শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

আল কুদসসংখ্যা (৩/২) | আল কুদসসংখ্যা (বিশেষ)

আপন-পর কী কার মন্তব্য!

 

ডোনাল্ড  ট্রাম্প ঃ প্রেসিডেন্ট, যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোত্তম স্বার্থ এবং ইসরাইল ও ফিলিস্তীনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যেই  এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত এবং বাস্তবতার স্বীকৃতি!

নেতানিয়াহু /প্রধানমন্ত্রী ইসরাইল

এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। জেরুসালেম সত্তর বছর ধরেই ইসরাইলের রাজধানী। জেরুসালেম আমাদের আশা, আমাদের স্বপ্ন।

 

‘দেয়াশলাইয়ের কাঠি’ ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে বারুদের স্তূপে। এর পরণতি কী এবং কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা কেউ জানে না। তবে এটা নিশ্চিত, ভায়বাহ কিছু অপেক্ষা করছে বিশ্ব ও মুসলিমবিশ্বের জন্য। তাই বিশ্বের রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং বরণ্যে ব্যক্তিবর্গ সবাই আজ বিচলিত, ক্ষুব্ধ এবং ক্রুদ্ধ। প্রতিটি প্রতিক্রিয়া থেকেই তা প্রকাশ পাচ্ছে। এখানে কয়েকটি বক্তব্য ও মন্তব্য সংক্ষেপে তুলে ধরছি। প্রথমে দেখুন লাল রেখার ভিতরে দুই প্রধান অপরাধীর মন্তব্য!

এখানে একটি কথা। আমাদের ধারণা ছিলো হারামাইনের মহামান্য খাদেম তার নীরবতা আর ভঙ্গ করবেন না। কারণ আঘাত এলো ৬ই ডিসেম্বর। বিশ্বমুসলিমের একমাত্র মিলনসংস্থা ও আইসির ‘জরুরি’ সম্মেল হলো ১৩ই ডিসেম্বর। জানা গেলো, তিনি বা তার ক্রাউনপ্রিন্স, এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আসছেন না! কিন্তু তিনি এলেন! ইস্তাম্বুলের সম্মেলনে নয়, রিয়াদে টেলিভিশনের পর্দায়। বললেন, পৃথিবীর সবচে’ ভদ্র মানুষ সবচে’ ভদ্রমানুষকে যত মোলায়েম কণ্ঠে বলতে পারে সেভাবে বললেন, ‘পূর্বজেরুজালেম ফিলিস্তীনের রাজধানী হওয়া উচিত।’ আর বললেন, ‘জেরুসালেম নিয়ে মার্কিন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাই’।

ওদিকে তার যুবরাজপুত্রকে সফরের আনুষ্ঠানিক দাওয়াত জানিয়েছে ইসরাইল সরকার। আমরা সত্যি বুঝে উঠতে পারি না, আপন-পর সবাই কেন মুসলিম উম্মাহকে এতটা ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ মনে করে!

***

পোপ ফ্রান্সিস ঃ সবাইকে দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাচ্ছি জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাব মেনে শহরটির বর্তমান অবস্থানকে সমর্থন জানাতে।

***

ভ্লাদিমির পুতিন /প্রেসিডেন্ট রাশিয়া

ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্ঘাতকে উসকে দিয়েছেন। ইসারইল ও ফিলিস্তীনের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সবকিছু হওয়া সঙ্গত।

***

ইসমাইল হানিয়া (হামাসপ্রধান) ঃ এই ঘোষণার মাধ্যমে ট্রাম্প জাহান্নামের দরজা খুলেছেন। বাইতুল মাকদিসকে দখলদার ইসরাইলের হাতে তুলে দিয়ে তিনি ফিলিস্তীনী জাতির প্রতি প্রকাশ্য শত্রুতা শুরু করেছেন।

***

মাহমুদ আব্বাস (ফিলিস্তীনী প্রেসিডেন্ট) ঃ

ট্রাম্প আগুন নিয়ে খেলছেন। ফিলিস্তীনীরা কখনোই এ ঘোষণা মেনে নেবে না।

***

হাসান রূহানী ( প্রেসিডেন্ট ইরান) ঃ নির্যাতিত ফিলিস্তীনী জনগণ, প্রতিরোধ আন্দোলন ও মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যদ্ধ অবস্থানে নিশ্চিতভাবে ‘শয়তানি পরিকল্পনা’ ব্যর্থ হবে।

***

রজব তৈয়ব এরদোগান /প্রেসিডেন্ট তুরস্ক ঃ 

এই মুহূর্তে জেরুসালেমকে রক্ষা করার স্বার্থে মুসলিম বিশ্বের এক হয়ে কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যকে আগুনের মধ্যে ঠেলে দেবে।

***

হিযবুল্লাহ প্রধান হাসান নাছরুল্লাহ ঃ

ট্রাম্পের এ ঘোষণার মাধ্যমে খোদ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের ধ্বংসের ঘণ্টা বেজে উঠেছে। আমাদের এখন একমাত্র অগ্রাধিকার ফিলিস্তীন। ফিলিস্তীনের জনগণ অবশ্যই জয়ী হবে।

***

তিউনিসিয়ার আন-নাহদা পার্টিপ্রধান শেখ রাশীদ ঘানুসি ঃ এটা খুবই উসকানিমূলক পদক্ষেপ, যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। এটা সন্ত্রাসবাদকে আরো উৎসাহ যোগাবে। ট্রাম্প বুদ্ধির পরিচয় দেবেন, যদি তিনি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও চরমপন্থা রোধের লক্ষ্যে তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন।

***

আরবলীগপ্রধান আহমদ আব্দুল গাইছ ঃ  এ পদক্ষেপ ইসরাইলের দখলদারিত্বকে বৈধতা দেয়ার শামিল। এটি আন্তর্জাতিক আইনের ভয়াবহ লঙ্ঘন। এটি ইসরাইল-ফিলিস্তীনসঙ্ঘাতের রাজনৈতিক সমাধানকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

***

মহাথির মুহাম্মাদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মালয়েশিয়া ঃ

সব মুসলিম দেশকে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানাই। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত মুসলিমদের ক্ষোভ ও ক্রোধকেই শুধু বাড়িয়ে দেবে। এ খলনায়ক, যিনি কিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তাকে প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের অবশ্যই সব উপায় ও শক্তি ব্যবহার করতে হবে। এটা এখন আমাদের ঈমানের পরীক্ষা।

***

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ঃ

আলকুদ্স হচ্ছে আমাদের জন্য লালরেখা, আশা করি, এটা কেউ অতিক্রম করার চেষ্টা করবেন না। আশা করি, কেউ এমন চরম ভুল করবেন না!