রজব ১৪৩৯ হিঃ (৩/৩)

টেকনাফ/তেতুলিয়া

দেশটা কী মগের মুল্লুক!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

 

দেশের যে নাযুক অবস্থা, কোত্থেকে শুরু করবো, কোথায় গিয়ে শেষ করবো, কিছু বুঝে উঠতে পারি না! প্রতিটি শব্দের উচ্চারণে এত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, তারপরো এমন অপ্রীতিকর অবস্থা এসে পড়ে যে, উৎকণ্ঠার শেষ থাকে না। যে দলের শ্লোগান ছিলো আমার ভোট আমি দেবো ... যে দলের প্রতিশ্রুতি ছিলো ভোট ও ভাতের অধিকার ... সেই দল এমন এক নির্বাচন করলো যার নযীর ... যে দল পছন্দমত বিরোধীদল তৈরী করে নেয়, মাঠের বিরোধীদল মাঠেই পড়ে থাকে, একটু নড়াচড়া করারও সুযোগ থাকে না ... যে দল বিচারব্যবস্থাকে হুমকি-ধমকিতে সোজা রাখতে চায়। প্রধান বিচারপতিকে পর্যন্ত সোজা আঙুলে ঘী-এর প্রবচন শুনিয়ে দিতে পারে। সুস্থ সবল মানুষটাকে ক্যানসারের রোগী বানিয়ে দেশের বাইরে পাচার

করে দিতে পারে, ভাবতে ভয় হয়, সেই দল এখন ক্ষমতায়! আমাদের মত নিরীহ মানুষদের তাহলে কতটা সমঝে চলা উচিত?!

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে হিন্দু অমুসলিমকে প্রধান বিচারপতি বানালো কে? তারাই এখন বলছে, ‘ও বেটা হিন্দু’! কাউকে প্রধান বিচারপতিরূপে নিয়োগ দেয়ার আগে নিশ্চয় তার সততা, বিচারিক যোগ্যতা পূর্ণরূপে তদন্ত করা হয়! কিন্তু যখনই তিনি

আঙুলের ইশারায় চলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেন, দেশের রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত তার দুর্নীতির তালিকা বিচারপতিদের ডেকে এনে ধরিয়ে দিলেন। তিনি যদি অঙুলের ইশারায় চলা অব্যাহত রাখতেন!

বেডরূম পাহারা দিতে পারবেন না, বুঝলাম। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাহলে কেন বললেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনী ধরা পড়বে? বেডরূম পাহারার কথা ওঠে জীবন বাঁচানোর জন্য। তা পারা যায়নি ঠিক আছে, কিন্তু খুনীকে সনাক্ত করা, সে দায়ও কি নেই সরকারের, নিরাপত্তা বাহিনীর, গোয়েন্দা বিভাগের? তাহলে গরীব জনগণের টাকায় এত বড় শ্বেতহস্তির প্রতিপালন কেন?

বেডরূমের ব্যাপার, তা না হয় মেনে নেয়া গেলো, কিন্তু এই যে, পথের উপর থেকে প্রকাশ্যে জ্যান্ত মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, তার কী হবে? দেশে তাহলে সরকার কী জন্য?! যারা নিখোঁজ হচ্ছে তারা সাধারণ কোন মানুষ নন। প্রত্যেকে সুপরিচিত এবং সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি।

সাধারণ মানুষ কখনো খবর হয় না, রাস্তায় বাসের নীচে চাপা পড়া ছাড়া।

একজনের পর একজন বিভিন্ন কায়দার নিখোঁজ হচ্ছেন। কায়দা আলাদা আলাদা, কিন্তু একটা বিষয় কমন, সাবার ক্ষেত্রে অভিন্ন। সবাই বিরোধী দলের সক্রিয় ও নিরাপোশ নেতা!

ইলিয়াস আলী গেলেন তো গেলেন, আর ফিরলেন না। তার স্ত্রী এখনো জানেন না, তিনি কি সাদা শাড়ী পরা শুরু করবেন?

গাড়ীর চালক, তিনি তো আম মানুষ, তাই তার নাম কখনো আলোচনায় আসে না।

আমি তো রাজনীতির ময়দানের মানুষ নই। নামধাম ঠিকমত মনে থাকে না। সালাউদ্দীন, সম্ভবত, নিখোঁজ হলেন, ভাগ্য ভালো তাকে পাওয়া গেলো, তবে সীমান্তের ওপারে। কী এর মাজেযা, কেউ বলতে পারে না!

‘গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী’ যে দল তারা ক্ষমতার স্বাদ পেয়ে বলতে শুরু করলো, আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র! আমরা ভাবলাম, তাই না হয় হোক, জীবনে অন্তত একটু স্বস্তি আসুক। কিন্তু উন্নয়নের নমুনা দেখে দেশের মানুষ সত্যি বুঝতে পারছে না, আমরা কি আসলে মগ, আর দেশটা মগের মুল্লুক?!

ব্যাংকগুলোর কী অবস্থা? ঋণকেলেঙ্কারি এখন কোন পর্যায়ে? রাস্তাঘাটের উন্নয়ন! এই খানাখন্দক!!

সব দেখে শুনে মনে হয়, বিরোধী-দল যদি ক্ষমতায় যেতে চায় এবং টিকে থাকতে চায় তাহলে এই দলের কাছ থেকে সবকিছু শিখে রাখতে হবে! *

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা