আমাতুল্লাহ আযীয, হাবীবা, পাটগুদাম। মোমেনশাহী ০ তোমার ঢাকা ভ্রমণের লেখা যথাসময়ে পেয়েছি। তোমার লেখা ভালো, বানানভুলও কম। শুধু ‘স্তুপ’ না লিখে ‘সতূপ’ লিখলেই লেখাটা বানানভুল থেকে মুক্ত হতো। তুমি ‘আঁতকে’ ওঠায় চন্দ্রবিন্দু দিয়েছো এবং নিয়ম মনে রেখে ‘স্টেশন’ দন্ত্য-স দিয়ে লিখেছো, এটা তো খুব ভালো। পরীক্ষায় ভালো ‘রেজাল্ট’ করেছে লেখার কী প্রয়োজন ছিলো। ফল বা নতিজা শব্দদু’টি কী দোষ করেছে? তুমি আরব মাসতূরাতের আরবী বয়ানের তরজমা করেছো জেনে খুশী হলাম, আল্লাহ আরো তাওফীক দান করুন, আমীন। বিনতে শফীকুররহমান, মোমেনশাহী ০ তোমার রোযনামচা সুন্দর হয়েছে। নিয়মিত লিখতে থাকলে সুফল পাবে আশা করি। আবুল খায়ের তৈয়ব, ঠিকানাহীন ০ তোমার ‘সময় বয়ে চলেছে’ পেয়েছি। তোমার লেখার উদ্বোধনী অংশটা বেশ দীর্ঘ হয়ে গেছে। গভীর রাতে প্রকৃতির নির্জনতা সম্পর্কে দুতিনটি বাক্য বলে মূল বক্তব্যে চলে গেলে ভালো হতো। তারপর তোমার ব্যক্তিগত বিষয় বেশী পরিমাণে আলোচিত হয়েছে, যা শিরোনামের চাহিদা নয়। এসো কলম মেরামত করি বিভাগের লেখাগুলো তোমার বেশী করে পড়া দরকার। কাজী তানবীর, আশুগঞ্জ ০ পাখীর প্রতি তোমার ভালোবাসার কথা জেনে ভালো লাগছে, সেই সঙ্গে মানুষের প্রতি ভালোবাসাও দরকার, আর দরকার জীবনের দায়দায়িত্বের প্রতিও ভালোবাসা। তুমি নিয়মিত লিখছো, এটা শুভলক্ষণ। হাসান বিন সাত্তার, লালমাটিয়া, ঢাকা ০ দু‘আ করি, আল্লাহ তোমার নেক ইচ্ছা পূর্ণ করুন, আমীন। আশরাফুল আলম, কাশেফুল উলূম, দৌলতখান, ভোলা ০ তোমার মনের কষ্টের কথা জেনে আমারও কষ্ট হচ্ছে। তুমি এ পর্যন্ত কত লক্ষ শব্দ এবং কত হাজার বাক্য লিখেছো? এত তাড়াতাড়ি অধৈর্য হয়ে পড়লে চলবে কেন? ইবনে সাঈদ, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম ০ তোমার লেখার অনুশীলন নিয়মিত হওয়া দরকার। তাসনীম সালসাবীল, ছায়াবিতান, কুমিল্লা ০ তোমার লেখা ভালোই। নিয়মিত লিখতে থাকো। বাংলা সাহিত্যে অবাক বা হতবাক হওয়ার ক্ষেত্রে চোখ রসগোল্লা হওয়ার কথা নেই, ছানাবড়া হওয়ার কথা আছে। কারণ চোখ তো একেবারে গোল নয়। আহমদ মুস্তায়ীন, মাদরাসাতুল মাদীনাহ ০ তুমি তোমার লেখায় মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছো খুব সুন্দরভাবে, তারপর পুষ্পের বন্ধুদের অনুরোধ করেছো, তারা যেন মাকে কষ্ট না দেয়। তোমার লেখা আমাকে অবাক করেছে। তোমার মা তোমাকে যে উপদেশ দিয়েছেন তার উপর খুব বেশী করে আমল করার চেষ্টা করো। নোমান আসলাম, বাইতুস্সালাম, উত্তরা, ঢাকা ০ তুমি মা সম্পর্কে লিখেছো। আমার শুধু জানতে ইচ্ছে করে, মায়ের সম্পর্কে তোমার লেখা এবং মায়ের প্রতি তোমার আচরণ কি অভিন্ন। জিজ্ঞাসা করলাম এজন্য যে, আমাদের এখানে একজনের ক্ষেত্রে খুব বিশ্রী রকম ভিন্নতা দেখতে পেয়েছি। তুমি লিখেছো, ‘ছেলের চিন্তায় মা সবসময় বিহ্বল থাকেন।’ প্রথম কথা, এক্ষেত্রে বিহ্বল বলা হয় না, অস্থির, পেরেশান, ব্যাকুল ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার কার হয়। দ্বিতীয় কথা, মা কি শুধু ছেলের চিন্তায় ব্যাকুল হন, মেয়ের চিন্তায় নয়? এই বুঝি জেনেছো মায়ের মন সম্পর্কে! সাঈদুর্রহমান, রহমানিয়া, সাতমসজিদ, ঢাকা ০ তুমি রোযনামচায় লিখেছো, ‘নতুন মাদরাসায় ভর্তি হয়েছি, তাই মনটা ভালো না। সবকিছু আমার কাছে অপরিচিত, এমনকি নিজেকেও চিনতে পারছি না।’ কেন ভাই, তোমার শরীরে কি তিল বা কোন জন্মদাগ নেই। তা দেখেই তো নিজেকে চিনতে পারো সহজে! তুমি আরো লিখেছো, ‘আজ ভাইয়া এসেছেন; আমার চোখে পানি ছিলো, কিন্তু ভাইয়া দেখেও না দেখার ভান করে বললেন, শুধু শুধু চিন্তা করো না, তাতে ‘সাস্থ’ নষ্ট হবে।’ কিন্তু ‘সাস্থ’টা তো নষ্ট হয়েই গেছে। ‘ভালো-মন্দ’ খেয়ে ‘স্বাস্থ্য’টা ঠিক করো। আশরাফুল ইসলাম জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া, তেজগাঁও, ঢাকা ০ পুষ্পের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে গিয়ে তুমি লিখেছো, ‘পুষ্প আমার কাছে অতি প্রিয়।’ এখানে ‘কাছে’ শব্দটি অতিরিক্ত, এর প্রয়োজন নেই। ‘যিনি পুষ্পের বাগানকে পরিচর্যা করেন তাকে জানাই প্রাণঢালা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা’ তোমার ভালোবাসা কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করলাম, তবে তোমাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, পুষ্প ও বাগান সমশ্রেণীর শব্দ নয়, হয় বলো, ফুলের বাগান/ফুলবাগান, না হয় বলো, পুষ্পের উদ্যান/ পুষ্পোদ্যান। আর ‘বাগানকে’ থেকে আলামাতে মাফউল হযফ করে দাও। তুমি আরো লিখেছো, ‘আমারও মানব-উদ্যানে পুষ্প হয়ে ফুটতে মন চায়।’ সঠিক শব্দচয়ন হলো, ফুল হয়ে ফুটতে এবং পুষ্প হয়ে প্রস্ফুটিত হতে। আর মন চায় কথাটি এখানে সুন্দর হয়নি, তাছাড়া ‘মন চায়’ নয়, ‘মনে চায়’। তোমাকে লিখতে হবে, ‘ইচ্ছে জাগে মানব-বাগানে ফুল হয়ে ফুটি!’ অথবা, ‘হৃদয়ে আকুতি জাগে মানব-উদ্যানে পুষ্পরূপে প্রস্ফুটিত হওয়ার’ তুমি লিখেছো, ‘এ আলোর মিছিল চলবে কেয়ামত অবধি।’ ভালো হতো যদি লিখতে, ‘কেয়ামত পর্যন্ত’। মুনির হোসাইন, লালবাগ, ঢাকা ০ লেখা এবং লেখার সঙ্গে ‘লেখা-পড়া’ অব্যাহত রাখো, একটি নির্দিষ্ট নিযামুল আওকাত অনুযায়ী। দরসিয়াতের পড়া যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। শফিউল্লাহ ও যোবাইর আলহেরা, টাঙ্গাইল ০ তোমাদের দু’জনের ছড়া পেয়েছি। লেখা শেখার জন্য ছড়া ও কবিতা নয়, গদ্য হলো আদর্শ ক্ষেত্র, সুতরাং গদ্য লেখার চেষ্টা করো। মুহম্মদ ফায়ছাল মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা ০ তুমি কাক সম্পর্কে লিখেছো, ‘কাকের রঙ কালো, আওয়ায কর্কশ। কাককে মনে করা হয় কুলক্ষণের প্রতীক। পাখী হিসাবে কাককে পছন্দ করে এমন মানুষ নেই বললেই চলে, যেমন পছন্দ করে কোকিল, বুলবুলি, দোয়েল, ময়না, টিয়া ও অন্যান্য পাখী। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, কাকও আল্লাহর সৃষ্টি, আর এই কা-কা অওয়ায আসলে আল্লাহর ইবাদত ও তাসবীহ, যা আমরা বুঝি না। তাছড়া কাক থেকে আমরা ঐক্য ও একতার শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি যা আমাদের মাঝে এখন নেই বললেই চলে। কাক আমাদের অনেক উপকারও করে। কাক ময়লা আবর্জনা ও মরা-পচা খেয়ে পরিবেশের দূষণ রোধ করে ...। তুমি আরো লেখো। ওবায়দুল্লাহ ফরিদাবাদ মাদরাসা, ঢাকা ০ ভিক্ষুক, এই নামে তোমার লেখাটি পড়েছি। তুমি এমন একটি লোকের কাহিনী লিখেছো যে, একসময় সচ্ছল ও সম্পদশালী ছিলো, কিন্তু সে অপব্যয় ও অপচয় এবং অনাচার ও পাপাচারে লিপ্ত হলো, ফলে কিছু দিনের মধ্যে তার ধনসম্পদ শেষ হয়ে গেলো এবং সে হয়ে গেলো নিঃস্ব ফকীর, এমনকি একসময় সে পেটের দায়ে মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য হলো। একদিন সবাই যাকে সম্মান করতো তার অর্থবিত্তের কারণে, এখন তারাই তাকেই ঘৃণা করে মানুষের সামনে তার হাত পাতার কারণে। তুমি কি নিয়মিত লেখো? তোমার বানানে কিন্তু প্রচুর ভুল। আর গদ্য লেখায় এমন অন্ত্যমিল রক্ষা করার কী দরকার! তাতে তো লেখার গতি বাধাগ্রস্ত হয়, শেখ সাদীর গুলিস্তার যে তরজমা পুষ্পে ছাপা হয় তা কিন্তু লেখার ক্ষেত্রে অনুসরণ করার জন্য নয়। রাহমাতুল্লাহ ছাওতুল হেরা, নেত্রকোণা ০ তোমার লেখার বিষয়বস্তুটা ভয়ের, তাই না! তো পুষ্পের বন্ধুরা যদি ভয় পায়, তখন কী হবে! তাই লেখাটা আমার কাছেই রেখে দিলাম, অন্য লেখা পাঠাও। উছমান গনী কাশেফুল উলুম, মধুপুর, টাঙ্গাইল ০ ‘মানুষ হতে চাই’ শিরোনামে তুমি ভালো ভালো কথা লিখেছো। তোমার স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছো। তুমি নিশ্চয় জানো, ভালো কথার চেয়ে এখন প্রয়োজন ভালো কাজের। তুমি ভালো কাজ করে দেখাও, আমরা তোমার সফলতা কামনা করি। তোমার লেখার শেষ বাক্যটি সুন্দর- ‘মানুষের এই পৃথিবীতে মানুষ খুব বেশী নেই।’ সুমাইয়া তাসনীম মধ্যবাড্ডা, ঢাকা ০ তুমি কবিতা লিখেছো। আমি জানতে চাই, তুমি কি কবি হতে চাও না লেখক (মানে লেখিকা)? যদি বলো কবি হতে চাই তাহলে ঠিক আছে, কবিতা লেখো; আপত্তি নেই। তবে তার আগে কবিতার বই পড়ো এবং কবিতা সম্পর্কে বই পড়ো, আর ছন্দের উপর প্রাথমিক কিছু জ্ঞান অর্জন করো, তারপর কবিতা লেখার মশক করো। তাতে প্রত্যাশিত ফল পাবে বলে আশা করি। আর যদি বলো, আমি গদ্য লেখা শিখতে চাই তাহলে বলবো, পদ্য লিখে কেউ গদ্য শিখতে পারে না, গদ্য শিখতে হলে গদ্যই লিখতে হবে। দেখো, এতো কষ্ট করে শব্দ খুঁজে খুঁজে এবং ছন্দ ও অন্ত্যমিল চিন্তা করে যে কবিতা তুমি লিখেছো তা যদি গদ্যে লিখতে কত সহজ হতো এবং কত সুন্দর হতো- ‘ আমার চারপাশে এই যে সবুজশ্যামল প্রকৃতি, এই যে ছায়াঘেরা বাগান এবং বাগানের ফুল ও ফল, ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাস এবং ফলের রস ও স্বাদ, হৃদয়মুগ্ধকরা যা কিছু দেখি, হে আল্লাহ সব তোমারই দান, তুমি বড় মেহেরবান। দিনে তুমি সূর্যের আলো দিয়েছো, সে আলোতে আমরা কাজ করি। রাতে তুমি অন্ধকার দিয়ে পৃথিবীকে ঢেকে দিয়েছো যাতে সারা দিনের কর্মক্লান্তির পর আমরা আরামে ঘুমোতে পারি। মানুষ, পশু, পাখী, সবাইকে তুমি ক্ষুধা নিবারণের জন্য আহার ও রিযিক দান করেছো। প্রয়োজনীয় খাদ্য না পেলে তো সমস্ত প্রাণী অনাহারে মারা যেতো। সুতরাং খাদ্য ও রিযিক দান করে তুমি কত বড় দয়া ও অনুগ্রহ করেছো, হে আল্লাহ তুমি বড় মেহেরবান। মানুষের মুখে তুমি ভাষা দান করেছো, কত অসংখ্য জাতি, কত বিচিত্র ভাষা! ভাষার সাহায্যে মানুষ একে অন্যের কাছে মনের ভাব ব্যক্ত করতে পারে। সতরাং ভাষা তোমার বিরাট দান। হে আল্লাহ তুমি বড় মেহেরবান .. এভাবে শেষ পর্যন্ত কত সহজ সুন্দরভাবে লেখা যায়! তো তোমার মনে যদি কোন ভাব ও ভাবনা আসে, তুমি তা কবিতার পরিবর্তে সহজ সরল গদ্যে এভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করো। তাহলে তোমার লেখা হবে সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্ত। তারেক জামীল, ফেনী ০ পুষ্পের প্রতি তোমার ভালোবাসার জন্য ধন্যবাদ। তোমার লেখা ‘দুরন্ত আশা’ পেয়েছি এবং পড়েছি। তুমি ‘চিন্তা-পিকির’ এবং ‘হারানো মুক্তা পিরে পেলাম’ লিখেছো কেন? আর ‘করতে ছিলাম’ নয়, করছিলাম। তুমি নতুন লেখা পাঠাও। আবু জা‘ফর, গোপালগঞ্জ ০ সময়ের হেফাযত সম্পর্কে তুমি যা লিখেছো তা খুব মূল্যবান, তুমি বড় উত্তম প্রতিজ্ঞা করেছো, এখানে ছোট্ট আরেকটি প্রতিজ্ঞা করে নাও, বানানে কখনো ভুল করবে না, আর কখনো ‘হটাৎ’ ‘পরিক্ষা’ ‘মুহুর্ত’ ইত্যাদি লিখবে না। আহমাদুল্লা নো‘মান, বাইতুস্সালাম, উত্তরা, ঢাকা ০ তুমি লিখেছো, ‘মাদরাসার সিড়ি দিয়ে নীচে নামতে ছিলাম .. পুষ্প দেখে আনন্দে মনটা নেচে উঠলো। টাকা আমার সাথেই ছিলো, তাই দেরি না করে একটি পুষ্প নিয়ে নিলাম। তারপর তার চারদিক থেকে সুবাস নিতে শুরু করলাম।’ তোমার সিঁড়িতে চন্দ্রবিন্দু কোথায়? নামতে ছিলাম, পড়তে ছিলাম, লিখতে ছিলাম, এগুলো থেকে আমরা কবে উদ্ধার পাবো? আমরা জানি, টাকা ছাড়া আমাদের চলে না, তারপরো টাকার উল্লেখটা এড়িয়ে যাওয়াই সুরুচির দাবী। তুমি তোমার আব্বাকে বলবে, ‘আব্বু আসার সময় আমার জন্য একটি কলম এনো।’ একটি কলম কিনে এনো কিছুতেই বলবে না, তাই না! মনটা নেচে ওঠা কি খুব সুন্দর! দৃশ্যটা কল্পনা করো তো! তার চেয়ে বলো না, আনন্দে মনটা ভরে উঠলো/উদ্বেলিত হলো। সবচে’ ভালো মনটা খুশিতে ভরে গেলো, অথবা হৃদয়টা আনন্দে উদ্বেলিত হলো। খুশিতে মনটা নেচে উঠতে পারে, আনন্দে নয়। যাই হোক, একজন তালিবের মন নাচতে পারে না, বিশেষত উত্তম কোন বিষয়ের ক্ষেত্রে। মুহম্মদ মুনাদী দারুল আরকাম, শহীদবাড়িয়া ০ তোমার হস্তাক্ষর সুন্দর, তবে ‘র’-এর ফোঁটা এভাবে দিয়ো না, স্বাভাবিকভাবে দিয়ো। আর ফুল ফোটাতে চন্দ্রবিন্দু না লাগলেও বৃষ্টির ফোঁটাতে লাগবে। তোমার লেখা ভালো, তবে ছন্দপ্রীতি ত্যাগ করো, সাবলীল গতিতে লেখো। তোমার বানানের অবস্থা তো ভালো, কিন্তু ‘রূপ’-এ হ্রস্ব উকার কেন? ফযলুল আমীন, জামিয়া উছমানিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর ০ তোমার লেখার শিরোনামটি বড় সুন্দর নির্বাচন করেছো, ‘পড়ন্ত বিকেলের ভাবনা’। লেখাও মোটামুটি ভালো। তবে পুষ্প অধ্যয়ন করো গভীর মনোযোগ দিয়ে এবং নিজের লেখায় তার ছাপ আনতে চেষ্টা করো। কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহার করলেই লেখা উন্নত হয়, এ ধারণা ভুল, যে লেখা হৃদয়কে স্পর্শ করবে সেটাই হবে উর্ত্তীণ লেখা। উদাহরণ দেখো- তুমি লিখেছো, ‘পড়ন্ত বিকেল, দীপ্তিময় সূর্যের কিরণ এখনো নির্বাপিত হয়নি, অস্তমিত হয়নি।’ দীপ্তি, কিরণ, নির্বাপিত, অস্তমিত, ইত্যাদি বেশ কিছু উচ্চমানের শব্দ এখানে আছে। কিন্তু একজন পাঠক হিসাবে চিন্তা করে দেখো, বাক্যটি হৃদয়গ্রাহী হয়নি। যদি লিখতে- ‘পড়ন্ত বিকেল, দিনের ক্লান্ত-বিষণ্ন সূর্য তখনো অস্ত যায়নি’ তাহলে হৃদয়গ্রাহী হতো, যদিও শব্দগুলো সহজ। আর যদি নীচের বন্ধনীর কথাগুলো যোগ করো তাহলে তো হৃদয়গ্রাহিতা অনেক বেড়ে যাবে, অথচ কঠিন শব্দ নেই! (হয়ত ইচ্ছে হয় না আমাদের ছেড়ে যেতে; তবু যেতে হবে, তবু যেতে হয়। কারণ পৃথিবীর অন্য প্রান্তে যে, ভোরের রাঙ্গা সূর্যের প্রয়োজন!) কঠিন শব্দ যে ব্যবহার করবে না, তা নয়, তবে প্রয়োজনে এবং উপযুক্ত স্থানে, আর সেটা বোঝার জন্য প্রয়োজন উন্নত অধ্যয়নের। রোকেয়া বেগম সরাইল, শহীদবাড়িয়া ০ তোমার কি বি, বাড়িয়া লিখতে খুব ইচ্ছে করে! আমার তো শহীদ বাড়িয়া লিখলে মনে প্রশান্তি আসে, তোমার লেখা ভালো, বানানের দিকে মনোযোগ দাও। মুহীউদ্দীন খান তানভীর দারুল আরকাম, পশ্চিম মেড্ডা, শহীদবাড়িয়া ০ তোমার সুচিন্তিত লেখাটি আমি গভীর আন্তরিকতার সঙ্গে পড়েছি। লিখতে থাকো এবং ভাবতে থাকো, সময় হলেই বসন্ত আসে। জাবের আব্দুল হাই মাদরাসাতুল মাদীনাহ ০ তোমার লেখাগুলো পেয়েছি। নামাযের জন্য দোকান খোলা রেখে মসজিদে যাওয়ার দৃশ্য দেখে তুমি অভিভূত হয়েছো এবং আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছো যে, একদিন যেন সারা বাংলাদেশে এ দৃশ্য যায় আরবদেশের মত। আল্লাহ কবুল করুন, আমীন। এহসান আব্দুল মজীদ, দারুল আরকাম, শহীদবাড়িয়া ০ তোমার রোযনামচা মোটামুটি ভালোই হচ্ছে। নিয়মিত লেখো তো! পরীক্ষা সম্পর্কে তোমার উস্তায মুহতারামের যে মতামত রোযনামচায় আলোচনা করেছো তাতে চিন্তার খোরাক রয়েছে। আতাউর্রহমান এদারাতুল মা‘আরিফ, মিরপুর ০ তোমার লেখা যেমন সুন্দর তেমনি সুন্দর কাগজের ঘ্রাণ! নাকি সেটি ছিলো তোমার লেখারই ঘ্রাণ! সাইফুল ইসলাম বিন যহীর নবাববাড়ী, চৌমুহনী, কুমিল্লা ০ তোমার লেখা ও হস্তাক্ষর সুন্দর। বিষয়বস্তুর কারণে ছাপানো গেলো না, নতুন লেখা পাঠাও শহীদ হাসান মাদরাসাতুন্নূর, মোমেনশাহী ০ তুমি লিখেছো ‘ঘুমের মাঝে দেখা তোমার একটি স্বপ্নের কথা, কিন্তু শুরুতে পাঠক ভাববে, তুমি বুঝি সত্যি ঘটনা বলছো। ঘটনার শেষে এসে বুঝতে পারবে আসল কথা, যখন তুমি লিখেছো, ‘ভয়ে আমি দিলাম দৌড়, আর মশারি ছিঁড়ে খাট থেকে গিয়ে পড়লাম মাটিতে! গল্প বলার এ কৌশলটি সুন্দর। মুৃহাম্মদ আলী জামেয়া রাহমানিয়া, ঢাকা তোমার লেখা ‘বৃষ্টিভেজা আষাঢ়’ মোটামুটি ভালো। তবে ‘আষাঢ়ে সবকিছু ভেজা ভেজা নরম, রাজি .....র মতন’ এ বাক্যটা অসঙ্গত মনে হওয়ায় ছাপা গেলো না। তুমি নতুন নতুন লেখা পাঠাতে থাকো। আ, হ, ম, রাহাত জামেয়া ইসলামিয়া, মাইজদী তুমি লিখেছো, ‘বিকেলে ঘুম থেকে উঠি, নাস্তাটা সেরে ফেলি, ... নদীর দিকে হাঁটতে শুরু করি, কূলে গিয়ে বসি। ক্রিয়াপদের এরকমের ব্যবহার এখন অনেকে করছে। ক্ষেত্রবিশেষে এটা গ্রহণযোগ্য এবং এর প্রয়োজনও পড়ে, তবে সাধারণভাবে যত্রতত্র এটা সুন্দর নয়। তুমি লিখতে পারতে- ঘুম থেকে উঠলাম। নাস্তাটা সেরে ফেললাম। নদীর দিকে হাঁটতে লাগলাম/হাঁটতে শুরু করলাম। তারপর কূলে গিয়ে বসলাম। সাধারণভাবে এই ক্রিয়াপদের ব্যবহার উত্তম। অনেকে এরকম লেখে- ‘সকাল দশটায় সে আমার আসে, আমরা দু’জন কিছুক্ষণ আলাপ করি, তার পর সে চলে যায়, আমিও আমার কাজে বের হয়ে পড়ি। বিকালে বাসায় এসে শুনি সে সড়কদুর্ঘটনায় মারা যায়, খবরটা শুনে আমি শোকে কাতর হয়ে পড়ি ... এর চেয়ে ভালো ছিলো, এভাবে লেখা- ‘সকাল দশটায় সে আমার কাছে এসেছিলো। আমরা কিছুক্ষণ গল্প করি, তারপর সে চলে যায়, আমিও আমার কাজে বের হয়ে পড়ি। বিকালে বাসায় ফিরে শুনলাম সড়কদুর্ঘটনায় সে মারা গেছে। খবরটা শুনে আমি শোকে কাতর হয়ে পড়লাম ...। কখনো সুযোগ হলে ‘এসো কলম মেরামত করি বিভাগে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করার ইচ্ছে আছে। নাজমুল হাসান মাদরাসাতুন-নূর, ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল তোমার লেখার ‘আন্দায’ ও ভঙ্গিটা ভালো। তাতে বেশ সাবলীলতা আছে। তুমি তালাশ করে করে কঠিন শব্দ ব্যবহার করোনি। সাধারণ শব্দ ব্যবহার করেছো, যা আমরা কথা বলার সময় করি। এটাই লেখার স্বাভাবিক ধারা। এভাবে লিখতে থাকো। ইনশাআল্লাহ তোমার লেখার ক্রমশ উন্নতি হতে থাকবে। ইকরাম হোসাইন কালিগঞ্জ, গাজীপুর তোমার রোযনামচা ভালো লেগেছে। ভিখারিণী মা ও তার কঙ্কালসার ছেলেটির যে করুণ চিত্র তুমি এঁকেছো সত্যি তা মর্মস্পর্শী! শেষে তুমি লিখেছো, পুষ্পের বন্ধুরা, এসো আমরা সবাই তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই ... কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, রোযনামচায় তুমি পুষ্পের বন্ধুদের সম্বোধন করে আহ্বান জানাচ্ছো কীভাবে? রোযনামচা তো হলো ব্যক্তিগত খাতায় ব্যক্তিগত লেখা। হাঁ তুমি এভাবে লিখতে পারো, আমার ইচ্ছে হয় পুষ্পের বন্ধুদের আহ্বান জানাই যেন তারা... অথবা এভাবেও লিখতে পরো, পুষ্পের বন্ধুরা যদি গরীবের প্রতি ....। আসল তুমি রোযনামচা লেখোনি; তুমি পুষ্পের উদ্দেশ্যে একটি লেখা তৈরী করে পাঠিয়েছো। অনেক ছেলেই এটা করে। নিয়মিত রোযনামচা লেখে না। মাসে একদিন কি দু’দিন পুষ্পের উদ্দেশ্যে একটা দু'টো লেখা লেখে রোযনামচার নামে! আমি কি রোগটা ধরতে পেরেছি। কিন্তু এতে ক্ষতিটা কার? মুহাম্মদ মুশাররফ মাদানীনগর মাদরাসা, ঢাকা ০ তোমার লেখা ‘হিসাব মেলে না’ পেয়েছি। আমারও হিসাব মিলছে না, যে ছেলে বাণিজ্য- মন্ত্রীকে এত কড়া রাজনৈতিক ধমক দিতে পারে, আর পত্রিকার ঠিকানায় পাঠাতে পারে তার বানানের এমন দুর্দশা কেন? তুমি লিখেছো ‘প্রখোর রোধ’ তোমার আশেপাশের কাউকে জিজ্ঞাসা করে না তো! লোগাত খুলে দেখার কথা বললাম না এজন্য যে, সম্ভবত তোমার কাছে কোন লোগাত নেই। তোমার ‘সান্তনা’র ‘ব’ কোথায়? হায়, আমাকে যদি কেউ একটু সান্ত্বনা দিতো! বাজান, একটু শেখার চেষ্টা করো। অন্তত বাংলা বানানে নির্ভুল হও; তখন হয়ত তোমার লেখাকে দেশের মানুষ গুরুত্ব দেবে। বুঝতে পারছি, কথাগুলো কড়া হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমার মেজাযও তো সব সময় একরকম থাকে না! মাফ করো ভাই। আতাউর-রহমান, এদারাতুল মাআরিফ আলইসলামিয়্যাহ তোমার চিঠি পেয়েছি। প্রথমে পড়েছি, তারপর পাঠ করেছি, তারপর অধ্যয়ন করেছি। তুমি কি নিয়মিত রোযনামচা লেখো! একথাটা আমি এতবার এতভাবে বলেছি যে, রোযনামচা শব্দটাও মনে হয় আমার প্রতি বিরক্ত হয়ে গেছে, আর তোমরা তো বিরক্ত হয়ে গেছো আগেই। ভাবছো, বুড়োটাকে নিয়ে তো আচ্ছা ..!