তাকে
দেখো তো, চিনতে পারো কি তাকে, ঐ যে দাঁড়িয়ে আছে দূরে ছোট্ট শিশুটি! পথের ধূলায় গড়গড়ি খায় ঐ যে ছোট্ট ছেলেটি! ঐ যে রোদের নীচে বসে আছে একলাটি, ক্ষুধায় কাতর ছোট্ট মেয়েটি! কিংবা আরো দূরে ঐ যে দেখো! ঠিক দেখা যায় না, ঠিক বোঝা যায় না, তবু দেখো! অন্তত দেখার চেষ্টা করো। একটু না হয় কাছে গিয়ে দেখার চেষ্টা করো। এতটুকনু মেয়ে, জীবনের দায়, জীবনের দায়িত্ব কতটুকুই বা বোঝে! দাঁড়িয়ে আছে আরো ছোট্ট, আরো অবুঝ ভাইটিকে কোলে করে। দাঁড়িয়ে আছে দূরের ঐ ছায়াবিন্দুটার দিকে তাকিয়ে। বলতে পারো কিসের আশায়? একটুকরো রুটির আশায়! কার জন্য? নিজের জন্য? না, ওরও ক্ষুধা অনেক! দেখো না, যেমন কঙ্কাল ভাইটি, তেমনি কঙ্কাল সে নিজে!! তবু নিজের জন্য সে কিছু চায় না। মায়ের করুণার ছায়া তো! তাই নিজের জন্য ওর কোন প্রয়োজন নেই, কিছু চাওয়ার নেই। দেখো না, ওর চোখের কী করুণ মিনতি! একটুকরো রুটি দাও তোমরা আমার ভাইটিকে।
আচ্ছা, এই শেষ বেলায় একটা কথা জানতে চাই তোমার কাছে, কখনো কি তোমার মনে হয় না, এই রকম হতে পারে তোমারও জীবনে! তোমারও সন্তান দাঁড়িয়ে থাকতে পারে পথের ধারে একটুকরো রুটির আশায়?!
সবাইকে
যারা বাঁচতে চায় না শুধু নিজের আনন্দের জন্য! যারা স্বপ্ন দেখে না শুধু নিজের ভবিষ্যতের জন্য!! যারা ফুলের বাগান সাজায় না শুধু নিজের সুবাসের জন্য!! তাদের সবাইকে ডাকছে কিছু আর্তনাদ, কিছু হাহাকার, কিছু ফরিয়াদ!! তাদের দিকে ঐ যে দেখো হা করে আছে কিছু ক্ষুধার্ত মুখ!! তাদের দিকে ঐ যে দেখো, তাকিয়ে আছে কিছু আলোহীন, স্বপহœীন চোখ!! আমিও ডাকছি তাদের সবাইকে, চলো যাই একসঙ্গে ওখানে ঐ দূরে, যেখানে দিগন্ত নেমেছে সাগরের জলে!!