শিশু-কিশোর ও নবীনদের পত্রিকা

মাসিক আল-কলম-পুষ্প

আরাকান সংখ্যা (৩/১) | আরাকানসংখ্যা (বিশেষ)

আলজাজিরায় সাক্ষাৎকারে নোবেলজয়ী ড. ইউনুস

সময় থাকতে সমাধান করুন

গ্রামীণ-এর ড. ইউনুস, বর্তমানে সামাজিক ব্যবসা-উদ্যোগের ড. ইউনুস, আমাদের দৃষ্টিতে, বিশেষ করে ইসলামের সমগ্র জীবনবিধানের দিক থেকে তিনি অনেক সীমাবদ্ধতার ঘেরাটোপে আবদ্ধ; তবে একথা স্বীকার করতেই হবে, তিনি এখন শুধু বাংলাদেশের নন, সমগ্র বিশ্বের মূল্যবান সম্পদ! যদিও একথা-গুলো এখন ঝুঁকির কারণ, তবু সত্যের অনুরোধে বলা হলো। আল্লাহর হুকুম ছাড়া তো গাছের পাতাও নড়ে না! কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে ড. ইউনুস একটি দীর্ঘ ও মূল্যবান সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, যা আমাদের সংবাপত্রগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে গত ২৩শে অক্টোবর। কিছু অংশ এখানে দেখুন ড. ইউনুসকে প্রশ্ন করা হয়, ‘বাংলাদেশ কীভাবে এ বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিচ্ছে, বা কত দিন এভাবে আশ্রয় দিতে পারবে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা শুধু অর্থনৈতিক বিষয় না, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তারও বিষয়। দশলাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে। যে কোন সময় তারা অস্ত্র হাতে তুলে নিতে পারে। পুরো অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমার তো জোর আশঙ্কা, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর নেটওয়ার্কও এখানে কাজ শুরু করবে। ফলে এটা বাংলাদেশের জন্য বটেই, পুরো অঞ্চলের জন্যই হবে ভয়াবহ। একসময় সবকিছু মিলিয়ে একটা বিস্ফোরণ হবে। আমি বলতে চাই এসব ঘটার আগেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সমস্যার (একটা ন্যায্য) সমাধান করে ফেলতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, ‘প্রয়োজনে’ তারা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জিহাদের ডাক দেবে, এসম্পর্কে আলজাজি -রার পক্ষ হতে ড. ইউনুসের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাসঙ্কট শুধু বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। পুরো অঞ্চলই এতে জড়িয়ে পড়বে। ভারত-পাকিস্তানও এতে জড়াবে। সব জঙ্গিগোষ্ঠীও এতে জড়াবে। কতসংখ্যক দেশ এতে জড়াবে তা শুধু সৃষ্টিকর্তাই বলতে পারবেন। আলজাজিরার শেষ প্রশ্ন ছিলো, রোহিঙ্গাসঙ্কটের জের ধরে তিনি কি মিয়ানমার-বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা করেন? জবাবে কিছুক্ষণ চিন্তা করে ড. ইউনুস বলেন, যেকোন কিছুই হতে পারে। কী হবে, কী হবে না, আমরা কিছুই বলতে পারছি না। কারণ রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে, বা রোহিঙ্গাদের নাম ব্যবহার করেও কেউ কিছু করতে পারে। এটি যেকোন দিকেই মোড় নিতে পারে। সন্ত্রাসবাদ জন্ম নিতে পারে হতাশা (এবং ক্ষোভ ও ক্রোধের আগ্নেয়গিরি) থেকে। সর্বশেষ রোহিঙ্গা সঙ্কটে অসংখ্য নারী ও শিশু নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে এসেছে। এসব শিশু বড় হবে। কে তাদের শিক্ষা দেবে? কে তাদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করবে? কেন তাদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করবে? প্রশ্ন দিয়েই শেষ করেন ড. ইউনুস তার সাক্ষাৎকার।