আরাকানের যে রক্তক্ষরণ তাই তো সহ্যের সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছিলো, তার মধ্যে আবার শুরু হলো আরো বড় যন্ত্রণার সঙ্গে আরো বেশী রক্তক্ষরণ!
কবে শেষ হবে আমাদের গাফলত, কবে শেষ হবে দুশমনের নিষ্ঠুরতা!! জাতি হিসাবে আমরা সারা বিশ্বের মুসলিম, ইতিহাসের কোন পর্বে কারো অনিষ্ট চেয়েছি! কারো অনিষ্ট করেছি!! আমাদের সঙ্গে কেন তাহলে এমন হয়!! বিশ্বে আমরাই একমাত্র জাতি, যারা তাদের বড় থেকে বড় জাতীয় শত্রুকে, এমনকি গণহত্যার কসাইকে মাফ করে দিতে প্রস্তুত যদি ঈমান এনে আমার ভাই হয়ে যায়। তখন আমরা অতীতের সব ভুলে যাই। ভাই বলে তাকে বুকে তুলে নেই। এটাই ইসলাম। এমন ধর্মের সঙ্গে কেউ গ্রহণ না করুক বিদ্বেষের আচরণ করতে পারে! সেজন্য চোখের পর্দা কতটা পাতলা হওয়া দরকার!
মিস্টার ডোনাল্ড আমেরিকার মত দেশের প্রেসিডেন্ট যখন হয়েছেন, কিছু জ্ঞান, কিছু বিবেচনা, কিছু পড়াশোনা কি তার নেই! তার তো জানার কথা, ইতিহাসের পুরো দৈর্ঘ্যপ্রেস্থে আমাদের কী আচরণ ছিলো তাদের সঙ্গে, আর ইহুদিদের কী আচরণ ছিলো! খোদ খৃস্টানরা কী আচরণ করেছে মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে, আর মুসলিম উম্মাহ!! হাতি খাদে পড়েছে বলে এমন করে খোঁচাতে হবে!! না বাবা, কাজটা তুমি ভালো করোনি। আজ হোক, কাল হোক, এজন্য তোমাকের পস্তাতে হবে। আর মুসলিম উম্মাহ! তুমি জানো মিস্টার, ইতিহাস, মানে তোমরা যাকে বলো, হিস্টোরি, বারবার আমাদের পরীক্ষা নিয়েছে। সবসময় হয়ত প্রত্যাশিত ফল আসেনি, তবে অকৃতকার্য হইনি কখনো। এটা এই উম্মাহর প্রতি আল্লাহর দয়া।
দেখো না, এর চেয়ে কত কম আঘাতে তোমাদের একেকটা ধর্মের কী ভয়ঙ্কর বিকৃতি!! অথচ যুগ যুগের ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্কর প্রতিকূলতার মুখেও ইসলাম আজো সমহিমায় বিদ্যমান। স্বয়ং আল্লাহ যে তার মুহাফিয!
আসল কথা হলো, আল্লাহ তো হাকীকত খুলেই বলে দিয়েছেন। যাই হোক, ওরা একে অন্যের যতই গলা কাটুক, মুসলিমানের বিরুদ্ধে ঠিকই ওদের গলাগলি! بعضهم أولياء بعض সুতরাং যাই হোক, যে যত মিঠা কথাই বলুক, لا تتخذوا اليهود والنصارى أولياء দোষ আমাদের। আমরাই ভুলে যাই। আমরাই খুশিমনে গলা এগিয়ে দেই ছুরি চালাতে! নরম কেক, গরম সামুচা মুখের কাছে পেলে কামড় তো দেবেই!
নইলে তুমি বাবা রাজার ছেলে! বয়স আছে, সময় আছে, দু’দিন বাদে তুমিই হবে দেশের রাজা। সেই সুবাদে কেউ চাক বা না চাক, তুমিই হবে খাদেমুল হারামাইন! তুমি কেন একটা বাচ্চা ইহুদির সামনে এমন বিগলিত হবে! আর সে ‘টিস্যুপেপার’ মনে করে তোমাকে ‘ইউজ’ করে ফেলে দেবে! তোমার কী! যা কিছু লজ্জা সে তো মুসলিম উম্মাহর। অন্তত নামটার ইজ্জতের দিকে তো খেয়াল করো!
ওদিকে বেচারা, দেশ নাই, রাজধানী নাই, রাজপ্রাসাদ নাই, প্রেসিডেন্ট!! তোমাদের খুদকুঁড়া খেয়ে বেঁচে আছে। তাকে ডেকে এনে লাগালে ধমক! ‘শহরের দরকার নেই পাশের গ্রামটাই রাজধানী বানাও না, দিব্বি শহর হয়ে যাবে! নইলে...!!
একটা ইহুদির বাচ্চার জন্য এমন ‘প্রক্সি’ খুব কী মর্যাদার হলো আগামী দিনের রাজার পক্ষে!
এখনো সময় আছে! এখনো আকাশে বেলা আছে!! এখনো হতে পারো নতুন করে শুরু!! এখনো হতে পারে তোমারই নায়কত্ব, যদি একটু বুঝতে পারো নিজের মর্যাদা। ইতিহাস এখন মোড় পরিবর্তন করছে! এমন সুযোগ শতাব্দীতে একবার আসে, বারবার নয়!!
তোমার শহীদ চাচার কথা মনে পড়ে! হয়ত দেখোনি, আমি দেখেছি। বাঘের মত ভয় পেতো আমেরিকার জাদরেল প্রেসিডেন্ট! অন্তত শোনোনি তার কথা!! তার মতই না হয় হও, দেখবে, হোয়াইট হাউযের সমানে তোমার গাড়ী থামবে, আর ও কেন ওর শশুড় দৌড়ে এসে তোমার গাড়ীর দরজা খুলে দেবে! সত্যি বলছি, ছবিতে আমি নিজে দেখেছি সে দৃশ্য সম্ভবত ১৯৭৩ সালে!
সেটা হলো ঐ সময়ের কথা যখন তোমার চাচা তেলের পাইপটা একটু চেপে ধরেছিলেন, আর ওদের নাভিশ্বাস শুরু হয়েছিলো। ভাতিজা একটা ছিলোই নিমক হারাম, এমন চাচার বুকে চালালো গুলি, তাও কি না মার্কিন বান্ধবীর পাল্লায় পড়ে।
তোমার দেখা পাওয়া তো আমার পক্ষে অসম্ভব, তাই মুখের পরিবর্তে কলমের যবানিতে যা বলার বলে দিলাম। মা‘আচ্ছালাম!!