মানবসমাজে নারীর যখন কোন মর্যাদাই ছিলো না, ইসলাম তখন নারীকে পূর্ণ মর্যাদা দান করেছে।
সম্প্রতি কিছু জ্ঞানপাপী নারীর প্রতি অতিদরদের খোলসে ইসলামের উপর আঘাত হানার পাঁয়তারা করছে। তারা বলে, নারীকে তারা উত্তরাধিকার সম্পদে পুরুষের সমান অংশ দিতে চায়; অথচ তারা ভেবে দেখে না যে, ইসলাম উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টন করেছে ‘পুরুষের জন্য দুই নারীর অংশের সমপরিমাণ’ এই নীতিতে; সেই সঙ্গে জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে নারীকে সকল প্রকার অর্থনৈতিক দায়-দায়িত্ব থেকে মুক্ত রেখেছে, পক্ষান্তরে সর্বপ্রকার দায়দায়িত্ব চাপিয়েছে পুরুষের কাঁধে।
কেউ কেউ বলতে চান, ‘নারী-উন্নয়ন নীতিমালায় উত্তরাধিকারে সমানাধিকারের কথা নেই।’ আমাদের কথা হলো, প্রথমে তো উত্তরাধিকার শব্দটি ছিলো, পরে প্রতিবাদের কারণে শব্দ পরিবর্তন করা হয়েছে, কিন্তু এমনভাবে যে, যে কোন সময় সমানাধিকার কার্যকর করা যায়। সুতরাং অস্পষ্টতা পরিহার করে কেন লেখা হচ্ছে না যে, কোরআনের উত্তরাধিকার বিধানে কোন হস্তক্ষেপ করা হবে না? তাতেই তো বোঝা যায়, ‘ডাল মে কুছ কালা হায়’!
অনেকে বলেন, নারী-উন্নয়ন নীতিমালায় কোন কিছু কোরআনের বিরোধী নয়। এটি মিথ্যাচার। কারণ তাতে আছে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্রে নারীর সমান উপস্থিতি ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার কথা। এ চিন্তাধারা কি কোরআনের সঙ্গে সাঙ্ঘর্ষিক নয়? কোরআনের তো সুস্পষ্ট ঘোষণা হচ্ছে-
وقرن في بيوتكن
আর অবস্থান করো তোমরা তোমাদের গৃহে
অর্থাৎ নারিদের কর্মস্থল হলো গৃহের অঙ্গনে, স্ত্রী ও মা হিসাবে। কারণ প্রকৃতিগত কারণেই নারী ও পুরুষের কর্মক্ষেত্র অভিন্ন হওয়ার সুযোগ নেই। সেটা হবে নারীর প্রতি অনেক বড় অবিচার ও যুলুম। কারণ নারীকে মাতৃত্বের মহান দায়িত্ব তো পালন করতেই হবে, তার উপর তাকে বহন করতে হবে বাইরের কাজকর্মের বোঝা, কিছু অর্থ উপার্জনের তাগিদে। তাহলে কী দাঁড়ালো? একটি সংসারে নারীর নিজস্ব যে মৌলিক দায়িত্ব তা বহাল থাকবে, সঙ্গে যুক্ত হবে, অর্থনৈতিক দায়িত্ব যা সর্বাংশে ছিলো পুরুষের দায়িত্ব। অন্যদিকে পুরুষের দায়িত্ব কোন দিক থেকে বাড়বে না, বরং কমবে।
স্বীকার করা হোক, কিংবা অস্বীকার, নারী তার যাবতীয় সৌন্দর্যের কারণে পুরুষের পক্ষে বড় লোভনীয় সৃষ্টি, আবার বড় দুর্বল সৃষ্টি। সুতরাং নারী যদি ঘরের বাইরে অরক্ষণীয়া হয়ে পড়ে পুরুষের লোভের হাত তার দিকে প্রসারিত হবেই। এ বাস্তবতা তো সবচে’ সভ্য সমাজেও অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই ইসলাম চায় নারীকে ঘরের নিরাপদ পরিবেশে আস্থাভাজন পুরুষের ছত্রচ্ছায়ায় রাখতে, সে স্বামী হোক, বা ভাই, বা পিতা, বা সন্তান। এটাকে যারা বলে বৈষম্য তাদের যুক্তি শুনে হাসবো না কাঁদবো, বুঝতে পারি না।
(সম্পাদক, তোমার হাসার দরকার নেই, কাঁদার তো বিলকুল দরকার নেই। দরকার শুধু এই যে, তোমার মা, তোমার বোন, এবং যখন তোমার স্ত্রী হবে এবং কন্যা হবে তারা কেউ যেন তোমার ঘরে সামান্যতম অসম্মানের সম্মুখীন না হয় সেটা নিশ্চিত করা। যে সকল অধিকার শরীয়ত তোমার উপর আরোপ করেছে সসম্মানে তা তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া। এটা তুমি করবে তোমার পরিবারে এবং তোমার চারপাশের পরিবারগুলো- তে। আমি, তুমি, আমরা আজ থেকে যদি এই প্রতিজ্ঞা করি, বিশ্বাস করো, অন্তত নারীবিষয়ে ইসলাম রক্ষার জন্য কাউকে পেরেশান হতে হবে না, ইনশাআল্লাহ। এটা না করে যদি শুধু রাস্তায়... তাহলে ...!)