত আসে! প্রকৃতি যখন ফুলে ফুলে বসন্তের সাজ ধারণ করে, সব কিছুতে আমি অনুভব করি আমার আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন! সারা পৃথিবীতে কত ফুল! কত বর্ণ! কত সুবাস!! এগুলো কি প্রমাণ করে না, বসন্তের এ পুষ্পসৌন্দর্য পরম সুন্দরের সৃষ্টি?!বসন্তের সৌন্দর্য মনকে এমন-ভাবে ছুঁয়ে যায় যে, ইচ্ছে করে মহান ¯্রষ্টার উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতার সিজদায় লুটিয়ে পড়ি।বসন্ত আমার হৃদয়ে নতুন করে জাগিয়ে তোলে দূর শৈশবের হাসি-আনন্দের কত সব স্মৃতি!! কোকিলের কুহু কুহু ডাক শুনে খুঁজে বেড়াতাম, কোথায় লুকিয়ে আছে বসন্তের কোকিল!তানবীর হাসান,বাইতুস-সালাম, উত্তরা, ঢাকা০০ তোমার লেখা ভালো। নিয়মিত -অর্থাৎ নিয়মিত- লেখার চর্চা করো। গভীর মনোযোগের সঙ্গে পুষ্প পড়ো এবং অধ্যয়ন করো। একবার, দু’বার, বারবার, বহুবার। পুষ্পে বিভিন্ন ধরনের লেখা আছে, সেগুলো অনুসরণ করে তুমি কিছু লেখার চেষ্টা করো, নিয়মিত চেষ্টা করো।আমি তোমার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।
২৩/৯/৩৯ হি.আজ রোযনামচা লিখতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না। কিন্তু আমার ‘নাছোড় ভাইজান’ কানমলা দিয়ে বসিয়ে দিলেন, লেখো রোযনামচা, নইলে আরো শক্ত কানমলা... তো কানমলা থেকে বাঁচার জন্য শেষ পর্যন্ত রোযনামচা লিখতেই হলো! ০০ কানমলা খাওয়া রোযনামচা! তাই তো তার এমন করুণ দশা!!০ সম্পাদক নানা! ময়ূরের পেখম আমার খুব প্রিয়০০ আমার তো অতি প্রিয়!০ তাই আমার সম্পাদক নানার জন্য একটা ময়ূরের পেখম হাদিয়া পাঠালাম। আপনি কি গ্রহণ করবেন! (উমামা, ফরিদপুর)০০ শুধু কি গ্রহণ! আমি তোমার ময়ূর-পেখম হৃদয় দিয়ে বরণ করেছি। এটা তো আমার সম্পাদকজীবনের বড় দুর্লভ ...!! কামনা করি, তুমি বড় হও! তুমি সুখী হও! সুখ যেন উপচে পড়ে তোমার জীবনের পেয়ালা থেকে এবং কলম ও কলবের ঝর্ণা থেকে!
কেন লেখা শিখতে পারি না?!প্রিয় ... তুমি এবং তোমরা প্রায় আক্ষেপ করো, কেন লেখা শিখতে পারি না। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এর উত্তর আমি দিয়েছি। খুব একটা কাজ হচ্ছে বলে মনে হয় না।তোমার লেখাটা আমার মনে হয়, সেই বহুল আলোচিত প্রশ্নের একটা আদর্শ উত্তর। তাই তোমারই হস্তাক্ষরে লেখাটা এখানে ছাপা হলো। সঙ্গত কারণেই তোমার নাম প্রকাশ করা হলো না। আশা করি হস্তাক্ষর দেখে নিজেকে খুঁজে পাবে।এত কিছুর পরো আমি চাই না তোমাকে নিরুৎসাহিত করতে। শুধু চাই আঘাত দিয়ে হলেও গাফলতের বেহুঁশি থেকে (প্রথমে লিখতে চেয়েছিলাম, ‘গাফলতের ঘুম থেকে’, তারপর মনে হলো, ঘুমের পর্যায় অনেক আগেই পার হয়ে গিয়েছে তোমাদের; এখন তোমরা পৌঁছে গিয়েছো বেহুঁশির পর্যায়ে।)০ অনেক দিন পর রোযনামচা নিয়ে বসলাম...০০ তোমার সরল স্বীকারোক্তির জন্য ধন্যবাদ। নিজের অজান্তেই মানুষের মুখ থেকে, কলম থেকে এমন কিছু শব্দ বের হয়ে যায়, যার দর্পণে তার প্রকৃত ছবিটা প্রকাশ পেয়ে যায়। দেখো, নিজের অজান্তেই তুমি লিখেছো, ‘রোযনামচা নিয়ে বসলাম’, ‘রোযনামচা লিখতে বসলাম’ নয়। আসলে নিজের অজান্তেই নিজের সামনে তুমি ‘শব্দের আয়না’ তুলে ধরেছো, তাতে তোমার আসল চেহারাটা প্রকাশ পেয়ে গেছে। ‘অনেক দিন পর রোযনামচা নিয়ে বসলাম’ এর মধ্যে রোযানামচার প্রতি দীর্ঘ দিনের একটা গাফলত, উদাসীনতা ও আত্মবিস্মৃতির আবহ রয়েছে। এবং সেটাই হচ্ছে রোযনামচারসঙ্গে তোমার আচরণের প্রকৃত অবস্থা। পক্ষান্তরে ‘অনেক দিন পর রোযনামচা লিখতে বসলাম’এর মধ্যে দীর্ঘ বিরতির বিষয়টা থাকলেও গাফলত ও বে-খবরির’ আবহটা নেই।তুমি কিন্তু এত সূক্ষ্ম পার্থক্যের কথা চিন্তা করে লেখোনি, কিন্তু শব্দের দর্পণ তোমার অজান্তেই তোমাকে অনাবৃত করে দিয়েছে!‘তবে কী লিখবো, খুঁজে পাচ্ছি না, বিকেলের আমভোজের কথাই কেবল মনে পড়ছে।’তাই! এটা কি সত্য, না কথার কথা? তুমি একজন তালিবে ইলম, সারাটা দিন ‘আমাভোজ’ ছাড়া কিছুই করোনি! কিছুই ভাবোনি, পরিবার, সমাজ, দেশ, জাতি ও মুসলিম বিশ্ব সম্পর্কে!! এমনকি নিজের ভাবিষ্যত সম্পর্কে!!পুষ্পের সান্নিধ্যও গ্রহণ করোনি, অন্তত কিছু সময়ের জন্য!!‘দুষ্টুমি আড্ডা’ শব্দটি নিজেদের সম্পর্কে ব্যবহার করতে কিছুমাত্র কি বাঁধেনি রুচিতে, বিবেকে!!দেখো, সামান্য একটু আমের ভর্তা খাওয়ার জন্য কত পরিশ্রম করতে হয়েছে তোমাকে, আর তুমি ‘উজ্জ্বল একটা ভবিষ্যৎ’ পেতে চাও এমন নিষ্ক্রিয় ...!! এটা কি নিজের সঙ্গে নিজের তামাশা, না নিজের প্রতি নিজের অবিচার?আমভোজের জন্য সিড়িতে বসেছো, ভালো কথা, চন্দ্রবিন্দু নেই কেন? খুব ভাঙ্গা ছিলো সিঁড়িটা?‘প্রশান্তিতে দিল সূকুন ও ইম্মিনান হয়ে গেলো।’এখানে প্রশান্তি ও দিল একসঙ্গে কীভাবে এলো সে প্রশ্ন তুলতে চাই না। কারণ এটা রোযনামচা। আর রোযনামচা হচ্ছে তাৎক্ষণিক লেখা। তাতে এরূপ ত্রুটি থাকতেই পারে। যদিও প্রশ্ন করা যায়, পুষ্পের কাছে পাঠানোর সময় সম্পাদনা করা হয়নি কেন? থাক সে প্রশ্ন। আমাকে শুধু যুক্তিসঙ্গত একটা ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাও, সুকূন’এর টানটা কোথায়, স-এর মধ্যে, না ক-এর মধ্যে? আর ‘ইম্মিনান’ জিনিসটা কী রে ভাই, ‘ইতমিনানের’ ছোট ভাই?!কাফিয়ার একজন তালিবে ইলমের জন্য গাফলতের কত নম্বর বিপদসঙ্কেত এটা?তুমি ‘কৌতুহল’ লিখেছো, দয়া করে শব্দটির বানান সম্পর্কে একটু খোঁজ নেবে?‘আমার এ সামান্য লেখাটির যদি ভূল ধরিয়ে দিয়ে...’দু’কান ধরে ‘উঠবস’ করো, ভুলটাধরিয়ে দিচ্ছি।যদি পুষ্পে প্রকাশ করা হয়, আমি আপ্লুত হবো, কৃতজ্ঞ থাকবো।ব্যস, শুধু ‘লেখা ও নাম’ ছাপার অক্ষরে দেখার লিপ্সা!!হয়ত নিয়মিত রোযনামচা লেখার আগ্রহ জাগবে।তারপরো ‘হয়ত’! বয়েই গেছে আমাদের, তোমার আগ্রহকে ‘তোয়াজ’ করে জাগাতে!! তার চেয়ে যাও, ঘুমিয়ে থাকো।