আল কুদসসংখ্যা (৩/২)

আল কুদসসংখ্যা (বিশেষ)

আসল করণীয়...../ শক্তির জবাব শক্তি দিয়েই দিতে হবে

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

আসল করণীয় সাময়িক বিক্ষোভ নয়,

ইসলামী চেতনা জাগ্রত করা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলকুদস (জেরুসালেম) কে ইসরাইলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি ঘোষণা করেছেন। এর প্রতিক্রিয়া মুসলিমবিশ্বে কী হতে পারে এবং মুসলিম দেশগুলো কত দূর যেতে পারে, এ সম্পর্কে তার পূর্ণ ধারণা রয়েছে বলেই মনে করা যায়। সুতরাং যা কিছু ক্ষোভ, বিক্ষোভ এবং সহিংস প্রতিবাদ, এগুলোতে তিনি কিছুমাত্র বিচলিত হবেন, মনে করা যায় না। এমনকি কূটনৈতিক যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারেন মুসলিম নেতৃবৃন্দ, এটাও তার অজানা নয়। সুতরাং হয়ত অনেক দূর যাবে উভয় পক্ষ। কিন্তু যা হয়েছে তাতে কোন পরিবর্তন আসবে, চিন্তা করাটা, হতে পারে সরলতা, বাস্তববোধের পরিচায়ক হবে না।

মুসলিম উম্মাহর তাহলে করণীয় কী? আমাদের বক্তব্য হলো, বিক্ষোভ প্রতিবাদ ঠিক আছে; কূটনৈতিক যুদ্ধও ঠিক আছে। এসবের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যাবে না। তবে মনে রাখতে হবে, এটা সমস্যার সাময়িক উপসম, আসল সমাধান নয়। প্রতিটি মুসলিম দেশের কাছে আমাদের পরামর্শ, শিশুশ্রেণী থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত ফিলিস্তীন ও আলকুদসপ্রসঙ্গ পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত করুন। তাতে সমস্যাটির ইসলামী চরিত্র উদ্ভাসিত করুন। প্রতিটি শ্রেণীতে পাঠ্যসূচী এমন হতে হবে যাতে জিহাদের চেতনা মুসলিম শিক্ষার্থীদের অন্তরে জাগ্রত হয়। ওআইসির কর্তব্য হবে সম্মিলিত ‘জিহাদ-বাহিনী’ গড়ে তোলা, যারা প্রয়োজনে সশস্ত্র জিহাদে অবতীর্ণ হবে। পুরো মুসলিমবিশ্বের তাতে সমর্থন থাকবে। প্রয়োজনে জাতিসঙ্ঘ থেকে বের হয়ে মুসলিম জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়ার পর শেষপর্যন্ত যাওয়ার প্রত্যয় তো থাকতেই হবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আমীন।

 

শক্তির জবাব শক্তি দিয়েই দিতে হবে - জনৈক আহত ফিলিস্তীনী

 বড়রা, আমাদের ঝানু রজনীতিবিদেরা হয়ত আগাগোড়া বুদ্ধি দ্বারা পরিচালিত, তাই তারা হৃদয়ের ডাকে সাড়া দিতে অক্ষম। হয়ত তারা দূরদৃষ্টির অধিকারী, তাই বিবেকের শাসন তারা মানতে অপারগ। আবেগ দ্বারা পরিচালিত হওয়া হয়ত তাদের সাজে না। তারা বুদ্ধির আদেশ মান্য করে এবং দূরদৃষ্টির দাবী রক্ষা করে শত্রুকে বন্ধুরূপে আলিঙ্গন করেছেন এবং শান্তি ও সমঝোতার পথ গ্রহণ করেছেন। অনেক দিন তো পার হলো, ‘শান্তি’ ছাড়া আর কী পাওয়া গেলো, এ প্রশ্ন করার অধিকার কি আমাদের আছে তাদের বুদ্ধি ও দূরদৃষ্টির কাছে?!

আমরা ফিলিস্তীনের সহজ-সরল শিশু-কিশোর। বুদ্ধির জটিলতা, দূরদৃষ্টির দূরত্ব, এসব আমাদের বোঝার কথা না; বুঝিও না। উদার নীতি, ভারসাম্যের রাজনীতি, আত্মসমর্পণের প্রজ্ঞা, এসব আমাদের বোঝার কথা না; বুঝিও না।

এত প্রাণ ঝরে গেলো, এত নিরস্ত্র নারী-পুরুষ শহীদ হলো, এত বাড়িঘর বিরান হলো, এত হিং¯্রতা, এত নৃশংসতা সবার চোখের সামনে ঘটে গেলো! কেউ তো পাশে

দাঁড়ায়নি! কেউ তো দখলদারকে থামাতে আসেনি!! সেই জাতিসঙ্ঘের কথা শুনে সামনে আমরা কী পাবো, তা আামাদের বোঝার কথা না; বুঝিও না। আমরা হৃদয় দিয়ে, আবেগ দিয়ে, ঈমান ও বিশ্বাস দিয়ে যা বুঝি তা এই যে,  অস্ত্রের জোরে, শক্তির বলে যে অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, যে বাড়িঘর জ্বালানো হয়েছে, যে ভূমি কেড়ে নেয়া হয়েছে তা শুধু অস্ত্রের জোরে এবং শক্তির বলেই ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।

আমাদের যদি বড়রা জিজ্ঞাসা করেন, পাথর ছুঁড়ে, গুলি খেয়ে, রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে কী পেয়েছো তোমরা?

আমাদের সহজ সরল জবাব হবে, আমরা ঈমানের দাবী রক্ষা করেছি, আমরা পূর্ববর্তিদের রক্তের দায় পরিশোধ করেছি; আমরা আসমানি মদদের পথ পরিষ্কার করেছি; আমরা মাথা উঁচু করে বেঁচেছি এবং মাথা উঁচু করে মৃত্যু বরণ করেছি, শাহাদাতের মৃত্যু। আমরা শত্রুকে বুঝিয়েছি, শুধু ভীরুতা ও আত্মসমর্পণের নাম ফিলিস্তীন নয়। শুধু হাত পেতে শান্তি ভিক্ষা করার নাম ফিলিস্তীন নয়।

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট