রজব ১৪৩৯ হিঃ (৩/৩)

রোযনামচার পাতা

রোযনামচার পাতা - ১

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

১-৫-৩৯ হি.

কিছু দিন আগে উত্তরাঞ্চলের বন্যাদুর্গত মানুষের খিদমতের উদ্দেশ্যে মাদরাসাতুল মাদীনাহর পক্ষ হতে কাফেলা গিয়েছিলো এবং নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছিলো। আজ ফেনী হুযূর নতুন কাফেলা নিয়ে রওয়ানা হয়েছেন শীতার্ত মানুষের মধ্যে নতুন কম্বল বিতরণের জন্য।

মাদরাসাতুল মাদীনায় আমরা এই বাস্তব শিক্ষাই লাভ করছি যে, খেদমতে খালকই হচ্ছে আলেমসমাজের সবচে’ বড় বৈশিষ্ট্য। এ বৈশিষ্ট্য অবশ্যই আমাদের অর্জন করতে হবে। মানুষকে ভালোবেসে মানুষের সেবায় আমাদের সাধ্যমত আত্মনিয়োগ করতে হবে। আল্লাহ যেন তাওফীক দান করেন, আমীন।

বিন আযীয, মাদরাসাতুল মাদীনাহ, হযরতপুর, ঢাকা

বুধবার, ০৭-০৫-৩৯ হি.

সময়ের জাল বড় শক্ত জাল! সময়ের বাঁধন বড় শক্ত বাঁধন! এ জাল, এ বাঁধন ছিন্ন করার শক্তি কারো নেই।

সময়ের ¯্রােত সদাপ্রবহমান মহাকালের পানে। সময়ের ¯্রােতে ভেসে যাচ্ছে আমাদের জীবনের পল, মুহূর্ত, প্রহর, দিন এবং বছর। এভাবে ধীরে ধীরে আমরা চলেছি মৃত্যুর দিকে। অথচ আমি আমরা একদমই বে-খবর, উদাসীন। আমাদের চোখের উপর যখন মৃত্যুর কালো ছায়া নেমে আসবে এবং চোখের আলো নিভে যাবে তখন আমাদের গাফলতের ঘোর কেটে যাবে, কিন্তু তখন কিছু করার সুযোগ বা উপায় থাকবে না। তাই সময়কে আল্লাহর দেয়া আমানত মনে করে এর যথাযোগ্য কদর করা দরকার।

আব্দুল মান্নান

০০ প্রিয় আব্দুল মান্নাল, তুমি লিখেছো, ‘সময়ের নির্মমতার ধোয়া যখন নাকি আসবে ...’

ছোট্ট একটা লেখা, তার প্রতি যত্নের এ অবস্থা! বিষয়টা তাহলে কী দাঁড়ালো?!

দাদীকে মনে পড়ে

৭-৫-৩৯ হি.

দাদিকে আমার খুব মনে পড়ছে। সবসময়ই মনে পড়ে, বিশেষ করে যখন রোযনামচা লিখতে বসি। আমার রোযনামচা দাদীর খুব পছন্দ ছিলো। দাদীকে আমি রোযনামচা পড়ে শুনাতাম। শুনে দাদী খুশী হতেন।

ইচ্ছে হয়, দাদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলি, কুশল জিজ্ঞাসা করি। এখনই ফোন করা যায়। দাদীর জাওয়ালের নাম্বার তো আমার মুখস্থই আছে। কিন্তু আজ তিনি বহু দূরে, জীবনের অন্য পারে। তার বসবাস এখন মাটির ঘর কবরে। কয়েকদিন আগে আমিই তো দাদীকে শুইয়ে রেখে এসেছি কবরের বিছানায়!

দাদীকে হারিয়েছি, তবে তার স্মৃতি অম্লান রয়েছে আমার হৃদয়ে। যত দিন বেঁচে থাকবো ততদিন আমার প্রিয় দাদীর জন্য দু‘আ করে যাবো, আল্লাহ যেন দাদীকে কবরে শান্তিতে রাখেন এবং জান্নাতে আমাদের সবাইকে একত্র করে দেন, আমীন।

সাকিব বিন হাসান

 আজকের এ চাঁদ অন্যকিছু!

১১-৪-৩৯ হি.

আজ পূর্ণিমা ছিলো না, তারপরো চাঁদটা ছিলো বেশ আলোকিত ও সুন্দর। ইচ্ছে হলো, আজ নীল আকাশের নীচে শুয়ে শুয়ে চাঁদ দেখবো, চাঁদের আলো উপভোগ করবো।

চাঁদ আরো দেখেছি, শৈশব থেকে আজ জীবনের তারুণ্যের পূর্ণিমা পর্যন্ত। বহুবার চাঁদের ¯িœগ্ধ সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। পূর্ণিমার হাসি! জোসনার কোমল স্পর্শ!! মেঘের আড়ালে আড়ালে চাঁদের লুকোচুরি!! সবকিছুই অপূর্ব! আমার আল্লাহর সৃষ্টিকুশলতার নিদর্শন!

কিন্তু আজকের চাঁদের সৌন্দর্যে এমন বিমোহিত হলাম যে, নিজের অজান্তেই বলে উঠলাম, সুবহানাল্লাহ! সুবহান, তেরী কুদরত!!

হৃদয়ে আবেগের প্রবাহে, মস্তিষ্কে চিন্তার গভীরতায় এবং পরম সত্তার প্রতি আত্মনিবেদনে আজকের আমি যেন সম্পূর্ণ নতুন এক মানুষ! এক নয়া ইনসান!!

আজ যেমন মনে হলো, কখনো এমন মনে হয়নি, ‘এ চাঁদ তো আজকের চাঁদ নয়! এ চাঁদ তো আমার পেয়ারা হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেখা চাঁদ। হয়ত তাঁর নূরানি দৃষ্টির স্পর্শের কল্যাণেই সে যুগের  চাঁদের চেয়ে এ যুগের চাঁদ আলোর সৌন্দর্যে, জোসনার প্রাচুর্যে এবং মানবহৃদয়ে ভাব ও অনুভবের তরঙ্গ সৃষ্টিতে সত্যি তুলনাহীন।

আমাদের পেয়ারা নবী তাঁর শৈশবে এ চাঁদের সৌন্দর্যে হয়ত কতবার মুগ্ধ হয়েছেন! চাঁদের জোসনাধোয়া হাসি দেখে হয়ত তাঁরও নূরস্নিগ্ধ মুখমণ্ডলের হাসির উদ্ভাস দেখা দিয়েছে....

আরিফুর-রহমান/

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা