শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা
মাসিক আল-কলম-পুষ্প
রমযান ১৪৩০ হিঃ (১৩) | কিশোর পাতা
কিশোর বন্ধুরা!
সালাম গ্রহণ করো। শুরুতেই একটি প্রশ্ন, তোমরা কি হযরত হাফেজ্জি হুযূর (রহ)-এর নাম শুনেছো? হয়ত শুনেছো, হয়ত শুনোনি। না শোনাটা আফসোসের বিষয় হলেও, অবাক হওয়ার মত নয়। কারণ আমরা আমাদের দূর অতীত থেকে তো বটেই, নিকট অতীত থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। শুধু চিন্তা-চেতনা ও পথচলার দিক থেকেই নয়, এমনকি সাধারণ জানা-শোনার দিক থেকেও। আমরা কি জানি, এদেশেরই গর্ব ও গৌরব হযরত ছাহেব কে ছিলেন? কী ছিলেন? কীভাবে তিনি বড় হয়েছেন? কী ছিলো তাঁর চিন্তা ও আদর্শ, নীতি ও চরিত্র? কী ছিলো তাঁর জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য? সমগ্র জাতির প্রতি এবং বিশেষ করে এদেশের আলেমসমাজের প্রতি কী ছিলো তাঁর অবদান? না, আমরা কিছুই জানি না? হযরত মাওলানা আতহার আলী (রহ), হযরত মাওলানা তাজুল ইসলাম (রহ) এবং .. এবং ..? কারো সম্পর্কেই আমরা কিছু জানি না, কারো কারো হয়ত নামটুকু জানি; কিন্তু তাঁদের কর্ম ও চিন্তা, ভাব ও ভাবনা এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এসব হারিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতলে। কিন্তু এভাবে কোন জাতি, সমপ্রদায় ও সমাজ আপন স্বকীয়তা বাজায় রেখে টিকে থাকতে পারে না। অতীত থেকে যাদের শিকড় কেটে যায় তারা জীবনী- শক্তি হারিয়ে ফেলে। তদ্রূপ অতীতের মধ্যে যারা স্থবির হয়ে থাকে তারাও নির্জীব হয়ে পড়ে। তাই আমাদের হতে হবে অতীত-আশ্রয়ী এবং ভবিষ্যতপ্রেমী। অতীতত থেকে আমরা গ্রহণ করবো এবং ভবিষ্যতকে দান করবো। অতীত ও ভবিষ্যতের মাঝে এভাবে সংযোগ রক্ষা করেই কোন জাতি, গোষ্ঠী ও সমপ্রদায় সমৃদ্ধ হয়।
হয়ত সবকথা বলতে পারিনি এবং যা বলেছি তাও বোঝাতে পারিনি, তোমরা বুঝতে চেষ্টা করো। অতীতকে ভালোবাসতে শেখো। নিকট অতীত ও দূর অতীতের আদর্শ মানুষ যারা তাদের জানতে চেষ্টা করো এবং তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করো চিন্তা ও চেতনা, আবেগ ও প্রেরণা, সত্য ও সততা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এবং সাধনা ও সাধুতা। তারপর নিজেকে উজাড় করে দাও ভবিষ্যতকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য। এভাবে অতীত তোমাকে সমৃদ্ধ করবে, আর ভবিষ্যত তোমার কাছ থেকে সমৃদ্ধ হবে।