রজব ১৪৩৯ হিঃ (৩/৩)

পুষ্পকলি

পুষ্পকলি - ৪

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

আজ আমার কলমটা হারিয়েছিলো

হুযূর বললেন, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন পড়ে তালাশ করো, ইনশাআল্লাহ্ পেয়ে যাবে।

আমি ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন পড়ে তালাশ করেছি, আর কলমটা পেয়ে গিয়েছি, আর বলেছি, আলহামদু লিল্লাহ! তখন আমার অনেক খুশী লেগেছে।

আজ আমি ‘বাংলায় বিসমিল্লাহ’ শেষ করেছি। এখন আমি ‘ক্ষ’ লিখতে পারি, আলহামদু লিল্লাহ!

  আবিদ হাছান, গাজীপুর, ঢাকা

বারান্দায় আমার কয়েকটি গাছ আছে

বেশ কয়েকদিন হলো, গাছগুলোর কাছে যাওয়া হয় না, পড়ালেখার ব্যস্ততার কারণে। আজ গিয়ে দেখি, এ কয়দিনে গাছগুলো যেন অনেক সুন্দর হয়েছে। অপরাজতিা গাছটা বড় একটা ঝোপের মত হয়েছে। সন্ধ্যামালতীটাও বড় হয়েছে। আর গোলাবগাছে তো কি সুন্দর বড় বড় দু’টি লাল গোলাব! একটা আধফোটা কলিও আছে! হয়ত আগামীকাল ফোটবে। দেখে কী যে আনন্দ হলো!!

গাছ ও তার সবুজ পাতা এবং গাছের ছায়া আমার খুব ভালো লাগে। হৃদয়টাও যেন সবুজ হয়ে যায়, শান্তশীতল হয়ে যায়। গোলাবদু’টো যেন আমারই দিকে তাকিয়ে আছে! আমাকে কি কিছু বলতে চায়?! (নাম নেই কেন?!)

 

মাঠে হলুদের গালিচা

মাঠে হলুদের গালিচা যিনি বিছিয়েছেন আমার জন্য, সোনালী ফসল ফলিয়েছেন আমার জন্য, গাছের ডালে ডালে এত ফুল ও ফল সাজিয়েছেন যিনি আমার জন্য; অন্ধকার রাতের তারার মেলা যিনি বসিয়েছেন আমার জন্য, এই যে চাঁদ বাড়ে কমে, চাঁদ যিনি সৃষ্টি করেছেন আমার জন্য, আমি কি তাঁকে ভালো না বেসে পারি?! আমি কি তার ইবাদত না করে পারি?! বিশ্বজগতের সবকিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন আমাদের উপকারের জন্য, আমাদের সুখ শান্তির জন্য। তাই এসো আমরা সবাই আল্লাহর শোকর করি। সুফিয়ান, মাদানী মক্তব, মাদরাসাতুল মাদীনাহ,ঢাকা

০০ তোমার ‘আমার মা’ লেখাটিও সুন্দর হয়েছে। আশা করি, নিয়মিত রোযনামচা লিখছো।

আমার খরগোশ, তুমি ভালো থেকো!!

খরগোশ আমার খুব প্রিয়! অনেক দিন থেকে ইচ্ছে, একজোড়া খরগোশ পালি। নিজের হাতে ওদের খাওয়াই, তুলতুলে গায়ে হাহ বুলিয়ে আদর করি। অনেক কেঁদে, অনেক চোখের পনি ফেলে আব্বুর কাছ থেকে একজোড়া খরগোশ আদায় করলাম। সেদিন আমার কী যে আনন্দ হলো!!

শুনেছি খরগোশ গাজর পছন্দ করে, তাই গাজর দিলাম। ওমা! গাজর দেখি ছুঁয়েও দেখে না! আব্বু বললেন, ছোট তো, গাজর চিবোতে পারে না। তখন ধনে পাতা, লেটুস পাতা দিলাম, বাহ্, কি সন্দর খাচ্ছে! দেখে খুব আনন্দ হলো!!

প্রতিদিন সকালে খরগোশদু’টিকে খাঁচা থেকে বের করি, আর ওরা দু’টি খুশিতে লাফালাফি করতে থাকে। দেখে কী যে ভালো লাগে! ইচ্ছে হয়, আমিও ওদের সঙ্গে খেলায় যোগ দিই! ওদের পিছনে ছুটতে থাকি, কিন্তু নাগাল পাই না। শেষে ক্লান্ত হয়ে খেলার আশা ছেড়ে দেই।

দিন যায়, রাত আসে। রাত যায়, দিন আসে। খরগোশ দু’টির প্রতি দিন দিন সবার বিরক্তি বাড়ে, আর আমার শুধু মায়া বাড়ে। রাত্রে খরগোশের খাঁচাটা আমার খাটের কাছে রাখি। খরগোশদু’টি যখন ঘুমিয়ে পড়ে, আমিও ঘুমিয়ে পড়ি।

একবার একটা খরগোশ আমার হাতে এমন কামড় দিলো যে রক্ত বের হলো, কিন্তু আমার কষ্ট হলো না, চোখেও পানি এলো না। মিষ্টি হেসে বললাম, ওরে দুষ্ট, এভাবে কামড় দিলে কষ্ট হয় না বুঝি!

এরপর খরগোশটা আর কখনো কামড় দেয়নি।

সবাই এমন বিরক্ত হলো খরগোশ-দু’টির প্রতি! আমার কান্নাকাটি, আর চোখের পানিতে কারো মন নরম হলো না। বড় ভাইয়া দোকানে দিয়ে এলেন বিক্রি করার জন্য। এখনো মনে হলে ভীষণ কান্না পায়। আর আল্লাহকে বলি, যেখানেই আছে ওদের তুমি সুখে রেখো, নিরাপদে রেখো!

উম্মেহানি তাক্বিয়া, ঢালকানগর ঢাকা

আমার রোযনামচা 

 আম্মুকে খুব মনে পড়ছে। কত দূর থেকে এখানে এসেছি, আল্লাহকে খুশী করার জন্য এবং নবীজীর ওয়ারিছ হওয়ার জন্য। আম্মুকে ছেড়ে থাকতে আমার খুব কষ্ট হয়। আম্মু বলেন, ইলমের জন্য কষ্ট তো করতেই হবে! আম্মু এখন কী করছেন?! নামায পড়ছেন, তাসবীহ পড়ছেন?! রান্নাঘরে রান্না করছেন?! আম্মুকে যদি একটু হলেও দেখতে পেতাম! আমার যদি দু’টো ডানা থাকতো, উড়ে গিয়ে আম্মুকে একটা চুমু দিয়েই আবার চলে আসতাম! সবাই ঘুম থেকে জাগার আগেই চলে আসতাম! কেউ টের পেতো না। পরীদের ডানা আছে, আমার ডানা নেই কেন! পরীরা নাকি মাসুম বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা করে; আমার সঙ্গে পরীর দেখা হলে বলবো, তোমার তো ডানা আছে, উড়তে পারো। আমাকে আম্মুর কাছে নিয়ে চলো। আম্মুকে একটু দেখেই চলে আসবো।

হুযূর বলেছেন, যখন তোমার আম্মুর কথা মনে পড়ে তখন মন খারাপ না করে আম্মুর জন্য এই দু‘আ করো, ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানী ছাগীরা’। তখন তোমারও মনে শান্তি হবে, তোমার আম্মুরও লাভ হবে।

হুযূরের কথা ঠিক হয়েছে। যখনই এই দু‘আ পড়ি, আমার মনে শান্তি হয়ে যায়। (৫/৫/৩৯ হি.)

মাহদী হাসান, মাদানী মাক্তাব, মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা

নাফিস, মাদানী মক্তব, মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা

০০ তোমার রোযনামচা সুন্দর হয়েছে। যথেষ্ট সুন্দর! তুমি নিয়মিত রোযনামচা লিখতে থাকো।

রোযনামচা নিজেই একজন শিক্ষক, যে তোমাকে তোমার খুব কাছে থেকে, শিক্ষা দেবে, সুন্দর ভাষা, সুন্দর চিন্তা এবং সুন্দর চরিত্র।

তুমি যতেœর সঙ্গে রোযনামচা লেখো, দেখবে, প্রতিদিন তোমার চিন্তা উন্নত হচ্ছে, তোমার আখলাক ও চরিত্র দিন দিন সুন্দর হচ্ছে। তোমার মুখের ভাষা এবং কলমের ভাষা সুন্দর হচ্ছে!!

রোববার, ১৯/৪/৩৯ হি.

 আজ হুযূর বললেন, যার রোযনামচা সুন্দর হবে তাকে পুরস্কার দেয়া হবে। আমি মনে মনে বললাম, আজ আমি পুরস্কার পেয়েই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ! চেষ্টা করলে সবই সম্ভব! একটি মুরগীর ছানা থেকে আমি চেষ্টা করার শিক্ষা পেয়েছি। ছানাটি পায়ে আঘাত পেয়েছিলো, হাঁটতে পারছিলো না, তবু ...!

আল্লাহ আমাদের চেষ্ট করার তাওফীক দান করুন, আমীন।

শাহ মুহাম্মদ ইয়াহয়া, মাদানী মক্তব

আম্মু এলেন; আম্মু চলে গেলেন!

বুধবার, ২২/৪/৩৯ হি,

আজ বিকেলে আম্মু এসেছিলেন। আমার খুব ভালো লেগেছিলো। আম্মু কত কথা বললেন, কত হাসলেন, কত আদর করলেন! আম্মুর আদর পেয়ে আমার ইচ্ছে হলো, আম্মুকে যেতে দেবো না, আম্মুকে ...

কিন্তু আম্মুকে তো যেতেই হবে! আমার খুব কান্না পাচ্ছিলো। কিন্তু আমি কাঁদলাম না। আমি কাঁদলে তো আম্মুর কষ্ট হবে! আম্মু হাত বুলিয়ে আদর করে বললেন, বাবা, একটু যদি কষ্ট করো... একটু হাসো তো বাবা! আমি মুচকি হাসি দিলাম, আর আম্মু চলে গেলেন! তখন আমার খুব কান্না পেলো।

 যায়েদ, মাদানী মক্তব, মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা

মঙ্গলবার, ২৮/৪/৩৯ হি.

আমি বাবাকে খুব ভালোবাসি। বাবা আমাদের সুখ-শান্তির জন্য, আমাদের লেখাপড়ার জন্য কত কষ্ট করেন। আমি তো তার কষ্টের পয়সাই খরচ করি। বাবা কিন্তু বুঝতে দেন না, তার যে কষ্ট হয়! বাবা এত সুন্দর করে হাসলেও আমি বুঝতে পারি, বাবার কত কষ্ট হয়! আমি যদি বড় হতাম ...! এখনো চেষ্টা করি, বাবাকে একটু শান্তি দিতে যেন বাবার...

একজন রিকশাওয়ালাকে দেখেছি, কত কষ্ট করে রিকশা চালাচ্ছে, দরদর করে ঘাম ঝরছে। এই ঘামঝরা উপার্জন কার জন্য? তার সন্তানের জন্য।

 শিহাবুদ্দীন, মাদানী মক্তব, মাদরাসাতুল মাদীনাহ, ঢাকা

আমি সব সময় সত্য কথা বলবো, কখনো মিথ্যা বলবো না। আমাদের নবীজী বলেছেন, সত্য মানুষকে মুক্তি দেয় আর মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে। যারা সত্য বলে তাদের সবাই ভালোবাসে, আল্লাহও ভালোবাসেন, আর যারা মিথ্যা বলে, সবাই তাদের ঘৃনা করে, আল্লাহও তাদের...

 

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা