আমিনুল ইসলাম, মাওলানা ম্যানশন, রামপুর, ফেনী ০ সম্পাদক ভাইয়া! আমার প্রথম কালাম, আপনার প্রতি সালাম। বলুন কবুল করলাম। ০০ অবশ্যই! অবশ্যই! ০ হাঁ, আমিও খুশী হলাম। ০০ তাহলে হিঃ হিঃ করে দরাজ একটা হাসি দাও! ০ ভাইয়া, আপনার আলকলম, যেন আমার কলবেরই মলম। ০০ তা তোমার কলবে জখমটা কিসের! ০ আচ্ছা, আপনার জন্য কী পাঠাই, মণ্ডা-মিঠাই! আম-জাম-কচু, থুক্কু, লিচু! না অন্য কিছু! ০০ কচু-লিচু এবং অন্যসবই আমার চলবে, সুতরাং থুক্কুটা শুধু নিজের জন্য রেখে সব পাঠিয়ে দাও। ০ সেরেছে, এবার তো ছাড়বেন না আমার পিছু! ০০ না, না, ভয় পাচ্ছো কেন মিছু মিছু! ০ ভাইয়া, আমাদের বাসায় আসুন টমটমে চড়ে/ চমচম ও যমযম আনুন পাত্র ভরে/ কমকম হলে বোঝাবো মজা মন ভরে। ০০ আর শুধু কম হলে! ০ আগেই বলে দিলাম কথাটা! সুতরাং ঠিক রাখুন মাথাটা! ০০ আচ্ছা, আচ্ছা, পাঠিয়ে দাও না টমটমটা! ০ দেখেছেন, আপনার লেখা পড়ে পড়ে কেমন কবি কবি হয়ে গেছি! ০০ পণ্ডশ্রম কেন মিছামিছি! ০ তবে আপনার যা রুচি, তার উপর সম্পাদনার কাঁচি! তাই এবার পালিয়ে বাঁচি! ০০ ও আমার পেয়ারের বন্ধু, না দিলে চন্দ্রবিন্দু , ঠিকই চালাতাম কাঁচি, তখন তোমার শুরু হতো নাচানাচি! কিন্তু এত যে ‘চি, চি! আমার যে পাচ্ছে হাচি! এই যা, দুষ্টু চন্দ- ্রবিন্দুটা আবার গেলো কোথায়! যাই, তালাশ করে আনি গে! (০০ প্রিয় আমিনুল ইসলাম, তোমার চিঠিটি এখানে হুবহু ছাপিয়ে দিচ্ছি; সম্পদনার সাথে মিলিয়ে দেখো, আশা করি তোমার ফায়দা হবে।) ‘আমার প্রথম কালাম, আপনার উপর সালাম। বলুন, গ্রহণ করলাম, হাঁ, আমিও খুশি হলাম। ভাইয়া, আপনার আলকলম যেন আমার হৃদয়েরই মলম। আচ্ছা, আপনার জন্য কী পাঠাবো? আম, জাম, কচু, থুক্কু লিচু? নাকি অন্য কিছু? সারছে, এবার তো ছাড়বেন না আমার পিছু! ভাইয়া টমটমে চড়ে আমাদের বাসায় আসবেন। আমার জন্য চমচম ও যমযম আনবেন। তবে কমকম আনলে কিন্তু মজা বুঝবেন! কথাটা আগেই বলে রাখলাম, আর আপনার অপেক্ষায় থাকলাম। দেখেছেন, আপনার লেখা পড়ে পড়ে কেমন কবি কবি হয়ে গেলাম! তবে আপনার যা রুচি! তার উপর সম্পাদনার কাঁচি! যেন পালিয়েই বাঁচি! আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে এখানেই শেষ করলাম। আবার কথা হবে, আজ বিদায় নিলাম। ইতি- মুহম্মদ আমিনুল ইসলাম আমার সম্পাদনা যদিও এটা সম্পাদনার বিষয়ে আলোচনার উপযুক্ত স্থান নয়, তবু বিশেষ ফায়দার কথা চিন্তা করে কিছু আলোচনা করছি- প্রথম কথা হলো, যদিও আরবীতে সালামের পরে ‘আলাইকুম’ বলা হয়, কিন্তু বাংলায় কারো উপরে সালাম হয় না, হয় কারো প্রতি; অথবা বলা হয়, আপনাকে সালাম। যদি প্রশ্ন করো, সম্পাদনায় ‘আপনাকে সালাম’-এর পরিবর্তে ‘আপনার প্রতি সালাম’ কেন লেখা হলো? উত্তর হলো, ‘আমার প্রথম কালাম’-এর সঙ্গে সমতা বজায় রাখার জন্য। দ্বিতীয়ত, কালাম ও সালাম-এর পর ‘গ্রহণ’-এর পরিবর্তে কবুল শব্দটি অধিক উপযোগী, তাতে শব্দের সমশ্রেণিতা রক্ষা হয়। কলম ও মলমের সঙ্গে ‘হৃদয়’ সম্পর্কেও একই কথা। তাছাড়া ‘কলব’ ব্যবহার করাতে আমার উত্তরে জখম শব্দটি ব্যবহার করতে সুবিধা হয়েছে। ‘আপনার জন্য কী পাঠাবো?’ দেখো, ‘পাঠাবো?’ হবে ইচ্ছা-অনিচ্ছা জানার জন্য। অর্থাৎ আমার ইচ্ছেটা জেনে তুমি আমার পসন্দের জিনিসটি পাঠাতে চাচ্ছো। অথচ এখানে আবহটা ভিন্ন। এখানে মনে হচ্ছে, তুমি বুঝে উঠতে পারছো না, কোনটা ছেড়ে কোনটা পাঠাবে, তাই তো লিচু বলতে গিয়ে কচু বলে ফেলেছো। সেজন্য ‘পাঠাবো’-এর পরিবর্তে পাঠাই এবং (?)-এর পরিবর্তে (!) অধিক উপযুক্ত। তাছাড়া ‘পাঠাই’-এর কারণে দেখো ‘মণ্ডা-মিঠাই’ কথাটা কী সুন্দর খাপ খেয়ে গেলো! (এটা অবশ্য বাড়তি লাভ, এমনিতে ভাষাগত কারণেই এখানে ‘পাঠাবো?’-এর পরিবর্তে ‘পাঠাই!’ হতে হবে। বিস্ময় ও হতভম্বতা বোঝাতে বইয়ের ভাষায় ‘সারছে!’ বলা হয় না, বলা হয় ‘সেরেছে!’ ‘সারছে’টা হলো মুখের ভাষা। ‘নাকি অন্য কিছু?’- এখানে নাকি এর পরিবর্তে শুধু ‘না’ বলা ভালো। কেননা কে, কী, কেন, কোথায়, কবে ইত্যাদির পরে ‘নাকি’-এর স্থানে ‘না’ উত্তম। যেমন, (ক) যাবে কে, রাশেদ, না খালেদ? (খ) রাশেদ যাবে, নাকি খালেদ? (ক) তোমাকে কী দেবো, মিষ্টি, না টক? (খ) তোমাকে মিষ্টি দেবো, নাকি টক? ছন্দ মিলিয়ে যদি লিখতে চাও তাহলে ছন্দের মিলটা আকর্ষণীয় হওয়া চাই। আসবেন, আনবেন, বোঝবেন, এগুলো খুব সাদামাটা মিল। এজন্য সম্পাদনা করে লেখা হয়েছে- ‘ টমটমে চড়ে/ পাত্র ভরে/ মনভরে’ ‘কথাটা আগেই বলে রাখলাম/ আর আপনার অপেক্ষায় থাকলাম।’ এখানেও ছন্দের মিল সম্পর্কে একই কথা। তাছাড়া দ্বিতীয় বাক্যটিতে কোন রস নেই, অথচ তোমার চিঠিটা আগাগোড়া রসের চিঠি। তাই ছন্দ যেমন পরিবর্তন করা হয়েছে তেমনি দ্বিতীয় বাক্যটিও পরিবর্তন করা হয়েছে। ‘কেমন কবি কবি হয়ে গেলাম’ এখানে ছন্দপতন ঘটেছে। যদি লিখতে ‘কবি কবি হয়ে গেছি’ তাহলে রুচি, কাঁচি ও বাঁচি-এর সাথে মিল হতো। রসের চিঠির তুমি সমাপ্তি টেনেছো সাধারণ ও স্বাভাবিক চিঠির মত- ‘আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে এখানেই শেষ করলাম/ আবার কথা হবে, আজ বিদায় নিলাম। কিন্ত রসের চিঠির সমাপ্তিটাও হতে হবে রসপূর্ণ। যেমন আমার উত্তরের সমাপ্তিটা হয়েছে। ইচ্ছে করেই চন্দ্রবিন্দু দিলাম না, তারপর সেই চন্দ্রবিন্দুর তালাশের ছুতায় বিদায় নিলাম! সুন্দর হয়নি! একারণে তোমার চিঠির সমাপ্তি-অংশটুকু ছাঁটাই করে, ‘তাই এবার পালিয়ে বাঁচি’ দ্বারা সমাপ্তি টানা হয়েছে। তাহলে তুমি কি বুঝতে পারছো, তোমাদের লেখাগুলো জন্য আমাকে কতটা সময় দিতে হয় এবং কী পরিমাণ চিন্তা-গবেষণা করতে হয়! এবং বুঝতে পারছো কেন তোমাদের হাতে যেতে পুষ্পের এত বিলম্ব হয়! আসাদুল ইসলাম তানিম আলজামিয়াতুল ইসলামিয়া, পটিয়া ০ সম্পাদক ভাইয়া, বড় বিপদ আপনেরে লইয়া। ০০ মাথায় দিছি চড়াইয়া, যত পারো যাও কইয়া! ০ আগে করি সালাম নিবেদন, তারপরে কন, মন আছে কেমন? (তুমি যদি লিখতে, ‘কেমন আছে মন’ তাহলে বেশী ভালো হতো।) ০০ প্যাচাল না পাইড়া আসল কথা কন। ০ মনে আমার বড়ই যাতনা, পুষ্পের পাতায় নাই রম্যরচনা! এইডা কিন্তু আমাগো কাম্য না! ০০ ভাই রে! চোখটা খুইলা দেখেন না! আপনেগো রসনা তৃপ্ত করতে ষোল আনা, ফিরা আইছে রসের রচনা। ০ মনে কয় আপনেরে পাডাই জেলে, হুশ হইবো জেলের ভাত খাইলে! ০০ ভাইজানে কি ‘জেলের ছেলে’! মাহমূদুল হাসান, লালবাগ মাদরাসা, ঢাকা ০ ... অনেক দিন থেকে আমার মনে একটি বোবা প্রশ্ন। আমরা দরসীভাবে এত মেহনত করে আরবীভাষা শিক্ষা করি, কেন? কোরআন-হাদীছ বোঝার জন্য; ভালো কথা, কিন্তু কোরআন-হাদীছকে জাতির সামনে তুলে ধরার জন্য যে মাতৃভাষা শিক্ষার প্রয়োজন, তার ব্যবস্থা কেন আমাদের দরসে নেই?! তা কেন শিখতে হবে বাইরে থেকে ‘ভাষাশিক্ষার আসর’এবং ‘কলম মেরামতের’ কারখানা খুলে? কেন? কেন? শেষ পর্যন্ত প্রশ্নটা করেই ফেললাম পুষ্পের মালী ও কলি সবার কাছে। ০০ মুশকিল, বোবা প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্য তো চাই বোবা ভাষা! সে আমি পাবো কোথায়! আরেকটা কথা, প্রশ্নটা কি শুধু বোবা, না বধিরও? আমার জবাবটা শুনতে পাবে তো? শুধু মালীকেই প্রশ্নটা করো, কলিদেরকে নয়। কারণ প্রশ্নের আঘাত কোমল পুষ্পকলিদের জন্য নয়। তাদেরকে এখন শুধু প্রস্ফুটিত হতে দাও। তোমরা ভাগ্যবান যে, অন্তত ভাষাশিক্ষার আসর এবং কলম মেরামতের কারখানা পেয়েছো! এখন প্রশ্ন রেখে কাজ করো, যেন আগামী প্রজন্মের মনে কোন প্রশ্ন বা অনুযোগই না থাকে। বুঝলে হে প্রশ্নবাগীশ! আবু ওবায়দা সা‘আদ, মুক্তার গাঁতী, সিরাজগঞ্জ ০ ... আপনি কি শুধু কলম দ্বারা লেখেন, না চশমা ও কলম দু’টো দ্বারা? ০০ চশমা দ্বারা লিখি, কলম দ্বারা দেখি। এই যা, ভুল করলাম! চশমা দ্বারা দেখি, কলম দ্বারা লিখি। ০ আমি কিন্তু আপনার কলম ও চশমা কেড়ে নেবো যদি...। ০০ আর আমি বুঝি চেয়ে চেয়ে দেখবো! আসাদুল্লাহ, মদীনাতুল উলূম, আশুগঞ্জ, শহীদবাড়ীয়া ০ ... আমি রোযনামচা লিখে কোন উপকার পাইনি এবং আমার লেখার কোন উন্নতি হয়নি। ০০ ‘আমি পেটভরে খেয়েছি, ক্ষুধা দূর হয়নি’, বললেই হলো! তোমার পুরো একবছরের রোযনামচার খাতাটা পাঠাও দেখি! তোমার সহপাঠী যিয়াউল হককে সালাম। ইমদাদুল্লাহ আলমাসরূর, জামিয়া রাহমানিয়া, ঢাকা ০ .. আপনার কলমের নৈপুণ্যতা আমাকে মুগ্ধ করে। ০০ ‘নৈপুণ্যতা’! কামনা করি একদিন যেন মানুষ তোমার কলমের নৈপুণ্যে মুগ্ধ হয়। ০ ... এই উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য আমি অনেক দূর পথ চলতে চাই। কিন্তু পথ চলা সম্ভব হয় না। ০০ হাঁ, যানজটের যে অবস্থা! ০ আপনি তো ‘মিছবাহ’, তাই আমি চাই আপনার আলোকে আলোকিত হয়ে পথ চলতে। ০০ তার চেয়ে এক কাজ করো, দিনের বেলা পথ চলো, সূর্যের আলোতেই দিব্যি চলতে পারবে। শহীদুল ইসলাম, জামিয়া মাদানীয়া, ফেনী ০ সম্পাদক ভাইয়া! শোনেন, বিশ্বাস করেন, আমি পুষ্পের প্রেমে পড়ে গিয়েছি। শুধু পড়িনি, বরং প্রেমের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। ... ০০ শোনবো, তবে বিশ্বাস করবো কি না বলতে পারছি না। প্রেমে পড়ে কীভাবে, তারপর প্রেমের সাগর কেমন এবং তা কোথায়, আর সেই সাগরে হাবুডুবু খায় কীভাবে, এগুলো আমার জানা নেই। আমার কিন্তু ভয় করছে, হাবুডুবু খেতে গিয়ে যদি ডুবে যাও?! আতাউর-রহমান আলহাদী, ইদারাতুল মা‘আরিফিল ইসলামিয়া, মিরপুর, ঢাকা ০ আমার একটি স্বপ্ন ছিলো... ০০ স্বপ্নের কথা শুনলাম। আমি বলি কী, এখন স্বপ্ন থেকে জেগে ওঠো এবং কাজ শুরু করো। মুনীরুয্যামান, নগরকান্দা, ফরিদপুর ০ সম্পাদক ভাইয়া, আমার একান্ত ‘বিশ্বাষ’ আপনি ভালো আছেন, আমি কিন্তু ভালো নেই, কেন জানেন? ০০ জানি, কারণ তোমার বিশ্বাস বড় দুর্বল। শামসুল আবরার, উজানী মাদরাসা, কচুয়া, চাঁদপুর ০ আজ আমি তোমাকে এমন একটি পুষ্প উপহার দিতে যাচ্ছি... ০০ তোমার দীর্ঘ চিঠি পড়ে খুশী হলাম, যদিও ঠিক রসগোল্লার মত হয়নি; তবে যথেষ্ট মিষ্টি। তোমরা শিক্ষক, যিনি তোমাকে বাংলাভাষা ও সাহিত্যচর্চার জন্য অনুপ্রাণিত করছে, তাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। (আচ্ছা, এখানে কী একটা লেখা যেন থাকতো! তোমাদের কারো কি মনে পড়ে লেখাটির কথা! আরেকটি কথা, প্রথমে টা, পরে টি হলো কেন, বলতে পারো?)