রজব ১৪৩৯ হিঃ (৩/৩)

কিশোর পাতা

কিশোর পাতা - ৩

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 

তুমি আসবে! তুমি এলে!!

আমার বুকে, আমার হৃদয়ে কিছু কথা, কিছু ব্যথা সুপ্ত ছিলো! কেউ জানতো না! কাউকে বলিনি তো!! বুকের ব্যথা বুকে এবং হৃদয়ের কথা হৃদয়েই যদি থেকে যায়, বুকটা ভেঙ্গে যায়, হৃদয়টা গলে যেতে চায়!!

তাই প্রতিটি বুক চায়, কোন দরদী বুক যেন তাকে আলিঙ্গন করে। প্রতিটি হৃদয় কামনা করে,  কোন অন্তরঙ্গ হৃদয় যেন তাকে বরণ করে! তার আনন্দ-বেদনায় তাকে সঙ্গ দান করে। এটা স্বভাবের স্বাভাবিক দাবী। এতে দোষের কিছু নেই।

তবে আমি শুধু কামনা করেছি তোমাকে। একান্ত আপন করে আমি শুধু  পেতে চেয়েছি তোমাকে। এত দীর্ঘ কাল আমি শুধু প্রতীক্ষা করেছি তোমার জন্য!! ফুলের তোড়া সাজিয়ে, হৃদয়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে আমি তাকিয়ে ছিলাম তোমার পথের পানে। তুমি আসবে;  তোমাকে আমি বরণ করবো ফুলের তোড়া দিয়ে। তোমার কাছে তুলে ধরবো এই বিষণœ বুকের ‘লাল’ ব্যথাগুলো! তোমার পাপড়িতে আমি লিখবো আমার হৃদয়ের এত দিনের না বলা কথাগুলো।

কিন্তু তুমি এলে না! হয়ত আমার কথা তোমার মনে পড়ে না। ফুলের তোড়া শুকিয়ে গেলো। শুকনো ফুলগুলো আমি রেখে দিলাম সযতেœ, আমার জীবনের আরো অনেক শুকনো ফুলের সঙ্গে।

জানো তো, শুকনো ফুল আমি কখনো ফেলে দেই না; যতেœর সঙ্গে তুলে রাখি। বর্তমানের তাজা ফুলের চেয়ে অতীতের শুকনো ফুলের মূল্য আমার কাছে কম নয়।

সন্ধ্যা হলো। একসময় পাখিদের গান থেমে গেলো! তারপর রাত গভীর হলো। নির্জনতার চাদরে সব ঢাকা পড়ে গেলো। সবাই নিদ্রার প্রশান্ত সাগরে ডুবে গেলো। আমি শুধু বিনিদ্র ছিলাম তোমার জন্য, তুমি আসবে বলে; তবু তুমি এলে না ...!

***

অবশেষে আমার প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হলো। রাতের শেষে ভোর হলো! পূর্বদিগন্ত থেকে আঁধার দূর হলো!! রাঙ্গা সূর্যের মিষ্টি আলোতে পৃথিবী  হেসে উঠলো!!

আর তখন, ঠিক তখন তুমি এলে! নতুন সাজে, নতুন ছন্দে তুমি এলে নতুন হাসিতে নতুন সুবাসে প্রতিটি হৃদয়ে আলোড়ন তুলে!

ওগো প্রিয়, আলোর এবং আনন্দের সর্বপ্লাবী বন্যা বইয়ে দিয়ে তুমি এলে!!

আমি তখনো দূরে, আমার হৃদয়ের দুয়ারে একা দাঁড়িয়ে! তুমি এলে না বন্ধু, আমার হৃদয়ের দুয়ারে তুমি এলে না!  তোমাকে যারা ভালোবাসে, আমার চেয়ে বেশী, তাদের হৃদয়ের উপচে পড়া আনন্দে তুমি মুগ্ধ হলে! তুমি সিক্ত হলে!! আমিও দেখে মুগ্ধ হলাম!! তোমার প্রতি অসংখ্য হৃদয়ের উপচে পড়া ভালোবাসা  দেখে এবং তোমার মুখম-লের আনন্দ-উদ্ভাস দেখে আমিও আপ্লুত হলাম।

প্রতিটি তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের তৃষ্ণা যখন নিবারিত হলো। সবার প্রাপ্তির আনন্দ যখন পূর্ণতা লাভ করলো তখন একটু যেন ক্লান্ত হয়ে ভোরের শিশিরভেজা পথ ধরে তুমি এলে! ওগো বন্ধু, আমার হৃদয়ের দুয়ারে তুমি এলে!!

আমার হাতে তখন ফুলের  তোড়া ছিলো না! হায়, শুকনো ফুলগুলোও যদি সঙ্গে থাকতো!!

 

 

তোমাকে ধন্যবাদ হে...!

তোমাকে ধন্যবাদ প্রিয় শাব্বির!  তোমার এবং সবার পাঠানো লেখাগুলোকে সবসময় আমি বলি পুষ্পের লেখা ও সম্পাদনার জন্য অতিপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল। অনেক সময় এগুলো হয় সবুজ কাঁচা ঘাসের মত, যা থেকে বের হয়ে আসে দুধ! এই দেখো, তোমার পাঠানো লেখাটি থেকে তৈরী হয়েছে উপরের ‘তুমি আসবে! তুমি এলে’ লেখাটি। এই লেখাটির জন্য তুমি এ সংখ্যার অতিথি সম্পাদক!

 

তোমাকে দেখিনি আমার চোখের আলোতে, তবে তোমাকে অনুভব করেছি অন্ধকার রাতে তারাদের ঝিলিমিলিতে; পূর্ণিমার রাতে জোসনার জোয়ারে; উজ্জ্বল দিবসে সূর্যের আলোতে এবং সন্ধ্যার আঁধারে জোনাকির আলোকসজ্জায়।

আকাশের নীলিমায়, মেঘের আল্পনায়, পূর্বদিগন্তে রাঙা আলোর ফোয়ারায়, পশ্চিম দিগন্তে আবিরের ‘লাজলালিমা’য়।

তোমাকে অনুভব করেছি সবুজ ঘাসের গালিচায়, শিশিরভেজা ভোরের ¯িœগ্ধতায়, গাছের সবুজ পাতায়, ফলের সমাহারে, ফুলের সমাবেশে, মাঠে সোনালী ফসলের মিষ্টি হাসিতে।

তোমাকে অনুভ করেছি সাগরের উত্তাল তরঙ্গে, মরুভূমির অথৈ বালুরাশিতে, অরণ্যের গভীরে, পর্বতের গম্ভীরতায়, ঝর্ণার কুলকুল সঙ্গীতে।

তোমাকে অনুভব করেছি আমার জীবনের কোলাহলে, নির্জনতায়, অবসরে, ব্যস্ততায়,  প্রশান্তিতে, অস্থিরতায়; সুখে দুঃখে, আনন্দে বেদনায়, হাসিতে কান্নায়।

তোমাকে যখন অনুভব করি প্রকৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ সম্ভারে, হৃদয়ে আত্মায় তখন অনুভব করি অপরিসীম এক প্রশান্তি। শুধু মনে হয়, আমি নিঃসঙ্গ নই এবং নই অসহায়। আমার আছো তুমি! আর যখন তোমাকে অনুভব করি আমার সর্বসত্তায় ...

সা‘আদ বিন আলী নূর বিশ্বাস/ বেতকা, টাঙ্গাইল

 

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা