আল কুদসসংখ্যা (৩/২)

কিশোর পাতা

কি শো র দে র জ ন্য

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

কিশোর বন্ধুরা!

সালাম গ্রহণ করো। বড় জানতে ইচ্ছে করে, পুষ্পের আরাকানসংখ্যাটি হাতে পেয়ে তোমাদের কী অনুভূতি হলো?! তোমাদের হৃদয়ে কি একটু ভালোবাসা, একটু কোমলতা, একটু মমতা জাগ্রত হয়েছে! বিশেষ করে তোমাদের বয়সের শিশু-কিশোর, যারা জীবনের সবকিছু, এমনকি মা-বাবাকে হারিয়ে এতীম হয়েছে, আর তোমাদের দেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে!!

এই অসহায় মানুষগুলোর প্রতি কি তোমাদের অন্তরে কিছু দায়দায়িত্বের অনুভূতি জাগ্রত হয়েছে? যদি হয়ে থাকে তাহলে বলবো, আমাদের প্রচেষ্টা কিছুটা হলেও সফল হয়েছে।

আরাকানসংখ্যা প্রকাশের একটা বড় উদ্দেশ্যই ছিলো আমার দেশের শিশু-কিশোরদের অন্তরে নাফনদীর ঐ পারে আমাদের খুব কাছের প্রতিবেশী  আরাকানের মজলুম মুসলমানদের প্রতি সমবেদনা ও সহানুভূতি জাগ্রত করা। বিপদের দিনে নিজেদের সাধ্যের সবটুকু নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিপদগ্রস্ত মানুষের খিদমতে নিয়োজিত হওয়ার তাওফীক দান করুন, আমীন।

এখানে ইচ্ছে ছিলো পুষ্পের তৃতীয় প্রকাশনার আগামী পরিকল্পনা সম্পর্কে তোমাদের কিছু কথা বলবো, কিন্তু মুসলিম উম্মাহর উপর হঠাৎ করেই নেমে এসেছে নতুন দুর্যোগ!

নতুন মানে চলমান দুর্যোগেরই প্রলম্বিত রূপ। ফিলিস্তীনের দুর্যোগ, জেরুসালেম- ট্রাজেডি। পুরো জেরুসালেম বা বাইতুল মাকদিস ছিলো আমাদের; চলে গেছে ইহুদিদের দখলে। এটাকে তারা ঘোষণা করেছে ইসরাইলের রাজধানী বলে। আন্তর্জাাতিক সম্প্রদায় তা স্বীকার করেনি কখনো। কিন্তু সেদিন মর্কিন যুক্তরাষ্ট্র মেনে নিয়েছে ইহুদিদের অন্যায় দাবী।

আমরা সীমিত সাধ্য নিয়ে চেষ্টা করেছি এজন্য আলকুদ্সসংখ্যা প্রকাশ করতে,

যাতে আমার দেশের কিশোর-তরুণ অন্তত বিষয়টা সম্পর্কে কিছু জানতে পারে। অন্য কথা পরে ইনশাআল্লাহ।

শত্রুর    প্রতি    কৃতজ্ঞতা

বন্ধু সবসময় উপকার করে, এটা যেমন সিঠক ধারণা নয়, তেমনি এটাও সঠিক চিন্তা নয় যে, শত্রু শুধু ক্ষতি ও অপকার করে: উপকার করে না। বন্ধুর দ্বারা অনেক সময় হয়ে যায় বড় কোন ক্ষতি। আবার শত্রুর দ্বারাও হয়ে যায় বড় কোন উপকার।

মাতা ও বিমাতার ভূমিকা সভ্যতার শুরু থেকেই চলে আসছে একই ধারায়।

ইউসূফ ও তার ভ্রাতৃসঙ্ঘ সবসময় ছিলো, সবসময় থাকবে।

তাহলে পার্থক্য কী বন্ধুতে ও শত্রুতে? পার্থক্য এই যে, বন্ধু তোমার কল্যাণ-কামী! তোমার জন্য তার সব চিন্তা অন্তরের শুভ- আকাক্সক্ষা থেকেই উৎসারিত। হয়ত ইচ্ছা ও কর্ম এবং কর্ম ও পরিণতির সঙ্গতি সবসময় রক্ষিত হয় না। এজন্যই বন্ধুর প্রতি ভালোবাসার কখনো অভাব হয় না, বন্ধুর দ্বারা ক্ষতির শিকার হয়েও না।

শত্রু সবসময় অকল্যাণ-কামী। তোমার প্রতি তার সব চিন্তা, অন্তরের অবিমিশ্র ঘৃণা ও বিদ্বেষ থেকেই উৎসারিত। তবে শত্রুর ইচ্ছে এবং ঘটনার পরিণতি সবসময় এক হয় না। তাতে শত্রুর মুখে ছাই পড়ে, আর তোমার উপকার হয়ে যায়। তাই উপকৃত হয়েও শত্রুকে আমরা ভালোবাসি না, বাসতে পারি না। তবে আমাদের কর্তব্য, অনিচ্ছাকৃত উপকারের জন্য হলেও শত্রুর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।

আমাদের প্রতি শত্রুর ন্যূনতম উপকার হচ্ছে সতর্ক সচেতন থাকতে বাধ্য করা। আজকের জেরুসালেমট্রাজেডি থেকে যদি শুধু সতর্ক সচেতন হতে পারি তাহলেই আমি কৃতজ্ঞ থাকবো তোমাদের দু’জনের প্রতি হে প্রেসিডেন্ট! হে প্রধানমন্ত্রী!!

আমাদের জীবনে এখন বন্ধুর যেমন প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন শত্রুর উপস্থিতির!!

 

তাহলে আর কবে

এখনো যদি না ভাঙ্গে নিদ্রার ঘোর তাহলে আর কবে?! এখনো যদি না দেখি, না শুনি এবং না বুঝি তাহলে আর কবে?

এখনো যদি চিহ্নিত করতে না পারি, কোথায় আমাদের এবং শত্রুর শক্তি, কোথায় দুর্বলতা তাহলে আর কবে?!

এখনো যদি অর্জিত না হয় সঠিক ক্ষেত্রে গতি ও অগ্রগতি এবং ধীরতা ও স্থিরতা তাহলে আর কবে?!

হে মুসাফির, কাফেলা চলে গিয়েছে বহু দূর! তবু দেখো, তাকদীর রয়েছে কলম হাতে তোমার ইনতিযারে!! এত দয়া তাকদীর করে না এবং করেনি কখনো কোন জাতিকে!! এখনো যদি উদ্যোগী না হও, উদ্যমী না হও; এখনো যদি জীবনসংগ্রামের জন্য এবং মর্যাদার সঙ্গে মৃত্যু-বরণের জন্য প্রস্তুত না হও তাহলে আর কবে.?!

শেয়ার করুন:     
প্রিন্ট

অন্যান্য লেখা