শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

আল কুদসসংখ্যা (৩/২) | আল কুদসসংখ্যা (বিশেষ).

আলআকছা কেন গেলো আমাদের হাত থেকে?! কীভাবে ফিরে আসবে আমাদের হাতে!?

 

আল-আকছা কাঁদছে অভিশপ্ত ইহুদিদের নাপাক হাতে বন্দী হওয়ার অপমান-জ্বালায়; আমরা কাঁদছি আলআকছাকে হারানোর শোকে, আলআকছার আবরু-মর্যাদা রক্ষায় অমার্জনীয় ব্যর্থতার লজ্জায়।

ইসলামের ইতিহাসের প্রায় সবটুকু সময় আলাআকছা আমাদেরই ছিলো। পূর্বপুরুষদের কাছে তা ছিলো শক্তি ও  যোগ্যতার বলে, তলোয়ারের ধারের উপর, কামান-বারুদের  ধোঁয়ার ছায়ায়।

আমাদের কাছে ছিলো, হাজারো অযোগ্যতা সত্ত্বেও নিছক উত্তরাধিকার সূত্রে। এটা ছিলো শুধু আমাদের প্রতি আল্লাহ তা‘আলার দয়া ও করুণা।

সেই মর্যাদা থেকে আমরা বিচ্যুত হয়েছি ১৯৬৭ সালে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে (জিহাদে নয়) লজ্জাজনক পরাজয়ের মাধ্যমে। মিশর, সিরিয়া ও জর্দান এই তিনটা দেশ কয়েক লাখ ইহুদির ক্ষুদ্র দেশ ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে  শুধু পরাজিতই হয়নি, নাকে খত দিয়ে তা  মেনেও নিয়েছে। পরাজয় এমনিতেই লজ্জার, পরাজয়ের  খোড়া অজুহাত আরো লজ্জার। সেই অজুহাত হলো, ইসরাইলের পিছনে ছিলো বৃটেন, আমেরিকা। নইলে...!

কিন্তু যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি প্রমাণ করে দিয়েছে, যুদ্ধর জন্য আমরা প্রস্তুতই ছিলাম না, না অস্ত্রসজ্জায়, না সমরকুশলতায়, না মনোবল ও উদ্দীপনায়। যদ্দুর মনে পড়ে, ইসরাইল তখন জাতীয়ভাবে উপবাস পালন করেছিলো, আর আমরা সেনানিবাসে ‘ইন্তিযাম’ করেছিলাম নৈশবিনোদনের। আমাদের বৈমানিকরা ঘোরের মধ্যে ছিলেন, আর যুদ্ধবিমান-গুলো ডানা মেলার আগেই বিমানবন্দরে ‘শহিদান’ হয়েছিলো। তবু অজুহাত ...!!

মহান পূর্ববর্তীদের পাক লহুতে  ভেজা যমিনের সাতাত্তর ভাগ তো হারিয়েছি ৪৮ এর যুদ্ধে। তখন থেকে পবিত্র নগরী বাইতুল মাকদিসের পশ্চিমাংশ ইহুদিদের দখলে। ৬৭-এর যুদ্ধে সেই দখল আরো সম্প্রসারিত হয় এবং  পবিত্র নগরীর প্রাচীন অংশ পূর্বজেরুসালেমও (যে অংশে ছিলো আমাদের প্রথম  কেবলা আলআকছা মসজিদ) আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। সেই  থেকে শুরু লজ্জার কান্না এবং কান্নার লজ্জা!!

সবল কথা বলে শক্তির ভাষায়, দুর্বল গ্রহণ করতে চায় যুক্তি ও আইনের আশ্রয়। সেহিসাবে বলতে হয় ৪৭ সালে ঐতিহাসিক ভূখ- ফিলিস্তীনকে বিভক্ত করার পরিকল্লনা গ্রহণ করে জাতিসঙ্ঘ। ইউরোপের বিভিন্ন অংশ থেকে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনে আমদানি করা ইহুদিদের বসবাসের জন্য বরাদ্দ করা হয় ফিলিস্তীনের পঞ্চান্ন ভাগ জমি, আর ফিলিস্তীনের আদি বাসিন্দা ও আসল হকদার আরবদের দিকে ছুঁড়ে দেয়া হয় পঁয়তাল্লিশ ভাগ।

পক্ষান্তরে পবিত্র মসজিদ আলআকছা ও তার পবিত্র নগরী বাইতুল মাকদিস (জেরুসালেম) রাখা হয় জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তত্ত্বাবধানে। ‘বানরের পিঠাভাগও’  আমাদের ভাগ্যে জুটলো না!

বরণ করতে হলো ৪৮ ও ৬৭-এর ট্রাজেডি! আইন উঠলো সিকায়, পবিত্র নগরী আলকুদস এবং পবিত্র মসজিদ আলআকছা হলো ইহুদি মানচিত্রের গ্রাস!!

তারপরো জাতিসঙ্ঘ কতকটা যেন করুণাবশেই রেখে দিলো আইনের একটা ‘লেশ’! বলা হলো, পূর্ব-জেরুসালেমের উপর ইসরাইলী দখল অবৈধ। সেখানে দখলদার শক্তির সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত নয়। সুতরাং পূর্ণ স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হবে।

এরপর থেকে বিশ্বসম্প্রদায়ের ‘নিন্দা’ যেমন অব্যাহত থাকলো তেমনি অব্যহাত থাকলো পবিত্র নগরী জেরুসালেমের মালিকানা এবং ভৌগোলিক ও জনসংখ্যাগত অবস্থা  পরিবর্তনের ইহুদী নীল নকশার ঘৃণ্য বাস্তবায়ন। একের পর এক গড়ে উঠতে লাগলো সুরক্ষিত ইহুদী বসতি।

প্রায় চারলাখ ফিলিস্তীনী জন্মসূত্রে জেরুসালেমে বাস করার আইনগত মর্যাদার অধিকারী, কিন্তু বিভিন্ন শর্ত ও অজুহাতের বেড়াজাল খাড়া করে সেখানে তাদের বসবাস অসম্ভব করে তোলা হচ্ছে। নতুন বাড়ীঘর নির্মাণের অনুমতি দূরের করা, আইনের বিভিন্ন ফ্যাসাদ তুলে পুরোনো বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। দোকান ও ব্যবসার অনুমতিপত্র বাতিল করা হচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে তারা জেরুসালেম ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। পক্ষান্তরে বিশ্বের যে কোন অঞ্চলের  যে কোন ইহুদির জন্য মর্যাদাপূর্ণ নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত। শুধু কষ্ট করে তাকে আসতে হবে ইসরাইলী সীমান্তের ভিতরে!

***

প্রায় পঁয়ত্রিশ একর এলাকা জুড়ে মসজিদুল আকছা কমপ্লেক্স-এর অবস্থান জেরুসালেম বা আলকুদস-এর প্রাচীন ও পূর্ব অংশে। মুসলিমরা আলআকছা বলে যে অংশটা বোঝায় ইহুদিরা সেটাকে বলে টেম্পল মাউন্ট। এখানে অবস্থিত মুসলিম উম্মাহর প্রথম কিবলা এবং তৃতীয় পবিত্রমত মসজিদ। এখান থেকেই শুরু হয়েছিলো ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মাদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিরাজ তথা সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত তাঁর ঊর্ধ্বজাগতিক ভ্রমণ, যার স্মৃতিরূপে তৈরী হয়েছে কুব্বাতুস্সাখরাহ (প্রস্তর গম্বুজ/ ডোম অব রক)

ইহুদিরা বিশ্বাস করে, এই আকছাপ্রাঙ্গণেই ছিলো তাদের উপাসনালয় বা হায়কালে  সোলায়মানি। তবে ইহুদি বিধান অনুযায়ী ঐ স্থানটিতে কারো যাওয়া এবং প্রার্থনা করা নিষিদ্ধ। প্রাঙ্গণের পশ্চিম দেয়ালটি ইহুদি-বিশ্বাসমতে ‘ক্রন্দনপ্রাচীর’ যা তাদের ধর্মগ্রন্থে উল্লেখিত দ্বিতীয় উপাসনালয়ের শেষ চিহ্ন। এখানে তারা ক্রন্দন ও অশ্রুপাত করে থাকে অতীতের জাতীয় দুর্যোগ ও মহাবিপদগুলোর কথা স্মরণ করে।

খৃস্টানদের নিকট এ প্রাঙ্গণের পবিত্রতার কারণ এই যে, তা হযরত ঈসা আ. (যিশুখৃস্ট)-এর স্মৃতিধন্য স্থান। এখানে তাঁকে ‘ক্রশবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছিলো’ বলে তারা বিশ্বাস করে। এখানে তাদের একটি প্রাচীন গীর্জা রয়েছে, যা তাদের মতে যিশুখৃস্টের স্মৃতি ধারণের জন্য নির্মিত হয়েছে।

***

আবার ফিরে আসতে হয় ১৯৬৭ সালের ইতিহাসের কাছে। লজ্জাজনক পরাজয়ের পরো ইসরাইল জর্দানের সঙ্গে এ মর্মে চুক্তিতে আবদ্ধ হয় যে, পুরো আলআকছা প্রাঙ্গণ জর্দানের  তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করবে ওয়াকফ বা ইসলামী ট্রাস্ট। এতে ইসরাইলী কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার হস্তক্ষেপের অধিকার থাকবে না। পক্ষান্তরে প্রাঙ্গণের বাইরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে ইসরাইলী কর্তৃপক্ষ।

প্রাঙ্গণের অভ্যন্তরে অমুসলিমরা শুধু পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতে পারবে, উপাসনা বা প্রার্থনা করার অনুমতি পাবে না। উপাসনা ও প্রার্থনার অনুমতি বা অধিকার শুধু মুসলিমদের।

কিন্তু ইহুদীরা ক্ষমতা ও শক্তির দম্ভে বারবার চুক্তিলঙ্ঘনের চেষ্টা করে। ফলে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে। প্রতিটি সহিংসতায় মুসলিমরাই নিষ্পেষিত হয়। কারণ অস্ত্রশক্তির পৃষ্ঠপোষকতা থাকে তাদের সঙ্গে।

৬৭-এর পর প্রথম বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলো ইহুদিদের দ্বারা আলআকছায় অগ্নিসংযোগ। এঘটনায় ফিলিস্তীন ও  জেরুশালিমে তো বটেই, এমনকি  গোটা মুসলিম উম্মাহ একসঙ্গে জ্বলে ওঠে। তাতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেই মর্মন্তুদ ঘটনাকে স্মরণ করেই আজো সবার অলক্ষ্যে ‘অযতেœ অবহেলায়’ পালিত হয় আলআকছাদিবস।

***

২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উপলক্ষে শ-দেড়শ  সশস্ত্র সন্ত্রাসী ইহুদির দল জোর করে আলআকছা প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। রামাযনের শেষ দশদিনে তাদের এ ধরনের তৎপরতা অনেক বেড়ে যায়। তারা নাকি, প্রার্থনার উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতে চায়, যা ১৯৬৭ সালের চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। উত্তেজনা ও সহিংসতার আরেকটি বড় কারণ হলো নিরাপত্তার অজুহাত তুলে মসিজদুল আকছায় মুসলমানদের নামাজ, জামাত ও জুমা অনুষ্ঠানে বাধা দেয়া। এমনকি এর প্রতিবাদের অপরাধে ইমামুল আকছাকে পর্যন্ত হেনেস্থা ও গ্রেফতার করা হয়।

ইসরাইলী সরকার এবং দুষ্কৃতি-কারী ইহুদিদের এটা অজানা নয়  যে, মসজিদ, বিশেষ করে মসজিদুল আকছা মুসলমানদের নিকট অতি পবিত্র স্থান। এর সামান্য বেহুরমতি বরদাশত করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরো বারবার দুষ্কৃতিকারিরা মসজিদের বেহুরমতি করেই চলেছে এবং প্রকাশ্যে প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায়।

***

সর্বসম্প্রতি যে ভয়াবহ উত্তেজনা ও সহিংস পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তার কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ হতে পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশকে মিলিয়ে পুরো জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানীরূপে স্বীকৃতি প্রদান এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেলআবীব  থেকে জেরুসালেমে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা। অথচ জাতিসঙ্ঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনসম্প্রদায়ের নিকট পবিত্র বলে বিবেচিত শহরটির স্থিতাবস্থা বজায় রাখা জরুরি। এর খেলাফ করা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার ‘উন্মাদ’ প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুরোধ এবং বিশ্বজনমত উপেক্ষা করে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ্য, এই যুক্তরাষ্ট্র, তার প্রেসিডেন্ট এবং পুরো প্রশাসন রাখাইন ইস্যুতে পরিষ্কার গণহত্যার অপরাধ সঙ্ঘটি হলেও তা বন্ধের জন্য জোরালো কোন পদক্ষেপ এজন্য নিতে পারছে না যে, তাতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ‘অসন্তুষ্ট’ হতে পারে। তাতে গণতন্ত্রের নেত্রীর অবস্থান বিঘিœত হতে পারে, আর তাতে মিয়ানমারের মাটিতে অঙ্কুরিত অনেক সাধের গণতন্ত্রের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই পুরো একটা জনগোষ্ঠী জাতিগত উচ্ছেদ ও নিধনের শিকার হলেও আমেরিকার কিছু করার নেই সাবধানী হওয়া ছাড়া। এরূপ অবস্থায় পড়েই বোধহয় মানুষ বলে, ‘খলের ছলের অভাব হয় না।’

***

লাগাতার বিপদ-দুর্যোগে বিপর্যস্ত মুসলিম উম্মাহর সামনে আজ একটা জ্বলন্ত প্রশ্ন, মুসলিম উম্মাহর অধিকৃত ভূমি, পবিত্র আলকুদস এবং আরো পবিত্র মসজিদুল আকছা উদ্ধারের কোন উপায় কি আছে? এবং থাকলে তা কী?

মনে হতে পারে, বড় কঠিন প্রশ্ন এবং বড় জটিল তার উত্তর। আসলে তা নয়। এ প্রশ্ন যেমন অতীতের, উত্তরও অতীতের।

মুসলিম উম্মাহর সর্বজনশ্রদ্ধেয় ইমাম হযরত মালিক ইবনে আনাস রহ. খায়রুলকুরূনেই এ প্রশ্নের স্মুখীন হয়েছেন এবং পরিষ্কার ও নির্দ্বিধ ভাষায় তার উত্তরও দিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন, এই উম্মাহর শেষ যুগের অবস্থার সংশোধন কিছুতেই হবে না ঐ পথ ছাড়া  যে পথে তার প্রথম যুগের সংশোধন হয়েছে।

একথা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে, সম্পদে, সংখ্যায়, শক্তিতে ও সম্ভাবনায় আমাদের বর্তমান যত উজ্জ্বল অতীতে কখনো তা ছিলো না।

কিন্তু সম্পদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আমি তোমাদের বিষয়ে দারিদ্র্যের আশঙ্কা করি না, বরং আশঙ্কা করি যে, তোমাদের উপর দুনিয়া ও তার প্রাচুর্য ছড়িয়ে দেয়া হবে, আর তোমরা দুনিয়া হাছিল করার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়বে, যেমন পূর্ববর্তী জাতি জড়িয়ে পড়েছিলো। ফলে তোমরা হালাক হবে যেমন তারা হালাক হয়েছিলো।

সংখ্যাশক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে ওয়া ইয়াওমা হোনায়নিন ইয আ‘জাবাতকুম কাছরাতুকুমÑ স্মরণ করো হোনায়নদিবসের কথা যখন তোমাদের সংখ্যাধিক্য তোমাদের আত্মতুষ্ট করেছিলো..!

হাদীছের বয়ানমতে, সংখ্যাল্পতার কারণে আমরা পর্যুদস্ত হবো না, বরং সংখ্যাধিক্যের কারণেই পর্যুদস্ত হবো, যখন আমাদের অবস্থা হবে, ‘বানে ভেসে আসা খড়কুটার মত!

হাদীছ শরীফে আরো এসেছে, ‘তোমাদের বরবাদির কারণ হবে ‘ওয়াহন’। জিজ্ঞাসা করা হলো, ওয়াহন কী ইয়া রাসূলাল্লাহ? তিনি বললেন, ওয়াহন হচ্ছে দুনিয়ার

প্রতি লালসা, আর মৃত্যুর প্রতি অনীহা। আর আল্লাহর শাশ্বত বিধান তো আলকোরআন এভাবে বলে দিয়েছে, ‘আর তোমরাই হবে বিজয়ী, যদি তোমরা হও মুমিন।’ সুতরাং কোন কারণই নেই আমাদের হতাশ ও হতোদ্যম হওয়ার। আগামীকালই হতে পারে আমাদের অবস্থার পরিবর্তন, আমাদের বর্তমান যিল্লতি ও লাঞ্ছনার অবসান, যদি আমরা ঈমানের বলে হতে পারি বলীয়ান।

যদি আমরা সাধ্যমত শক্তি অর্জন করি, সম্পদের শক্তি, অস্ত্র ও প্রযুক্তির শক্তি এবং সংখ্যার শক্তি, কিন্তু নির্ভরতা হবে শক্তির উপর নয়, বরং আল্লাহর গায়বি সাহায্যের উপর, এককথায় যাকে বলা হয় জিহাদ, যদি আমরা জিহাদের পথে চলতে পারি, যেমন আল্লাহ বলেছেন তাহলে আগামীকালই হতে পারে আমাদের নিরঙ্কুশ বিজয়। কিন্তু আমরা তো করজোড়ে কম্পিত কণ্ঠে বলেই চলেছি, আমরা হলাম মডারেট মুসলিম! ইসলাম তো শান্তির ধর্ম! ইসলামের সঙ্গে যুদ্ধের কী সম্পর্ক!

যদি ঈমান থাকতো, সাধ্যের ভিতরে প্রস্তুতি থাকতো, আল্লাহর পক্ষ হতে গায়বি মদদের ভরসা থাকতো তাহলে কিন্তু আজ ওআইসির কণ্ঠ হতো অন্যরকম। বলা হতো, ‘মিস্টার ট্রাম্প আপনাকে এতটা সময় দেয়া হলো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য। ...’

সুতরাং অন্যান্য প্রচেষ্টার সঙ্গে উপরে বর্ণিত পথ ও পন্থায়ও আমাদের চেষ্টা করা কর্তব্য। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যেমন তেমনি ব্যক্তি পর্যায়ে। অন্তত আমার চেষ্টা তো আমি শুরু করতে পারি, আজই, এখনই। আমরা শুধু  চেষ্টা করে যাবো আমাদের দিক থেকে, সাহায্যের যিম্মা আল্লাহর; নতীজা ও ফল আল্লাহর হাতে।

ইয়া আল্লাহ তাওফীক দাও যা বলা হলো তার উপর আমল করার, আমীন।