ফিলিস্তীনের ইসলামী প্রতিরোধআন্দোলন হামাস বেলফোর ঘোষণার শতবর্ষপূর্তি উদ্যাপনে বৃটেনের উচ্ছ্বাসের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, বেলফোর ঘোষণা ছিলো বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ভুল এবং মানবতার পরাজয়। ঐ ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তীনীদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের মাধ্যমে অবৈধ ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বৃটেন বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে ফিলিস্তীনের প্রতি এক ঐতিহাসিক অপরাধ করেছে। সুতরাং বৃটেনকেই এখন দায়িত্ব নিতে হবে ভুল সংশোধনের।
বিবৃতিতে হামাস জোরালো দাবী জানিয়ে বলেছে, ফিলিস্তীনী জনগণকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। সব ফিলিস্তীনী উদ্বাস্তুকে তাদের পিতৃভূমিতে ফিরে আসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করতে হবে। সর্বোপরি একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রগঠনে ফিলিস্তীনীদের জন্মগত অধিকার স্বীকার করে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, হামাসের অনুরূপ দাবী উঠেছে খোদ বৃটেনের জনমতজরীপে। বৃটেনের প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি কর্বিন বেলফোরঘোষণার শতবর্ষপূর্তি নামে অনুষ্ঠিত উৎসবসমাবেশে যোগদান করা থেকে বিরত ছিলেন। তার বক্তব্য ছিলো, ‘এতে বৃটেনের জন্য গর্ব করার মত কিছু নেই। বরং এটা আমাদের জন্য লজ্জা ও কলঙ্কের বিষয়। কারণ একটি নিরপরাধ জনগোষ্ঠীকে এই কুখ্যাত ঘোষণার মাধ্যমে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
বৃটেনের জনমতও প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের বিপক্ষে কথা বলছে। বৃটেনের অধিকাংশ মানুষ মনে করে, থেরেসা চান ব্রেক্সিটের পর ইউরোপের সীমা ছাড়িয়ে তার দেশকে আরো বেশী বৈশ্বিক করতে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে। কিন্তু এ জন্য সবার আগে প্রয়োজন অতীতের ভুল স্বীকার করা এবং সেই ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।
বৃটেনের জনমত আরো মনে করে, ফিলিস্তীন হচ্ছে বৃটেনের ঔপনিবেশিক ভুলের ফসল। যতদিন বৃটেন তার ভুল সংশোধনের বিষয়ে আন্তরিক না হবে ততদিন প্রকৃত বৈশ্বিক বৃটেনের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে।
টনি ব্লেয়ার বা ডেভিড ক্যামরনের মত সাবেক প্রধানমন্ত্রীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বক্তৃতায় তাদের পূর্বসূরিদের ভুলের নিন্দা করলেও ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এর সংশোধনের জন্য কেউ কোন দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বলা যায়, এটা এখন বৃটিশ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীদের প্রিয় ফ্যাশন।
হামাস তার এদিকে ইঙ্গিত করেই বলেছে, শতবর্ষপূর্তি উৎসব দ্বারা বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী মূলত ফিলিস্তীনী জনগোষ্ঠীর প্রতি তার পূর্বসূরীদের অপরাধকেই সমর্থন করেছেন।
গাজায় বিমানহামলা
দুই ফিলিস্তীনী নিহত
১৩ই ডিসেম্বর, বুধবার/ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিবাদে গাজা ও পশ্চিমতীরে টানা ছয়দিনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে গতকাল অধিকৃত গাজায় ইসরাইলী বিমান হামলায় দু’জন ফিলিস্তনী নিহত হওয়া ছাড়াও বহু হতাহত হয়েছে। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ফিলিস্তীনের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় হতে জানা গেছে। এর আগে গত শুক্রবার বিমানহামলায় গাজায় চারজন নিহত ও ২৫জন আহত হয়েছিলো।
ইসরাইলী সামরিক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো, তারা গাজা উপত্যকায় হামাসের সামরিক উপস্থিতি লক্ষ্য করে বিামন হামলা চালিয়েছে। কারণ গাজা উপত্যকা থেকে কমপক্ষে দু’টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে ইসরাইলের ভিতরে। একটি রকেট আকাশেই প্রতিহত করা হয়েছে ‘আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা’ দ্বারা। আরেকটি সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। কোন হতাহতের খবরও পাওয়া যায়নি।
প্রশ্ন হলো হামাস এমন রকেট কেন ছোঁড়ে যার দ্বারা ইসরাইলের কোন ক্ষতি করা সম্ভব তো হয়ই না, উল্টো ইসরাইল বিমান হামলার অজুহাত পেয়ে যায়!
এটা আগাগোড়া ইসরাইলের মনগড়া অজুহাত নয় তো!
তাছাড়া হামাস তো এখন অস্তিত্বের সঙ্কটে রয়েছে। তার সবকিছু অর্জন এখন অর্পণ করতে হচ্ছে ফাতাহ-এর কাছে!!