প্রিয় ইবরাহীম হাসান, তুমি উপরের শিরোনামে তারিখ ছাড়া যে রোযনামচা পাঠিয়েছো তা যথেষ্ট ভালো। রোযনামচার মধ্যে তারিখ ভুলে যাওয়া অবশ্য ভালো অভ্যাস নয়। তুমি লিখেছো ‘মসজিদের বাগানে আমার নিজের হাতে লাগানো গোলাবগাছটি, প্রতিদিন যাই গোলাবগাছটির কাছে। আজও গিয়েছিলাম দুপুরে। ক’দিন থেকেই ফুটে আছে লাল টকটকে একটি গোলাব।
গোলাবটির কাছে গিয়ে যখন দাঁড়াই, আমি কেমন জানি হয়ে যাই! পাপড়িগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে আদর করি; কাছে টেনে ঘ্রাণ নিই; আলতো করে চুমু খাই! আমার মন বলে, গোলাব ফুলটিও তার ‘গোলাবহৃদয়’ দিয়ে আমার এ কোমল ভালোবাসা অনুভব করে। ...
তুমি লিখেছো, ‘ডাল ছেঁটে না দিলে ফুল বড় হয় না, এ অজুহাতে অনেকগুলো কলিসহ বেশ কিছু ডাল ছেঁটে দেয়া হয়েছে।’ তাতে তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে।
শুনে তো আমারও কষ্ট হচ্ছে। তবে যদ্দুর জানি, যখন কলি আসে তখন ডাল ছাঁটার সময় নয়। কেন এমন করা হলো, বুঝতে পারছি না। নাকি আমার জনাটাই ভুল!!
তুমি লিখেছো, ‘তবু ব্যথিত হৃদয়ের সান্ত¦না হয়ে এই ফুলটি ফুটেছিলো উপরের ডালে। আরো কয়েকটি ডালে আরো কিছু কলি এসেছে। অনেক সুবাস ও সৌন্দর্যের সম্ভাবনা নিয়ে কলিগুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে, এরই মধ্যে আজ শুনতে পেলাম মহাদুঃসংবাদ। সেই একই অজুহাতে একটি ডাল রেখে অন্যসব ডাল নাকি ছেঁটে দেয়া হবে!
শুধু শুনতে পেলাম বললে কম বলা হবে। সংবাদটা যেন গলিত সীসার মত আমার কানে ঢেলে দেয়া হলো! .... আল্লাহ আমার প্রিয় গাছটিকে হেফাযত করুন সকল বিপদ থেকে, সকল অনিষ্টকারী হাত থেকে।’
তোমার মনের প্রতিক্রিয়া প্রকাশের এ অসংযম কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটাকে আর যাই হোক, গরম সীসা ঢেলে দেয়ার মত কিছুতেই বলা যায় না। তাছাড়া তুমি যখন মাদরাসার বগানে চারা রোপণ করেছো তখন তুমি তো মেনেই নিয়েছো, বাগানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যিনি আছেন তার সিদ্ধান্ত তুমি অনুসরণ করবে!
এখান থেকে আশা করি, তুমি বুঝতে পারবে, যখন আমাদের ইলমি বাগানের কোন কলি, প্রস্ফুটিত হওয়ার আগে এভাবে নষ্ট হয়ে যায় কারো না কারো ভুল আচরণের কারণে তখন আমাদের মনে ....
প্রিয় শাব্বির আহমদ! যেহেতু তুমি আমাদের এবারের অতিথি-সম্পাদক সেহেতু তোমার লেখাটি নিয়ে আলাদা কিছু কথা
(কী লিখবো?) অর্থাৎ লেখার বিষয়বস্তু তোমার জানা নেই। (কীভাবে লিখবো হৃদয়ের না বলা কথাগুলো) অর্থাৎ লেখার বিষয়বস্তু তোমার জানা আছে! তাহলে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রশ্নের মধ্যে স্ববিরোধ হলো না?!
(হৃদয়ের এ্যলবাম/ ক্যানভাস) এগুলো তরল অভিপ্রকাশ, সাহিত্যের নামে সস্তা ও তরল লেখা পড়লে এ অবস্থাই হয়। তুমি লিখতে পারতে, ‘কত ছবি এঁকেছি তোমাকে নিয়ে/তোমার কত ছবি এঁকেছি, আমার হৃদয়ের অঙ্গনে/দিগন্তে/সবুজ পাতায়/ পাপড়িতে/
(শুধু তোমার আসার অপেক্ষায়) যার আগমনের জন্য তোমার অন্তরে এত ব্যাকুলতা তার জন্য তুমি অপেক্ষায় থাকবে কেন? প্রতীক্ষায় থাকবে না কেন?
(সন্ধ্যা হয়ে এলো। রাত গভীর হলো। কিছুক্ষণ পর ধ্বনিত হলো পাখীর মধুর গান) রাত গভীর হওয়ার পর বুঝি পাখীরা গান গায়! (তোমার আলোয় আলোকিত হলো আমার হৃদয়ের যত ছিলো অন্ধকার) আলো দ্বারা অন্ধকার আলোকিত হয় না, দূর হয়।
সবচে’ দুঃখজনক হলো ছোট্ট একটা লেখায় বানানভুলের ছড়াছড়ি!
নির্ভুল বানান হলো লেখার প্রথম স্তর, যা সুন্দরভাবে অতিক্রম করা প্রত্যেক নবীন লেখকের প্রাথমিক দায়িত্ব।